বইপত্তর
পুস্তক পর্যালোচনা: ‘জটায়ুকে যেমন দেখেছি’ বইয়ে পাঠক আরও কাছ থেকে চিনবেন তাঁদের প্রিয় ‘জটায়ু’কে
জটায়ু’কে নিয়ে অশোক বক্সীর ভাঁড়ারে রয়েছে অজস্র চমকপ্রদ কাহিনি। তেমনই কিছু কাহিনি তিনি পাঠকের কাছে পরিবেশন করেছেন তাঁর বইয়ে।

খবরঅনলাইন ডেস্ক: ফেলুদা মানা করে দিয়েছেন, কোনো প্রশ্ন করা চলবে না। তাই রাজস্থানের পথে উট দেখে মনে প্রশ্ন ঘাই মারছে, অথচ করতে পারছেন না। তাই স্বগতোক্তি করছেন, ‘কোনো প্রশ্ন নয়’, ‘কোনো প্রশ্ন নয়’। শেষ পর্যন্ত থাকতে না পেরে ফেলুদার কাছে অনুমতি চাইলেন এবং অনুমতি পেয়েই সেই বিখ্যাত প্রশ্ন, “উট কি কাঁটা বাছিয়া খায়?” লালমোহন গাঙ্গুলি তথা জটায়ু আমাদের আরও কাছে এলেন।
এর আগে ট্রেনেই লালমোহন গাঙ্গুলির আলাপপর্বটা সারা হয়ে গিয়েছে ফেলুদা-তপসের সঙ্গে। ফেলুদাদের অবাঙালি ভেবে বাঙালির হিন্দিতে অনর্গল বলে চলেছেন জটায়ু। ফেলুদা উপভোগ করছেন, তোপসেও। একটা সময় ফেলুদা পরিষ্কার বাংলায় যখন বললেন হিন্দিটা চালিয়ে যেতে, তখন তাঁর সেই অনাবিল হাসি আর ‘দূর মশাই’ বলা কি বাঙালি ভুলতে পারে? বাঙালির মনে চিরস্থায়ী জায়গা হয়ে গেল লালমোহন গাঙ্গুলি তথা জটায়ুর। বাঙালি ভুলেই গেল এই ভদ্রলোকের নাম সন্তোষ দত্ত, এক জন মস্ত বড়ো উকিল।
তবে সন্তোষ দত্তের অভিনয় শুরু তার অনেক আগেই, ১৯৫৮-য় সত্যজিৎ রায়ের ‘পরশপাথর’ ছবিতে। সে দিন কি কেউ বুঝতে পেরেছিলেন বাংলা চলচ্চিত্র জগতে এক অসামান্য কমেডিয়ানের উদয় হল? অবশ্য সন্তোষবাবুকে শুধু কমেডিয়ান আখ্যা দিলে তাঁকে ছোটো করা হয়। আসলে তাঁকে আমরা, বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শকরা, মূলত ‘জটায়ু’ হিসাবেই চিনি।
সেই ‘জটায়ু’কে খুব কাছ থেকে দেখেছেন আইনজীবী অশোক বক্সী। কারণ অশোকবাবুর আইনশিক্ষায় হাতেখড়ি সন্তোষ দত্তের কাছেই। তিনি সন্তোষ দত্তের প্রথম ও একমাত্র জুনিয়র।
বাংলা ছবির দর্শক জটায়ুকে পেল কী ভাবে? অশোক বক্সীর স্মৃতিচারণা –
আর একটু হলেই ‘সোনার কেল্লা’ থেকে ছিটকে যাচ্ছিলেন জটায়ু সন্তোষ দত্ত! সন্তোষ দত্তের জুনিয়র হিসেবে কোর্টে যেতে শুরু করেছেন এবং তত দিনে অশোকবাবুর ‘সন্তোষদা’ হয়ে গিয়েছেন। একটা হত্যাকাণ্ডের মামলা নিয়ে সন্তোষ দত্তের তখন দিন রাত এক হয়ে গেছে। তার মাঝেই একদিন ফোন এল বিশপ লেফ্রয় রোডের বাড়ি থেকে। ফোন রেখে গম্ভীর মুখে সন্তোষদা বললেন, “এ তো মহা মুশকিলে পড়লাম দেখছি। মানিকদা ফোন করেছিলেন। আমাকে জটায়ু করার জন্য বললেন। রাজস্থানে এক মাসের শ্যুটিং। যেদিন যাবার কথা সেদিনই মামলার