ভারতের পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা আগামী দশকে প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পাবে বলে ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং। বুধবার তিনি জানান, বর্তমানে ভারতের এই ক্ষমতা ৮,০৮১ মেগাওয়াট, যা গত এক দশকে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ২০৩১-৩২ সালের মধ্যে এটি বৃদ্ধি পেয়ে ২২,৪৮০ মেগাওয়াটে পৌঁছাবে। বুধবার লোকসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী এই তথ্য দেন।
গত এক দশকের অগ্রগতি
জিতেন্দ্র সিং বলেন, ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার সময় এনডিএ সরকার দেশের পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৪,৭৮০ মেগাওয়াট। ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮,০৮১ মেগাওয়াটে। গত দশ বছরে যা উন্নয়ন হয়েছে, তা আগের ছয় দশকের সমতুল্য। তিনি উল্লেখ করেন, “ভারতের প্রযুক্তিগত দক্ষতা ছিল আগেও, কিন্তু সঠিক রাজনৈতিক নেতৃত্বের অভাবে সেই সম্ভাবনা পূরণ হয়নি। বর্তমান সরকারের সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং নেতৃত্বে এই অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে।”
উৎপাদন ও বিতরণে নতুন পরিকল্পনা
মন্ত্রী জানান, ২০৩১-৩২ সালের মধ্যে দেশের পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা তিনগুণ বাড়িয়ে ২২,৪৮০ মেগাওয়াটে নিয়ে যাওয়া হবে। বিদ্যুৎ বিতরণের ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনতে ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে, ৩৫ শতাংশ পার্শ্ববর্তী রাজ্যকে এবং ১৫ শতাংশ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করার নতুন ফর্মুলা গ্রহণ করা হয়েছে। এটি কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে এক সংহত সম্পর্ক স্থাপনে সহায়ক হবে।
তামিলনাড়ুর প্রকল্প এবং অন্যান্য সাফল্য
তামিলনাড়ুর তিরুনেলভেলি জেলার একটি প্রকল্পে বিলম্বের কথা স্বীকার করে মন্ত্রী জানান, কুন্দনকুলাম প্রকল্পে ইতিমধ্যে চারটি ইউনিট চালু হয়েছে এবং আরও ইউনিট চালুর কাজ চলছে। একইসঙ্গে কলপাক্কম প্রকল্পও বিশেষ গতিতে এগোচ্ছে।
থোরিয়াম সম্পদের ব্যবহার
বিশ্বে মজুত থাকা থোরিয়ামের ২১ শতাংশ সম্পদ রয়েছে ভারতে। সমুদ্রতীরবর্তী মনাজাইট খনিজ থেকে থোরিয়াম সংগ্রহ করা হয়। মন্ত্রী জানান, থোরিয়ামের অপচয় রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশীয় ভাবে ভাভিনি প্রকল্পে থোরিয়ামের পরীক্ষামূলক ব্যবহার চলছে, যা ইউরেনিয়ামের উপর নির্ভরশীলতা কমাবে এবং আমদানি খরচ কমাতে সাহায্য করবে।
শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে পরমাণু শক্তির ভূমিকা
পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ও উদ্ভাবনী ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভারত বিশ্বে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে। মন্ত্রী জানান, কৃষিক্ষেত্রে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করে ৭০টি নতুন ফসল প্রজাতি উদ্ভাবন করা হয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য আইসোটোপ উৎপাদনেও উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে।