আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এবার আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। অর্থসচিব তুহিন কান্ত পাণ্ডে জানিয়েছেন, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ভারত তার বাণিজ্য নীতির সুস্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে যে দেশটি ‘সুরক্ষামূলক’ (protectionist) নীতি থেকে বেরিয়ে আসছে।
ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, শনিবার সরকার ইলেকট্রনিক্স ও বস্ত্রশিল্প সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। ২ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে এই নির্দেশ কার্যকর হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপের ফলে ভারতের বাজারে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাবে এবং বৈদেশিক বিনিয়োগের সম্ভাবনাও বাড়বে। অর্থসচিব জানিয়েছেন, ভারত বাণিজ্যের ক্ষেত্রে উচ্চ শুল্ক আরোপের পথে হাঁটছে না, বরং আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিনিয়োগ বান্ধব নীতি গ্রহণ করছে। তিনি আরও জানান, ভারতের শুল্ক হার জাপানের মতো উন্নত অর্থনীতির দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম।
উচ্চমানের মোটরসাইকেল ও সৌর প্যানেলে শুল্ক হ্রাস
সরকারের নতুন ঘোষণায় সৌর প্যানেলে ও বিলাসবহুল মোটরসাইকেলের আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি মূলত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবং দেশের শিল্পোন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করবে।
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম রাষ্ট্রপতি মেয়াদের সময় থেকেই ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মোটরসাইকেল শুল্ক নিয়ে মতানৈক্য তৈরি হয়েছিল। নতুন শুল্ক হার সেই বিতর্কের নিষ্পত্তির ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আর্থিক লক্ষ্য বজায় রাখবে ভারত
নতুন অর্থবর্ষের (এপ্রিল ২০২৫ থেকে) বাজেট প্রসঙ্গে অর্থসচিব জানিয়েছেন, সরকার ঘোষিত ঘাটতি ও ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা বজায় রাখবে। বাজেটে ব্যক্তিগত আয়কর ছাড়ের সীমা বৃদ্ধি এবং কর কাঠামোর পরিবর্তনের কারণে এক লক্ষ কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি হতে পারে। তবে সরকারের আশা, নতুন কর নীতির মাধ্যমে দেশের খরচ এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে, যা অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি BRICS দেশগুলিকে সতর্ক করেছেন যে, যদি তারা মার্কিন ডলারের বিকল্প মুদ্রা চালু করার চেষ্টা করে, তাহলে ১০০% শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। তবে এ প্রসঙ্গে পাণ্ডে স্পষ্ট করেছেন যে ভারতের বিশ্বব্যাপী ডলারের বিকল্প তৈরির কোনও পরিকল্পনা নেই।