শুনানি। কী করি বলো তো?” তখনকার সময়ে আদালতে দিন পড়লে মুলতুবি নেওয়া অত সহজ ছিল না। সন্তোষদা সোজাসুজি ফোন করলেন মামলায় বিরোধী পক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটরকে। সব খুলে বললেন। চেয়ারের উল্টো দিকে বসে অশোকবাবু শুনতে পাচ্ছেন, ওপার থেকে উত্তর ভেসে আসছে, “অত ঘাবড়াবার কী আছে? শুনানি যাতে না হয় তার সব বন্দোবস্ত আমি করব। তুমি শুধু একটা পিটিশান করে নিয়ে এসো।” জজ সাহেব ছিলেন শচীন সান্যাল। পিটিশান নিয়ে ওঁর ঘরে অশোকবাবুরা তিনজনে হাজির। জজকে সত্যি কথাটাই বললেন সেই পাবলিক প্রসিকিউটর। সঙ্গে এও বললেন, “মামলাটা যদি এক মাস পিছিয়ে যায়, আমার কোনও আপত্তি নেই।” শচীন সান্যাল সব শুনে বললেন, “ঠিক আছে, আপনি ওঁর বিরোধী হয়েও যখন এ কথা বলছেন, আমি অ্যালাও করে দিচ্ছি।” এ ভাবেই ‘জটায়ু’র ছাড়পত্র পেয়েছিলেন সন্তোষদা।
‘জটায়ু’কে নিয়ে অশোক বক্সীর ভাঁড়ারে রয়েছে এ রকম অজস্র চমকপ্রদ কাহিনি। তেমনই কিছু কাহিনি তিনি পাঠকের কাছে পরিবেশন করেছেন ‘জটায়ুকে যেমন দেখেছি’ বইয়ে, তাঁর সহজ, সরল, সাবলীল গদ্যে। পাঠককুল আরও কাছ থেকে চিনতে পারবেন তাঁদের প্রিয় ‘জটায়ু’কে।
বই: জটায়ুকে যেমন দেখেছি
লেখক: অশোক বক্সী
প্রকাশক: রুপালি
দাম: ৮০টাকা
বইটি অনলাইনে কিনতে হলে এখানে ক্লিক করুন।
আরও পড়ুন : পুস্তক পর্যালোচনা: ঘনাদা আর টেনিদাকে নিয়ে সৃষ্টি ‘বাংলা সাহিত্যে দুই দাদা’
বইপত্তর
পুস্তক পর্যালোচনা: ঘনাদা আর টেনিদাকে নিয়ে সৃষ্টি ‘বাংলা সাহিত্যে দুই দাদা’
টেনিদার খ্যাতি তাঁর খাঁড়ার মতো নাক, গড়ের মাঠে গোরা পেটানো, আর তার বিখ্যাত সংলাপ, ‘ডি-লা গ্রান্ডি মেফিস্টোফিলিস ইয়াক ইয়াক’-এর জন্য।

বাংলা সাহিত্যে দুই অমর সৃষ্টি – ঘনাদা আর টেনিদা। ঘনাদার স্রষ্টা প্রেমেন্দ্র মিত্র আর টেনিদার স্রষ্টা নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়।
প্রেমেন্দ্র মিত্রের কলমে ঘনাদার আত্মপ্রকাশ ১৯৪৫ সালে। প্রকৃত নাম ঘনশ্যাম দাস। ঘনাদা বলেন, ইউরোপীয়রা তাঁকে ‘ডস’ নামে চেনে। ৭২ নম্বর বনমালি নস্কর লেনের এক মেসবাড়িতে ঘনাদার বাস। ঘনাদার অধিকাংশ গল্পই তাঁর মেসবাড়িতে বসে বলা। আর শ্রোতা হল ওই মেসের চার প্রতিবেশী শিবু, শিশির, গৌর ও গল্পের কথক সুধীর।
ঘনাদার ভাণ্ডারে কল্পবিজ্ঞান, অভিযান বা ঐতিহাসিক গল্পের বিপুল সমাহার। আর সেই সব গল্পের বেশির ভাগেরই নায়ক ঘনাদা স্বয়ং। ঘনাদার প্রতিবেশীরা নানা ভাবে তাঁকে প্রভাবিত করে তাঁর মুখে সেই সব গল্প শোনে আর আমরা, পাঠকরা, তার ভাগ পাই। এক দিকে ঘনাদার বাগাড়ম্বরতা, মুখেন মারিতং জগৎ, অন্য দিকে তাঁর বিপুল পাণ্ডিত্য, উপস্থিত বুদ্ধি আর উদ্ভাবনী প্রতিভা তাঁকে বিপুল জনপ্রিয় করেছে।
