জন্মজয়ন্তী
প্রয়োজনে বল প্রয়োগ করে গেরুয়া শিবিরকে আটকানোর কথা বলেছিলেন নেতাজি

বিশেষ প্রতিনিধি: একাধিক বার কড়া ভাষায় হিন্দু মহাসভার সমালোচনা করার পাশাপাশি ওই সংগঠনকে সাম্প্রদায়িক আখ্যা দিয়ে কোণঠাসা করার কথা বলেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। এ বিষয়ে সমসায়িক পত্র-পত্রিকা এবং নেতৃত্বের চিঠিচাপাটি থেকে তা গভীর ভাবে স্পষ্ট।
নেতাজির অভিযোগ ছিল, ভারতের স্বাধীনতা লাভের থেকে কংগ্রেসের পতনের বিষয়ে বেশি আগ্রহী ছিল হিন্দু মহাসভা। ১৯৪০ সালের মার্চের দলের মুখপত্রের সম্পাদকীয়তে তিনি লিখেছিলেন, হিন্দু মহাসভা ভারতীয় দলগুলির পরিবর্তে কলকাতা পুর নির্বাচনে ব্রিটিশদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়েছিল।
তিনি লিখেছিলেন, “… কয়েক জন হিন্দু মহাসভা নেতার নিযুক্ত কৌশলগুলি … আমাদের বেদনা ও শোকের কারণ সৃষ্টি করেছে। হিন্দু মহাসভা কোনো স্বচ্ছ লড়াই লড়েনি … (তাদের) প্রার্থীদের মধ্যে এমন লোকেরাও অন্তর্ভুক্ত ছিল যারা কংগ্রেস পুর সমিতি ভেঙে দেওয়ার জন্য তাদের সর্বস্তরের চেষ্টা করেছিল এবং সেই লক্ষ্যে ব্রিটিশ এবং মনোনীত কাউন্সিলর গোষ্ঠীর সহযোগিতায় কর্পোরেশনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে পুনরায় নির্বাচিত করা হয়েছে এবং তারা ভবিষ্যতে কী ভাবে আচরণ করবে তা সহজেই অনুমান করা যায়।
হিন্দু মহাসভা কর্পোরেশনকে ব্রিটিশ আধিপত্য থেকে বাঁচানোর চেয়ে কংগ্রেসকে অপসারণ করার বৃহত্তর আকাঙ্ক্ষার প্রমাণ দিয়েছে। এটা দেখাও এখনও বাকি আছে যে কর্পোরেশনে অন্য কোনো ভারতীয় দল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের চেয়ে ব্রিটিশদের আধিপত্য প্রতিরোধ করার জন্য আরও আগ্রহ দেখাবে … “
জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি থাকাকালীন সুভাষ সর্বসম্মতিক্রমে হিন্দু মহাসভা এবং মুসলিম লিগের মতো সংগঠনগুলির সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখতে রেজুলেশন পাশ করান।
১৯৪০ সালে ফরোয়ার্ড ব্লক উইকলির একটি সম্পাদকীয়তে সুভাষ লিখেছিলেন, “দীর্ঘ দিন যাবৎ কংগ্রেসের কিছু বিশিষ্ট নেতা হিন্দু মহাসভা এবং মুসলিম লিগের মতো সাম্প্রদায়িক সংগঠনে যোগ দিতেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। এই সাম্প্রদায়িক সংগঠনগুলি আগের থেকে আরও বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে। যে কারণে কংগ্রেস নিজের গঠনতন্ত্রে নতুন একটি বিধান অন্তর্ভুক্ত করেছে। যার ভিত্তিতে হিন্দু মহাসভা অথবা মুসলিম লিগের কোনো সদস্য কংগ্রেসের সদস্যপদ পাবেন না”।
এমনটাও জানা যায়, কলকাতায় হিন্দু মহাসভার সাম্প্রদায়িক প্রচারসভাকে একাধিকবার বিক্ষোভ দেখিয়ে বন্ধ করে দিয়েছিল সুভাষচন্দ্রের যুব বাহিনী। শেষে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় নিজেই ময়দানে নামলে তাঁকেও সেই বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। স্বয়ং শ্যামাপ্রসাদই তাঁর ডায়েরিতে লিখে গিয়েছেন, “সুভাষ তাঁর সঙ্গে দেখা করেন এবং হুঁশিয়ার দিয়ে বলেন যে ‘হিন্দু মহাসভা’ রাজনীতি করতে এলে প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করে তিনি তা আটকাবেন”।
[ আরও পড়ুন: নাগরিকের শক্তি খুঁজতেন সুভাষচন্দ্র, জাতপাতের শ্রেণী বিভেদ নয় ]
