ভারতে গিগ ইকোনমি, বিশেষ করে ডেলিভারি পেশায় নিযুক্ত কর্মীদের আয় ও কর সচেতনতার অবস্থা নিয়ে একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় উদ্বেগজনক তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। বোরজো (Borzo), যা আগে ওয়েফাস্ট নামে পরিচিত ছিল, একটি বিশ্বব্যাপী সম-দিন ডেলিভারি কোম্পানি, তারা প্রায় ২,০০০ গিগ কর্মীর উপর সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছে যে ৭৮% কর্মীর বার্ষিক আয় ২.৫০ লাখ টাকার কম।
এই সমীক্ষায় দেশের প্রথম সারির ও দ্বিতীয় সারির শহর যেমন মুম্বই, দিল্লি, বেঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদ, কলকাতা, চেন্নাই সহ মোট ৪০টি শহরের কর্মীদের উপর তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। অ্যামাজন, জোমাটো, সুইগি, উবারের মতো বড় সংস্থাগুলিতে কাজ করা গিগ কর্মীরা এই সমীক্ষার অন্তর্ভুক্ত ছিল। সমীক্ষার মূল লক্ষ্য ছিল এই কর্মীদের আর্থিক চ্যালেঞ্জ এবং তাদের কর সচেতনতা সম্পর্কে বিশদ জানা।
গিগ কর্মীরা সাধারণত অস্থায়ী বা স্বল্পমেয়াদী কাজ করেন এবং তাঁরা স্বাধীনভাবে কাজ করেন। এই কারণে, তাঁরা সংস্থার স্থায়ী কর্মীদের মতো সাধারণ সুবিধা পান না। ফলে তাঁদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা অনেক সময় অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
সমীক্ষার সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিক ছিল কর সচেতনতার অভাব। সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৬১% কর্মীই আয়কর স্ল্যাব সম্পর্কে জানেন না, আর মাত্র ৩৯% তাঁদের কর অবস্থান সম্পর্কে সচেতন। এর মধ্যে মাত্র ৩৩.৫% কর্মী আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন, যা উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
যাঁরা কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৬৬% ‘শূন্য রিটার্ন’ জমা দিয়েছেন এবং বাকিরা সেলফ অ্যাসেসমেন্ট রিটার্ন জমা দিয়েছেন। সমীক্ষা অনুযায়ী, ৪৭% কর জমাদাতা নিয়মিত কিস্তিতে কর পরিশোধ করেন, আর ৫৩% এককালীন পরিশোধের পথ বেছে নেন।
যাঁরা এখনও আয়কর রিটার্ন জমা করেননি, তাঁদের মধ্যে ৪২% কর দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন যদি তাঁরা করের আওতায় পড়েন। তবে ৫৮% কর্মী কর দেওয়ার ক্ষেত্রে অমত প্রকাশ করেছেন, এমনকি তাঁরা করযোগ্য আয় থাকলেও।
এই পরিস্থিতি গিগ ইকোনমিতে কর্মরত মানুষদের আর্থিক অবস্থার সুরাহার প্রয়োজনীয়তার দিকে ইঙ্গিত করে। বোরজো ইন্ডিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ইউজিন প্যানফিলভ বলেন, “গিগ ইকোনমির দিকে মনোযোগ দেওয়ার পাশাপাশি, এই কর্মীদের সঠিক আর্থিক পরিকল্পনার জন্য জ্ঞান এবং পরিকাঠামো সরবরাহ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”