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের টেনিদা কিন্তু পড়াশোনায় ভালো ছিলেন না। সাত বারের চেষ্টায় ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। বাস করেন উত্তর কলকাতার পটলডাঙায়। প্রকৃত নাম ভজহরি মুখার্জি। চার জনের একটি গ্রুপ, টেনিদা তার নেতা আর বাকিরা হল গল্পলেখক প্যালারাম, হাবুল আর ক্যাবলা। এই ‘চারমূর্তি’র প্রথম আত্মপ্রকাশ ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে।
আরও পড়ুন : পুস্তক পর্যালোচনা : ক্যাম্বোডিয়া ইতিহাসের মৃত্যু পাথরে জীবন
টেনিদার খ্যাতি তাঁর খাঁড়ার মতো নাক, গড়ের মাঠে গোরা পেটানো, আর তার বিখ্যাত সংলাপ, ‘ডি-লা গ্রান্ডি মেফিস্টোফিলিস ইয়াক ইয়াক’-এর জন্য। টেনিদার গল্প দু’ ধরনের – এক, নিজের তথাকথিত বীরত্বের বানানো গল্প, আর দুই, চার মূর্তির অ্যাডভেঞ্চার কাহিনি। টেনিদা সম্পর্কে প্যালারামের মূল্যায়ন – পাড়ার কারও আপদে-বিপদে টেনিদা সকলের আগে, লোকের উপকারে ক্লান্তি নেই, মুখে হাসি লেগেই আছে, ফুটবলের মাঠে সেরা খেলোয়াড়, ক্রিকেটের ক্যাপ্টেন, আর গল্পের রাজা।
বাংলা সাহিত্যে এই দুই অত্যন্ত জনপ্রিয় কাল্পনিক চরিত্রকে নিয়ে সৌমিক কান্তি ঘোষের সৃষ্টি ‘বাংলা সাহিত্যে দুই দাদা’। লেখক ও প্রাবন্ধিক সৌমিক কান্তি ঘোষ পেশায় অধ্যাপক। বেলুড় লালবাবা কলেজে অর্থনীতির লেকচারার হিসাবে কর্মরত। এ ছাড়াও তিনি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণজ্ঞাপন বিভাগের সঙ্গে অতিথি অধ্যাপক হিসাবে যুক্ত। পড়াশোনা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি এবং ফিল্ম স্টাডিজ নিয়ে। ‘মৃণাল সেন অ্যান আনরিভিল্ড মিস্ট্রি প্রাইড অব বেঙ্গল’, মাল্টিপ্লেক্স অ্যান্ড ইন্ডিয়ান পপুলার সিনেমা’ প্রভৃতি তাঁর লেখা উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ। লেখকের আশা, ঘনাদা আর টেনিদাকে নিয়ে লেখা তাঁর এই বই পাঠককুল বিপুল আগ্রহ নিয়ে পড়বেন।
বই: বাংলা সাহিত্যে দুই দাদা
লেখক: সৌমিক কান্তি ঘোষ
প্রকাশক: রুপালি
দাম: ১৪৪ টাকা
বইটি অনলাইনে কিনতে এখানে ক্লিক করুন।
বইপত্তর
পুস্তক পর্যালোচনা : ক্যাম্বোডিয়া ইতিহাসের মৃত্যু পাথরে জীবন
অঙ্কর ভাট আর অঙ্কর থমের সঙ্গেই ক্যাম্বোডিয়া আরও একটি কারণে চিরস্মরণীয়। তা হল পল পটের শাসনকালে গণহত্যা।

