নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করছেন, বিশ্ব নেতৃত্বে ইউরোপের এগিয়ে আসার এখনই উপযুক্ত সময়। এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে ইউরোপের সামনে নিজেকে প্রমাণ করার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে।”
সম্প্রতি দ্য ফাইনান্সিয়াল টাইমস-এ স্ত্রী ও সহ-নোবেলজয়ী এস্থার ডুফলোর সঙ্গে লেখা একটি নিবন্ধে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, বিশ্বকে শুধুমাত্র আমেরিকার দানশীলতার উপর নির্ভরশীল থাকলে চলবে না। অন্যান্য দেশগুলিকেও এগিয়ে এসে সাহায্যের দায়িত্ব নিতে হবে।
তিনি বলেন, “বিশ্বের অন্য দেশগুলিকে এখন নেতৃত্ব নিতে হবে এবং দেখাতে হবে যে তারা সহায়তার অর্থ সংগ্রহ এবং কার্যকরভাবে খরচ করতে সক্ষম।”
ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি ও সহায়তা বন্ধ
সাক্ষাৎকারে তিনি স্বীকার করেন, ট্রাম্প যে বলেছিলেন ইউরোপ বিশ্ব নেতৃত্বে নিজেদের ভূমিকা থেকে সরে এসেছে—তা একাংশে ঠিকই। “ইউরোপ অনেক দিন ধরেই বড় কোনও উদ্যোগ নেয়নি। এখন তাদের সেই দায়িত্ব নেওয়ার সময় এসেছে,” মন্তব্য তাঁর।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ট্রাম্প প্রশাসন USAID-এর ৯০ শতাংশেরও বেশি বিদেশি সাহায্য প্রকল্প বন্ধ করে দেয়, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৫৪০ কোটি ডলার। হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে দাবি করা হয়, “USAID-এর মধ্যে অপচয় ও দুর্নীতি গভীরভাবে ছড়িয়ে আছে।”
এই প্রকল্প কাঁটছাঁটের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্লোবাল রিসার্চ সেন্টার, যা বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য হ্রাসে কাজ করে।
“অর্থ দেশের মানুষেরই স্বার্থে ব্যয় হচ্ছিল”
যখন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, “মার্কিন করদাতাদের টাকা কেন বিদেশে, বিশেষ করে চিনের ট্রান্সজেন্ডার ক্লিনিক বা দুর্যোগ ত্রাণে খরচ হবে?”—তখন অভিজিৎ এই মন্তব্যকে “হাস্যকর” বলে উড়িয়ে দেন।
তিনি বলেন, “মূলত এই অর্থ খরচ হত এমন সব প্রকল্পে যা সাধারণ আমেরিকান নাগরিকরাও সমর্থন করেন। যেমন PEPFAR (HIV/AIDS প্রতিরোধে রিপাবলিকানদের শুরু করা একটি প্রকল্প)। আমেরিকানরা জীবন বাঁচানো, ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তা করাকে সমর্থন করে।”