কাউন্সিলের বৈঠকে বেশ কিছু পণ্যের উপর জিএসটি কমানোর সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্র। শনিবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ৫৩তম জিএসটি কাউন্সিল বৈঠকে বসেন। বৈঠকে তিনি প্রধানত জিএসটি ব্যবস্থাকে সরল করার উপর গুরুত্ব দেন, যা ব্যবসায়ী মহল দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে। কিছু জিনিসকে জিএসটির আওতার বাইরে রেখে সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দেওয়ার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেছেন, “আমি জিএসটি মূল্যায়নকারীদের (GST assessee) আশ্বাস দিতে চাই যে আমাদের উদ্দেশ্য তাঁদের জীবন সহজ করা। আমরা জিএসটি নিয়মগুলির জটিলতা কমানো নিয়ে কাজ করছি। আমি সিজিএসটির (CGST) পক্ষ থেকে এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বলতে চাই যে আমরা প্রত্যেককে সহজে নোটিশ পাঠাচ্ছি না। সমস্ত সক্রিয় করদাতাদের মধ্যে মাত্র ১.৯৬% কেন্দ্রীয় জিএসটি থেকে কোনও নোটিশ পেয়েছে।”
অর্থমন্ত্রী আরও জানান যে ভারতীয় রেলওয়ে কর্তৃক প্ল্যাটফর্ম টিকিট, ক্লোক রুমের সুবিধা, ওয়েটিং রুমের মতো পরিষেবাগুলিকে জিএসটির আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে হোস্টেল থাকা পড়ুয়াদের প্রতি ব্যক্তি প্রতি মাসে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হয়েছে। এটি ছাত্র বা কর্মজীবী শ্রেণীর জন্য এবং ৯০ দিনের বেশি থাকার শর্তে এই ছাড় প্রযোজ্য হবে।
সরকারি মামলা কমানোর জন্য জিএসটি কাউন্সিল বিভিন্ন আপিল কর্তৃপক্ষের সামনে কর বিভাগের দ্বারা আপিল দায়ের করার জন্য একটি আর্থিক সীমা নির্ধারণ করেছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ‘জিএসটি আপিল ট্রাইব্যুনালের জন্য ২০ লাখ টাকা, হাইকোর্টের জন্য ১ কোটি টাকা এবং সুপ্রিম কোর্টের জন্য ২ কোটি টাকার আর্থিক সীমার সুপারিশ করা হয়েছে। যদি আর্থিক সীমা জিএসটি কাউন্সিল দ্বারা নির্ধারিত সীমার থেকে কম হয় তবে কর কর্তৃপক্ষ সাধারণত আপিল করবে না।’
জিএসটি কাউন্সিল দুধের ক্যানের উপর ১২ শতাংশ হারে করের সুপারিশ করেছে। এর ফলে কৌটর দুধের দাম কিছুটা হলেও কম হবে। সমস্ত কার্টন বক্সে জিএসটি ১৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১২ শতাংশ করা হয়েছে। সমস্ত সোলার কুকারে ১২ শতাংশ জিএসটি হার প্রযোজ্য হবে। পাশাপাশি ফায়ার স্প্রিংকলার সহ সমস্ত ধরণের স্প্রিংকলারে ১২ শতাংশ জিএসটি হার প্রযোজ্য হবে।
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন স্পষ্ট করেছেন যে কেন্দ্র সরকার পেট্রোল এবং ডিজেলকে জিএসটির আওতায় আনতে চায়। তিনি বলেছেন, এর জন্য কোনও সংশোধনের প্রয়োজন নেই। রাজ্যগুলির সঙ্গে মিলে জ্বালানিতে জিএসটি হার নির্ধারণ করতে হবে। জিএসটি কাউন্সিলের পরবর্তী বৈঠক প্রায় দুই মাস পরে আগস্টে হবে। তখনই পেট্রোল ডিজেলকে জিএসটির আওতায় আনার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন যে জিএসটি হারের যৌক্তিকতা নির্ধারণের জন্য একটি মন্ত্রীদের গোষ্ঠী (GoM) গঠন করা হয়েছে, যারা আগস্টে জিএসটি কাউন্সিলকে রিপোর্ট দেবে।