ক্যাম্বোডিয়া বলতেই চোখের সামনে প্রথমেই ভাসে ইতিহাস বইয়ে পড়া অঙ্কর ভাটের ছবি। মেকং নদীর তীরে অবস্থিত রাজধানী নম পেন থেকে ৩২৪ কিমি দূরে দ্বাদশ শতকের এই মন্দির খেমর স্থাপত্য শিল্পকলার অনুপম নিদর্শন। এই মন্দিরের বিশালত্ব এবং দেওয়ালের কারুকার্য রীতিমতো বিস্ময় জাগায়। অঙ্কর ভাটের এই মন্দির ক্যাম্বোডিয়ার জাতীয় প্রতীকে পরিণত হয়েছে। জন্মের লগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত ক্যাম্বোডিয়ার যত পতাকা হয়েছে, তার সব ক’টিতেই স্থান পেয়েছে অঙ্কর ভাটের মন্দির।
পাশাপাশি রয়েছে অঙ্কর থম তথা ‘মহান নগরী’ – দ্বাদশ শতকের রাজধানী নগরী। খেমর সাম্রাজ্যের সর্বাধিক স্থায়ী রাজধানী নগরী অঙ্কর থম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজা সপ্তম জয়বর্মণ। ন’ বর্গ কিমি এলাকা জুড়ে ছড়ানো এই নগরীতেও রয়েছে মন্দিরস্থাপত্যের বিস্ময়কর নিদর্শন।
অঙ্কর ভাট আর অঙ্কর থমের সঙ্গেই ক্যাম্বোডিয়া আরও একটি কারণে চিরস্মরণীয়। তা হল পল পটের শাসনকালে গণহত্যা। ঠিক ৪৫ বছর আগে ১৯৭৫-এর একদিন পল পটের নেতৃত্বাধীন খেমর রৌশ বাহিনী ক্যাম্বোডিয়ার ক্ষমতা দখল করে। দেশের নাম পালটে করে কাম্পুচিয়া। মুহূর্তের মধ্যে নম পেন-সহ সমস্ত শহর খালি করে শহরবাসীকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় গ্রামে। গ্রামীণ প্রকল্পে বলপূর্বক মজুর হিসাবে খাটানোর জন্য। একাদশ শতকের আদলে গ্রামীণ কৃষি ব্যবস্থা ঢেলে সাজার পরিকল্পনা করা হয়। যা কিছুর মধ্যে ‘পশ্চিমি’ ছাপ আছে বলে মনে করা হয়, তার সব কিছু ভেঙে গুঁড়িয়ে ফেলা হয়। ধ্বংস করে ফেলা হয় মন্দির, লাইব্রেরি। বাতিল করে দেওয়া হয় ‘পশ্চিমি’ ওষুধ। নির্বিচারে হত্যা করা হয় বুদ্ধিজীবীদের। কত মানুষকে যে মেরে ফেলা হয়, তার কোনো হিসাব নেই। বলা হয়, এই হত্যালীলায় ১০ লক্ষ থেকে ৩০ লক্ষ লোকের প্রাণ যায়।
পাঠককুলের কাছে এই ক্যাম্বোডিয়ার কাহিনি তুলে ধরেছেন অমল বন্দ্যোপাধ্যায়।
লেখক অমল বন্দ্যোপাধ্যায় – এক কথায় সর্ব গুণের সমাহার। এক দিকে বিজ্ঞানসাধক, অন্য দিকে সাহিত্যসাধক। সেই সঙ্গে তিনি বাচিকশিল্পী এবং ভ্রামণিকও। অমলবাবু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান। ওষুধ সংক্রান্ত তাঁর প্রায় একশো গবেষণাপত্র বিশ্বের বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। ইউনেসকো ফেলোশিপ নিয়ে জাপানের কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা করেছেন। গবেষণার জন্য তিনি আচার্য পি সি রায় স্বর্ণপদক, রামমোহন পুরস্কার ইত্যাদি পেয়েছেন।
