খবর অনলাইন: “ধর্মীয় স্বাধীনতার ক্ষেত্রে ভারত নেতিবাচক পথে চলেছে”—মার্কিন কমিশনের এই রিপোর্টে ক্ষুব্ধ ভারত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মার্কিন কমিশনের সেই পুরনো দ্বন্দ্ব আবার নতুন করে চাগাড় দিল। ২০০২ সালে গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গা নিয়ে এই মার্কিন কমিশনের রিপোর্টের পরেই গুজরাতের তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের ভিসা দেওয়া হয়নি।
আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত মার্কিন কমিশন (ইউএসসিআইআরএফ) তাদের ২০১৬-এর বার্ষিক রিপোর্টে বলেছে, “ভারতে ২০১৫ সালে ধর্মীয় সহিষ্ণুতার অবনতি ঘটেছে এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের ঘটনা বেড়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, বিশেষ করে খ্রিস্টান, মুসলিম এবং শিখরা ভীতিপ্রদর্শন, হয়রানি এবং হিংসার মুখে পড়েছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হিন্দু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীগুলোর হাতে। শাসকদল বিজেপি এই গোষ্ঠীগুলোকে তলেতলে সমর্থন করে এবং উত্তেজনা আরও বাড়াতে ধর্মীয়-বিচ্ছিন্নতাবাদী ভাষা ব্যবহার করে।”
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, উচ্চ বর্ণের কিছু ব্যক্তি এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা দলিতদের মন্দিরে প্রবেশে বাধা দেয়। দাদরিতে মহম্মদ আখলাককে পিটিয়ে খুন করার ঘটনাটি উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতকে ‘বিশেষ উদ্বেগের দেশ’ বলে চিহ্নিত করার জন্য মার্কিন বিদেশ দফতরের কাছে সুপারিশ করা হবে কিনা তা ঠিক করতে দেশের পরিস্থিতির উপর নজরদারি চালিয়ে যাবে বলে ইউএসসিআইআরএফ তার রিপোর্টে বলেছে।
মার্কিন কমিশনের রিপোর্টে ভারত খুবই ক্ষুব্ধ। কড়া ভাষায় এই রিপোর্টকে নস্যাৎ করে দিয়েছে বিদেশ দফতর। বলেছে, সংবিধানে রক্ষিত ভারতীয় নাগরিকদের অধিকার সংক্রান্ত পরিস্থিতি কেমন তা নিয়ে রায় দেওয়ার কোনও অধিকার কোনও বিদেশি সংস্থার নেই। দফতরের এক মুখপাত্র বলেন, “সাম্প্রতিক এই রিপোর্ট আমাদের নজরে এসেছে। ভারত, তার সংবিধান, তার সমাজকে যে তারা বোঝে না, তা আরও এক বার প্রমাণিত হল। শক্তিশালী গণতান্ত্রিক নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত ভারতের বহুত্ববাদী সমাজ। ভারতের সংবিধান দেশের সমস্ত নাগরিকের মৌলিক অধিকারের গ্যারান্টি দেয়। এর মধ্যে ধর্মের অধিকারও রয়েছে। আমরা এই রিপোর্টকে ধর্তব্যের মধ্যেই আনছি না।”
উল্লেখ্য, এ বছরের গোড়ায় ভারত সফরে আসতে চেয়েছিল কমিশন। কিন্তু তাদের ভিসা মঞ্জুর করা হয়নি।
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।