বৃহস্পতিবার ভারতীয় শেয়ারবাজারে বড়সড় পতন। গতকাল, বুধবার বাজার বন্ধ ছিল গান্ধী জয়ন্তী উপলক্ষে। আজ বাজার খুলতেই ধস। এই ঘটনা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই পতনের পেছনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে, যেগুলো একত্রিত হয়ে বাজারকে এই অবস্থায় নিয়ে এসেছে।
প্রথমত, ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা মধ্যপ্রাচ্যে আরও বড় সংঘাতের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এর ফলে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি সরবরাহ ব্যবস্থায় বড়সড় অস্থিরতা দেখা দিয়েছে, যা ভারতের মতো আমদানিনির্ভর অর্থনীতির ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১.২৪% বেড়ে $৭৪.৮২ প্রতি ব্যারেল হয়েছে, যা ভারতীয় বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
অন্যদিকে, SEBI-এর নতুন বিধিনিষেধও বাজারের ওপর প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে ফিউচার অ্যান্ড অপশন (এফ অ্যান্ড ও) ট্রেডিংয়ের কঠোর নিয়মের কারণে বাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমে গেছে। এসব পরিবর্তনের ফলে বিনিয়োগকারীরা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন এবং বাজারে নতুন করে বিনিয়োগ করতে অনিচ্ছুক হচ্ছেন।
এর পাশাপাশি, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বড় আকারে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন, যা বাজারে অতিরিক্ত চাপ তৈরি করছে। অক্টোবরের শুরুতেই বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ৫,৫৭৯.৩৫ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছেন, যা বাজারের পতনকে আরও ত্বরান্বিত করেছে।
এই বাজার পতনের পরিপ্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের জন্য কৌশলী এবং সতর্ক থাকা প্রয়োজন। বর্তমান পরিস্থিতি ক্ষণস্থায়ী হতে পারে, তাই দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের পরিকল্পনা করতে হবে। ভালো মৌলিক সংস্থাগুলিতে বিনিয়োগ বজায় রাখা এই সময়ে সঠিক কৌশল হতে পারে। এছাড়া, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য আনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধুমাত্র একটি সেক্টরে বা অঞ্চলে বিনিয়োগ না করে বিভিন্ন সেক্টর এবং দেশে বিনিয়োগ করলে ঝুঁকি কমানো সম্ভব হবে।
বাজারের অস্থিরতায় তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত না নিয়ে ধৈর্য ধরে চলা প্রয়োজন। বর্তমান পরিস্থিতিতে শেয়ারের দাম কম থাকায়, এটি পোর্টফোলিও পুনর্বিন্যাস করার একটি সুযোগ হতে পারে। এছাড়াও, অভিজ্ঞ এবং সার্টিফায়েড বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে বিনিয়োগ করা এই সময়ে কার্যকর হতে পারে।