অমলবাবুর সাহিত্যসাধনা ছাত্রজীবন থেকেই শুরু। তখন থেকেই নানা পত্রপত্রিকায় লেখালেখি শুরু করেন। আজ বিভিন্ন সাহিত্যআসরে তিনি মধ্যমণি হয়ে বিরাজ করেন।
কর্মসূত্রে এবং ভ্রমণের নেশা থেকে প্রায় সারা বিশ্ব চষে ফেলেছেন অমলবাবু। তাঁর বিশ্বভ্রমণ শুরু সত্তরের দশকেই। সেই ভ্রমণ আজও সমানে চলেছে। সম্প্রতি পূর্ব ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ছাড়াও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ ঘুরে এসেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ক্যাম্বোডিয়া। সেই ক্যাম্বোডিয়া- ভ্রমণের ফসল ‘ক্যাম্বোডিয়া: ইতিহাসের মৃত্যু পাথরে জীবন’। এই বইয়ের মাধ্যমে পাঠককুল যে ক্যাম্বোডিয়াকে ভালো করে চিনবেন, সেখানে যে তাঁদের মানস-ভ্রমণ হয়ে যাবে তা বলাই বাহুল্য।
বই: ক্যাম্বোডিয়া ইতিহাসের মৃত্যু পাথরে জীবন
লেখক: অমল বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রকাশক: রুপালি
দাম: ২০০ টাকা
বইটি কিনতে ফোন করুন ৯৪৩২০৬২৯২৮
ভ্রমণ সংক্রান্ত বই ছাড়াও আরও নানাধরনের বই প্রকাশ করে রুপালি। দেখতে এবং কিনতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।
খবর অনলাইনে আরও পড়ুন :
বইপত্তর
পুস্তক পর্যালোচনা: মৃণাল সেনের অদ্বিতীয় পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে ‘মৃণাল সেন অ্যান আনরিভিল্ড মিস্ট্রি প্রাইড অব বেঙ্গল’ বইয়ে
অধ্যাপক সৌমিক কান্তি ঘোষের ‘মৃণাল সেন অ্যান আনরিভিল্ড মিস্ট্রি প্রাইড অব বেঙ্গল’ শীর্ষক বইয়ে সিনেমাটোগ্রাফার হিসাবে, পরিচালক হিসাবে এবং সর্বোপরি অনন্য দর্শনশক্তি সম্পন্ন মানুষ হিসাবে মৃণাল সেনের অদ্বিতীয় পরিচয়টি তুলে ধরা হয়েছে।

মৃণাল সেন – আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এক ব্যতিক্রমী চলচ্চিত্র পরিচালক। বাংলার সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক অবস্থার ছবি তুলে ধরে তিনি নতুন ধারার ভারতীয় চলচ্চিত্রের জ্ঞানতত্ত্বীয় সীমানাটা নতুন করে নির্ধারণ করেছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের যথাযথ মূল্যায়ন কার্যত অসম্ভব।
অধ্যাপক সৌমিক কান্তি ঘোষের ‘মৃণাল সেন অ্যান আনরিভিল্ড মিস্ট্রি প্রাইড অব বেঙ্গল’ শীর্ষক বইয়ে সিনেমাটোগ্রাফার হিসাবে, পরিচালক হিসাবে এবং সর্বোপরি অনন্য দর্শনশক্তি সম্পন্ন মানুষ হিসাবে মৃণাল সেনের অদ্বিতীয় পরিচয়টি তুলে ধরা হয়েছে। সমাজের নিচুতলার মানুষজনের, শোষিত-নিপীড়িত মানুষজনের অভিজ্ঞতা চলচ্চিত্রায়িত করেছেন মৃণাল এবং তাঁর সেই চলচ্চিত্রায়ণকে সূক্ষ্ম বিচারবুদ্ধি দিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন লেখক।
অনেকটা তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের প্রেক্ষিতে এ কথা বলাই যায় যে, film is by nature political…, অনেক মহতী মানুষই এ কথা উচ্চারণ করেছেন। চলচ্চিত্র তৈরি হয় তার বিষয়-প্রসঙ্গ, বক্তব্য, ভাবনা ও নন্দনতত্ত্ব সব মিলিয়ে। এই বইয়ে যেমন এক দিকে মৃণাল সেনের রাজনৈতিক সিনেমার প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়েছে, তেমনই তাঁর ব্যক্তিগত রাজনৈতিক মতাদর্শ বা বার্তা তাঁর চলচ্চিত্রে কী ভাবে বিশ্লেষিত হয়েছে তা-ও আলোচনা করার চেষ্টা করা হয়েছে।
মূলত কলকাতা ট্রিলোজি অর্থাৎ ‘ইন্টারভিউ’ (১৯৭১), ‘কলকাতা ৭১’ (১৯৭২) এবং ‘পদাতিক’ (১৯৭৩) ছবিগুলোই পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করা হয়েছে এবং তার মাধ্যমে বিপ্লবের অনিবার্যতা এবং তার প্রেক্ষিতে মধ্যবিত্তের অবক্ষয়িত অস্তিত্বের সংকটকে তুলে ধরা হয়েছে।
এ বার লেখক নিয়ে দু’-চার কথা। অধ্যাপক সৌমিক কান্তি ঘোষ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি এবং ফিল্ম স্টাডিজ-এ স্নাতকোত্তর করে আপাতত বেলুড় লালবাবা কলেজে অর্থনীতির লেকচারার হিসাবে কর্মরত। এ ছাড়াও তিনি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন সংযোগ বিভাগের সঙ্গে অতিথি অধ্যাপক হিসাবে যুক্ত। অর্থনীতির পাশাপাশি ফিল্ম স্টাডিজ নিয়ে তাঁর আগ্রহ বরাবরের আর তারই ফলশ্রুতি এই বই। লেখকের আশা, মৃণাল সেনকে নিয়ে তাঁর এই বই পাঠককুল বিপুল আগ্রহ নিয়ে পড়বেন।
বই: মৃণাল সেন অ্যান আনরিভিল্ড মিস্ট্রি প্রাইড অব বেঙ্গল (Mrinal Sen An Unrevealed Mistry Pride of Bengal)
লেখক: অধ্যাপক সৌমিক কান্তি ঘোষ
প্রকাশক: রুপালি
দাম: ১৫০.০০
অ্যামাজন Kindle Edition কিনতে হলে এখানে ক্লিক করুন
ফোনেও বইটি অর্ডার করতে পারেন। ফোন করুন ৯৪৩২০৬২৯২৮ এই নম্বরে
-
শরীরস্বাস্থ্য3 days ago
থাইরয়েড ধরা পড়েছে? এই খাবারগুলি সম্পর্কে সচেতন হন
-
রাজ্য2 days ago
তৃণমূলে যোগ দিলেন অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায়, প্রিয়া সেনগুপ্ত
-
ফুটবল1 day ago
বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু ব্রাজিলের ফুটবল ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও চার ফুটবলারের
-
প্রযুক্তি3 days ago
৪২ শতাংশ কিশোরী দিনে এক ঘণ্টারও কম সময় মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুযোগ পায়: সমীক্ষা