প্রসঙ্গত, বাংলায় হিন্দু মহাসভায় ১৯৩৯ সালে যোগ দেন শ্যামাপ্রসাদ। তাঁকে সংগঠনের কার্যকরী সভাপতিপদে বসানো হয়। “একটি সভায় ইট ছুড়ে শ্যামাপ্রসাদের কপাল ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে সুভাষের দলের ছেলেদের বিরুদ্ধে”।
জন্মজয়ন্তী
নেতাজির অনুগামী ছিলেন গুমনামি বাবা: রিপোর্ট

ওয়েবডেস্ক: নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান নিয়ে একাধিক অনুমান ছড়িয়ে রয়েছে। কারও মতে, তিনি ১৯৪৫ সালে জাপানের তাইহোকু বিমানবন্দরের দুর্ঘটনায় মারা যান। কেউ মনে করেন, নেতাজি রাশিয়ায় ছিলেন। আবার কারও মতে, উত্তরপ্রদেশের ‘গুমনামি বাবা’ই নেতাজি। তবে নেতাজি অন্তর্ধান রহস্য উন্মোচনে গঠিত কোনো কমিশনই গুমনামি বাবাকে নেতাজি হিসাবে মেনে নেয়নি। তবুও তা নিয়ে জড়িয়ে রয়েছে জল্পনা।
উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে (বর্তমানে অযোধ্যা) থাকতেন গুমনামি বাবা ওরফে ভগবানজি। তাঁকেই কেউ কেউ নেতাজি বলে ধারণা করেন।
২০১৬ সালে উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব প্রাক্তন বিচারপতি বিষ্ণু সহায়ের নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করেন। এলাহাবাদ হাইকোর্ট গুমনামি বাবাকে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিতেই সেই কমিশন গঠিত হয়।
ওই কমিশন বছর তিনেক বাদে সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দেয়। বিধানসভায় রিপোর্টটি প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
কমিশনের রিপোর্টে বেশ কয়েকটি তথ্য তুলে ধরা হয়। যেগুলির মধ্যে অন্যতম কয়েকটি-
১. গুমনামি বাবা একজন বাঙালি। তিনি বাংলা, ইংরাজি এবং হিন্দি জানতেন।
২. তিনি ছিলেন বিরল প্রতিভার অধিকারী।
৩. গুমনামি বাবার রামভবন থেকে বাংলা, ইংরাজি এবং হিন্দিতে লেখা একাধিক বই উদ্ধার করা হয়।
৪. যুদ্ধ, রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনা প্রসঙ্গে অগাধ জ্ঞান ছিল গুমনামি বাবার।
৫. কারও মতে, গুমনামি বাবার কণ্ঠস্বর অনেকটাই নেতাজির মতোই।
৬. গুমনামি বাবার অসীম ধৈর্য্য ক্ষমতা ছিল।
৭. অযোধ্যায় তিনি প্রায় ১০ বছর লোকচক্ষুর আড়ালে ছিলেন।
৮. আধ্যাত্মিকতা এবং যোগের মধ্যেই সময় কাটাতেন গুমনামি বাবা।
৯. গান শোনা, সিগার এবং খাওয়া ছিল তাঁর পছন্দের।
১০. গুমনামি বাবা নিজে নেতাজির অনুগামী ছিলেন, কিন্তু তাঁকে নিয়ে খবর ছড়িয়ে পড়তেই তিনি নিজের বাসস্থান পরিবর্তন করে নেন।
সহায় কমিশন রিপোর্টের সমাপ্তিতে বলা হয়েছে, গুমনামি বাবা একজন মেধাবী মানুষ এবং তাঁর মতো মানুষ খুবই বিরল, যাঁরা নিজের পরিচয়ের গোপনীয়তা প্রকাশের পরিবর্তে মৃত্যু পছন্দ করেন। তবে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াটি এমন ভাবে আয়োজন করা হয়েছিল, যেখানে শুধুমাত্র ১৩ জন নিয়েছিল। গুমনামি বাবার পরিচয় এখনও অচিহ্নিত।
এ কথা বলেছে খোদ বিষ্ণু সহায় কমিশনের রিপোর্ট। এ ব্যাপারে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সুস্নাত দাশ বলেন, “নেতাজি একজন বিশাল ব্যক্তিত্ব। কোনো মাপকাঠিতেই তাঁকে মাপা সম্ভব নয়। ফলে তাঁর মতো বিরল ব্যক্তিত্বকে নিয়ে বাণিজ্যিক চলচ্চিত্র থেকে শুরু করে রসালো গল্প-উপন্যাস লেখা হতেই পারে”।
একই সঙ্গে তিনি বলেন, “এখনও পর্যন্ত নেতাজিকে কেন্দ্র করে যে সমস্ত তদন্ত কমিশন গঠিত হয়েছে, সেগুলির কোনোটাতেই বলা হয়নি, ‘গুমনামি বাবা’ই নেতাজি”!
উঃ ২৪ পরগনা
‘আইএনএ-তে যতটা অবদান নেতাজির, ততটাই শাহনওয়াজ খানের’, সিএএ বিরোধী মিছিলে উঠল আওয়াজ

বরানগর: নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৩তম জন্মদিবস উদ্যাপনের পাশাপাশি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিলেন কয়েকশো মানুষ। বৃহস্পতিবার বরানগরের মল্লিক কলোনির নেতাজি মূর্তির পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ডানলপ মোড়ে ভগৎ সিংয়ের মূর্তির কাছে গিয়ে শেষ হয় এই প্রতিবাদ মিছিল।
এ দিনের মিছিলে অংশ নেয় বরানগর এবং সংলগ্ন কাশীপুরের বেশ কয়েকটি সংগঠন। নো এনআরসি/সিএএ, বরানগরের উদ্যোগে আয়োজিত মিছিলটি বনহুগলি, আলমবাজার, অশোকগড়-সহ বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। মিছিল থেকে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী বিরোধী সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান উঠলেও ছিল না কোনো রাজনৈতিক পতাকা। মূলত ভারতের জাতীয় পতাকা হাতেই মিছিলে অংশ নেন প্রতিবাদকারীরা।
বিশ্বজিত হাজরা নামে এক প্রতিবাদকারী বলেন, “আজকের দিনটা বিশেষ একটা দিন। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন। তিনি ভারতের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিয়েছিলেন। ঠিক একই ভাবে শাহনওয়াজ খান, লক্ষ্মী সায়গলরাও স্বাধীনতা সংগ্রামে নিজেদের উৎসর্গ করেছিলেন”।
[ আরও পড়ুন: প্রয়োজনে বল প্রয়োগ করে গেরুয়া শিবিরকে আটকানোর কথা বলেছিলেন নেতাজি ]
বিশ্বজিতবাবুর কথায়, “ভারতের স্বাধীনতার জন্য নেতাজি আজাদহিন্দ বাহিনী (আইএনএ) গঠন করেছিলেন। ওই লড়াইয়ে নেতাজির অবদান যতটা, শাহনওয়াজ খান, লক্ষ্মী সায়গলের অবদানও কম নয়। আবার ভগৎ সিং-সহ অন্যান্য স্বাধীনতাকেও কেউ খাটো করতে পারবে না। এই দেশ সবার”।
জন্মজয়ন্তী
নেতাজির জন্মদিনে নাম না করে মোদীকে বিঁধলেন মমতা!

ওয়েবডেস্ক: হিন্দু মহাসভার বিভেদের রাজনীতির বিরোধিতা করে ধর্মনিরপেক্ষ এবং ঐক্যবদ্ধ ভারতের জন্য লড়াই করেছেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। নেতাজির জন্মদিনে অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এহেন মন্তব্য করার পাশাপাশি নাম না করে বিঁধলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও।
মমতা বলেন, “নেতাজি তাঁর সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে সমস্ত ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধার বার্তা দিয়েছিলেন। তাঁর ঐক্যবদ্ধ ভারত গঠনের লড়াইকে আজকের দিনে শ্রদ্ধা জানাই। একই সঙ্গে তিনি ২৩ জানুয়ারি দিনটিকে জাতীয় ছুটি ঘোষণার দাবি জানান”।
তিনি বলেন, “নেতাজি হিন্দু মহাসভার বিভেদের রাজনীতির বিরোধিতা বরাবর করে গিয়েছেন। তিনি এক ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের হয়ে লড়াই করেছিলেন। আর এখন যাঁরা ধর্মনিরপেক্ষতার সমর্থন করেন, তাঁদের দূরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য উন্মোচনে কেন্দ্রের অনীহা রয়েছে বলে অভিযোগ করেন মমতা”।
[ আরও পড়ুন: প্রয়োজনে বল প্রয়োগ করে গেরুয়া শিবিরকে আটকানোর কথা বলেছিলেন নেতাজি ]
এ দিন তিনি নাম না করেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতি কটাক্ষ ছুড়ে দেন। বলেন, “যিনি সবাইকে নিয়ে চলেন, তিনিই নেতাজি। কিন্তু এখন সেটা নিয়েই গা-জোয়ারি চলছে”।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার মমতা দার্জিলিংয়ে নেতাজির ১২৩তম জন্মদিবস উদ্যাপনের অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
-
প্রযুক্তি14 hours ago
রান্নার গ্যাসের ভরতুকির টাকা অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে কি না, কী ভাবে দেখবেন
-
প্রযুক্তি2 days ago
এ ভাবেই তৈরি করুন সদ্যোজাত শিশুর আধার কার্ড, জানুন কী কী লাগবে
-
বিনোদন3 days ago
পর্ন ‘লাইভ স্ট্রিমিং’ থেকে আয় কোটি টাকা, অ্যাপের মাধ্যমে চিত্রনাট্য-সহ পরিবেশিত হচ্ছে অশ্লীলতা
-
ফুটবল3 days ago
দশ জনে খেলা হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে পিছিয়ে থেকেও শেষ মুহূর্তের গোলে মান বাঁচাল এটিকে মোহনবাগান