মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ তাদের মূল সুদের হার ৫০ বেসিস পয়েন্টস (বিপিএস) কমানোর ঘোষণা করেছে। এই পদক্ষেপটি কর্মসংস্থানের বাজার নিয়ে উদ্বেগ এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে। সাধারণত ২৫ বিপিএসের পরিবর্তে এই ধরনের বড় কাটতি ফেডের মুদ্রানীতির স্থিতিস্থাপকতার ইঙ্গিত দেয়, যা সুদের হারের স্থিতিশীলতা এবং মুদ্রাস্ফীতির লক্ষ্য পূরণের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করছে।
ফেডের রেট-সেটিং কমিটির সর্বশেষ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “কমিটি এখন আরও বেশি আত্মবিশ্বাসী যে মুদ্রাস্ফীতি টেকসইভাবে ২ শতাংশের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বর্তমানে কর্মসংস্থান এবং মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকি প্রায় ভারসাম্যের মধ্যে রয়েছে।” এর মানে হল যে ফেড কর্মকর্তারা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আত্মবিশ্বাসী হলেও, গভর্নর মিশেল বোম্যানসহ কয়েকজনের মধ্যে ভিন্নমত ছিল। বেশিরভাগ নীতিনির্ধারক ২৫ বিপিএস কমানোর প্রস্তাব করলেও, চূড়ান্তভাবে ৫০ বিপিএস কমানো হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ ফেডের বেঞ্চমার্ক রেট আরও অর্ধেক শতাংশ কমতে পারে। ২০২৫ এবং ২০২৬ সালের মধ্যে সুদের হার আরও কমিয়ে ২.৭৫ থেকে ৩.০০ শতাংশের মধ্যে স্থিত হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এটি একটি “নিরপেক্ষ” হার হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে, যা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে না বাড়ায়, না কমায়। ফেড কর্মকর্তাদের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই হার অর্থনীতিতে সুষম পরিস্থিতি বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
ফেডের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল এক প্রেস কনফারেন্সে বলেন, “এই সিদ্ধান্তটি আমাদের ক্রমবর্ধমান আত্মবিশ্বাসকে প্রতিফলিত করে। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের নীতির সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে শ্রমবাজারের শক্তি বজায় রাখা সম্ভব হবে, বিশেষ করে যখন মুদ্রাস্ফীতি ধীরে ধীরে ২ শতাংশে নেমে আসছে।”
বিশ্লেষকদের মতে, ফেডের এই পদক্ষেপটি মার্কিন অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, কারণ সুদের হার কমার ফলে ঋণ গ্রহণ সহজ হবে, যা বিনিয়োগ এবং খরচ বৃদ্ধি করতে সহায়ক হতে পারে। যদিও ফেডের মূল লক্ষ্য হল মুদ্রাস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা, তবুও অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ধরে রাখাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে কিছু অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ আশঙ্কা করছেন যে, দীর্ঘমেয়াদে এই নীতির প্রভাব কী হতে পারে তা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন।
এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে, ফেড ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য পদক্ষেপ নিচ্ছে, যদিও সাম্প্রতিক বাজার পরিস্থিতির ওপর এর প্রভাব কেমন হবে তা নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।