মঙ্গলবারেও (৪ মার্চ, ২০২৫) টানা পতনের ধারা অব্যাহত রাখল ভারতের শেয়ারবাজার। যদিও বিশ্ব এবং এশিয়ার অন্যান্য বাজারের তুলনায় ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডা, মেক্সিকো এবং চিনের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা করার পর থেকেই আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপক বিক্রির চাপ দেখা দেয়।
ফেব্রুয়ারির পতনের পর বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করলেও, তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) এবং অটোমোবাইল শেয়ারের তীব্র দরপতনের কারণে সূচক নীচে নেমে যায়। যদিও সরকারি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার কিছুটা সমর্থন জোগায়, তবে তা বাজারকে ইতিবাচক অঞ্চলে নিয়ে আসতে পারেনি।
সূচকের পারফরম্যান্স
নিফটি ফিফটি সূচক ০.১৭ শতাংশ পতনের সঙ্গে ২২,০৮২ পয়েন্টে বন্ধ হয়েছে। এটি টানা দশম সেশনে লোকসানে রয়েছে, তবে গুরুত্বপূর্ণ ২২,০০০ স্তর ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে।
সেনসেক্স ০.১৩ শতাংশ কমে ৭২,৯৬২ পয়েন্টে নেমে গেছে এবং ৭৩,০০০ স্তর হারিয়েছে।
নিফটি মিডক্যাপ ১০০ সূচক ০.০৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৪৮,০০০ পয়েন্টে পৌঁছেছে।
নিফটি স্মলক্যাপ ১০০ সূচক ০.৬৯ শতাংশ বেড়ে ১৪,৭৬২ পয়েন্টে বন্ধ হয়েছে।
বিশ্ববাজার ও বাণিজ্য উত্তেজনা
ট্রাম্প প্রশাসন সোমবার ঘোষণা করে, মেক্সিকো ও কানাডা থেকে আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে মঙ্গলবার থেকে, যা বিনিয়োগকারীদের আশাহত করেছে। চিনের আমদানির ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প, যা আগের ১০ শতাংশ শুল্কের দ্বিগুণ।
এর জবাবে চিন ও কানাডা পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছে। যা নতুন বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করেছে। ট্রাম্প প্রশাসন কৃষিপণ্য আমদানির ওপরও শুল্ক বসানোর পরিকল্পনা করছে, যা উদ্বেগের কারণ, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান কৃষিপণ্য রফতানিকারক ভারত।
খাতভিত্তিক পারফরম্যান্স
নিফটি মিডিয়া: ২.৩৯ শতাংশ বৃদ্ধি, আগের দিনের বিক্রির চাপ কাটিয়ে উঠেছে।
নিফটি পিএসইউ ব্যাংক: ১.৫৫ শতাংশ লাভ।
নিফটি তেল ও গ্যাস, নিফটি ফিন্যান্স, নিফটি মেটাল ও নিফটি ব্যাংক: ০.৩৪ শতাংশ-০.৬২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি।
নিফটি অটো: ১.৩৮ শতাংশ পতন, আজকের সবচেয়ে খারাপ পারফর্ম করা সূচক।
নিফটি আইটি: মার্কিন অর্থনীতির মন্থরতার আশঙ্কায় ০.৯৩ শতাংশ হ্রাস।
নিফটি এফএমসিজি, নিফটি ফার্মা ও নিফটি রিয়েলটি: ০.১১ শতাংশ-০.৬১ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার কারণে ভারতীয় শেয়ারবাজারের অস্থিরতা অব্যাহত থাকতে পারে, তবে মধ্য ও ক্ষুদ্র মূলধনী শেয়ারগুলোর পুনরুদ্ধার বিনিয়োগকারীদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে।