অনুষ্ঠান
মোহিনী-মায়ায় ঋদ্ধ দুই সন্ধ্যা

পাপিয়া মিত্র
বেহালা শরৎ সদনের সামনে লম্বা লাইন। সকলের চোখে-মুখে একই উদ্বিগ্নতা – বসার জায়গা মিলবে তো? সম্প্রতি ‘মোহিনী চৌধুরী জন্মশতবর্ষ উদযাপন কমিটি’ আয়োজন করেছিল এক শ্রদ্ধাঞ্জলি-সন্ধ্যা। চলল পর পর দু’ দিন। পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহের ধারে ধারে শ্রোতাদের ভিড়, তাঁরা শুনছেন গীতিকার, কবি, ম্যাট্রিক পরীক্ষায় ১৯তম স্থানাধিকারী এক ছাত্র-যুবকের কথা। তাঁকে নিয়ে আলোচনায় রত কবীর সুমন, তাঁর কথনে শ্রোতারা আবিষ্ট। নানা বয়সের শ্রোতার মিলনক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল প্রেক্ষাগৃহ, মোহিনী চৌধুরীর এক পরিবারের স্বজন হিসাবে। সেই আনন্দ ধরে রাখতে না পেরে এক সময়ে সুমন বলেই ফেললেন দর্শক আসনের আলো জ্বালিয়ে দিতে।
মঞ্চে বসে আছেন প্রধান অতিথি কবীর সুমন, কল্যাণ সেন বরাট, মোহিনী-কন্যা মিতালি সেন এবং পুত্রদ্বয় ভবিষ্যৎ ও দিগ্বিজয় চৌধুরী, পরিমল ভট্টাচার্য, দীপঙ্কর আচার্য ও সমগ্র অনুষ্ঠানের ‘হাল’ শিল্পী শুভেন্দু মাইতি। শরীর অসুস্থ থাকায় তৃতীয় পুত্র দেবদূত মঞ্চে উঠতে পারেননি। সঙ্গে ছিল পৌত্র উৎসব এবং মোহিনী-পরিবারের অন্য সদস্যরা। নানা কথার ছলে কবীর সুমনের আলোচনা এগিয়ে চলল এবং উপসংহারে দাঁড়াল – যে তিন জন কবি-গীতিকার না লিখলে তিনিও গীতিকার হতেন না, তাঁদের মধ্যে অন্যতম মোহিনী চৌধুরী।

এক কথায় আলোচনা ছিল খুবই ঘরোয়া। প্রসঙ্গক্রমে উঠে এল মোহিনী চৌধুরীর বহু অপ্রকাশিত কবিতার কথা। দুই সুরকার-শিল্পী কল্যাণ সেন বরাট ও কবীর সুমন আবেদন জানালেন, কিছু কবিতা তাঁদের দেওয়া হলে তাঁরা সুর করে নবীন প্রজন্মকে দিয়ে গাওয়াবেন। উত্তম প্রস্তাব। মোহিনী চৌধুরীকে শ্রদ্ধায় স্মরণ করলেন শুভেন্দু মাইতি। বক্তৃতা দিলেন কমিটির যুগ্ম সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু দাশ। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অতিথিদের স্মারক ও স্মারক-গ্রন্থ দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়।
‘মোহিনী চৌধুরী’ স্মরণানুষ্ঠান পর পর দু’ দিন এক মোহিনী জালে জড়িয়ে ফেলেছিল। প্রথম দিনে মঞ্চ ও শ্রোতা-দর্শকরা যেমন এক সঙ্গে ‘মুক্তির মন্দির সোপানতলে’ গেয়েছিলেন, তেমনই পরের দিন গীতিকারকে নিয়ে তথ্যচিত্র দেখার জন্য ভিড় জমেছিল অনেক আগে থেকেই। বাঙালি বুঝিয়ে দিয়েছিল, আজও তাঁকে তারা ভোলেনি।
ভোলা যাবে কী করে? মনে করা যাক ১৯৩৭-প্রথম রেকর্ডিং-এর কথা – কুসুম গোস্বামীর কণ্ঠে ‘রাজকুমারী ওলো, নয়নপাতা খোলো’। সেটি প্রকাশিত হল ১৯৪৩-এ। তাতে কী এসে গেল? কবির খাতায়-কলমে তখন এক বৈশাখী ঝড় উঠেছে। লিখে চলেছেন সেই সব কালজয়ী লেখনী। বেহালার মাটিকে ধন্য করে, পুজোর আকাশে-বাতাসে সজোরে ধাক্কা দিল ‘পৃথিবী আমারে চায়’-এর মতো গান। চল্লিশের দশকে এমন দৃপ্ত লেখনীতে সুর দিলেন কমল দাশগুপ্ত এবং কণ্ঠ দিলেন পড়শি সত্য চৌধুরী। কেউ ভাবল প্রেমের গান, কেউ ভাবল জাগরণের। আধুনিক কবিতার সুর-সমুদ্রে ঢেউ উঠল সফেন – ‘জেগে আছি কারাগারে’, ‘আমি দুরন্ত বৈশাখী ঝড়’, ‘আজি কাশ্মীর হতে কন্যাকুমারী’, ‘হায় আমারও যে ঘর ছিল’, ‘তুমি যদি বলো ভালোবাসা দিতে জান না’, ‘জয় হবে, হবে জয়’, ‘শতেক বরষ পরে’ ইত্যাদি। নানা কবিতা, কবিতা থেকে গান।

সে দিন যে সব শিল্পী মন কেড়েছিলেন, বরং বলা ভালো আন্তরিক ভাবে যাঁরা গেয়েছিলেন, তাঁদের মনের গভীরতা থেকেই যে শ্রদ্ধা উঠে এসেছিল কণ্ঠে তা বলাই বাহুল্য – গাইলেন মনোময় ভট্টাচার্য, শম্পা কুণ্ডু, অগ্নিভ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৈকত মিত্র, গৌতম ঘোষাল, সুস্মিতা গোস্বামী। আরও অনেক শিল্পীর পরিবেশনাও ছিল যথাযথ। সম্মেলক গান ছিল ‘ক্যালকাটা কয়্যার’, ‘উঠোন’ ও ‘পান্থপাদপ’-এর। চৈতালি হালদারের আবৃত্তি মন কাড়ে। শুভেন্দু মাইতির কণ্ঠে ‘জেগে আছি কারাগারে’ গানটি শুনে মন চলে গিয়েছিল চল্লিশের দশকের সেই সময়ে। মোহিনী চৌধুরীর কবিতা গান হয়েছিল মানুষের মনে মনে। দু’ দিনের অনুষ্ঠানে মনে হল যেন সেই সব গান প্রস্ফুটিত হল সকলের কাছে।
যে সব যন্ত্রানুষঙ্গী শিল্পী না থাকলে সে দিনের আসর জমে উঠত না, তাঁরা হলেন তবলায় শিল্পী দীপঙ্কর আচার্য, জগন দাস (গিটার), দীপজ্যোতি আচার্য (বেহালা), মনোজ রথ (অক্টোপ্যাড) ও উত্তম মুখোপাধ্যায় (কি বোর্ড)। কথায় ও সুরে যাঁরা মৈত্রীবন্ধন করেছিলেন সেই দুই সঞ্চালক হলেন কৌশিক সেন ও অলোক রায়ঘটক।
এই অনুষ্ঠান দু’ দিনেই শেষ নয়। সারা বছর ধরে চলবে মোহিনী চৌধুরী জন্মশতবার্ষিকী শ্রদ্ধাঞ্জলি। জেলা থেকেও ডাক এসেছে, জানালেন অনুষ্ঠানের সমাপ্তি-ঘোষক ও কমিটির কার্যনির্বাহী সভাপতি বেণু চট্টোপাধ্যায়। শারীরিক অসুস্থতার জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি কমিটির সভাপতি শিল্পী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়।
ছবি: সংগৃহীত
অনুষ্ঠান
যোগ আরও ছড়িয়ে দিতে ১৮০ জন যোগশিক্ষককে শংসাপত্র দিল হাওড়ার পতঞ্জলি যোগ সমিতি
শংসাপত্র গ্রহণকারীরা হাওড়ার পতঞ্জলি যোগপীঠে ১০০ ঘণ্টাব্যাপী যোগশিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় যোগ দিয়েছিলেন।

খবরঅনলাইন ডেস্ক: যোগের ক্ষেত্রে ক্যারিয়ারের সম্ভাবনা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা এবং আজকের প্রজন্মকে ভবিষ্যতের জন্য যোগব্যায়াম গ্রহণের ব্যাপারে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে অনলস কাজ করে চলেছে হাওড়ার পতঞ্জলি যোগ সমিতি। রবিবার এক অনুষ্ঠানে এই সমিতির পক্ষ থেকে কলকাতার রাজ্য শিক্ষক, রাজ্য আধিকারিক এবং জেলার দায়িত্বরতদের ১৮০টি শংসাপত্র প্রদান করা হল।
যাঁর মিশন ‘স্বাস্থ্য ভারত, আত্মনির্ভর ভারত’, সেই স্বামী রামদেবের অনুপ্রেরণায় শংসাপত্র গ্রহণকারীরা হাওড়ার পতঞ্জলি যোগপীঠে ১০০ ঘণ্টাব্যাপী যোগশিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় যোগ দিয়েছিলেন। কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পৃষ্ঠপোষক স্বামী প্রবীরদেব এবং বিজয় জয়সওয়াল। এ ছাড়া ছিলেন কলকাতার রাজ্য সভাপতি এবং অন্য সদস্যরাও।
‘কলকাতার রাজ্য শিক্ষক, রাজ্য আধিকারিক, জেলার দায়িত্বরত এবং যোগশিক্ষকদের হাতে ১৮০টি শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়। কর্মশালা শান্তিমন্ত্রের আবৃত্তি দিয়ে শেষ হয়েছিল’, জানান পশ্চিমবঙ্গের পৃষ্ঠপোষক বিজয় জয়সওয়াল।
তিনি আরও বলেন, সব বয়সের মানুষের কাছেই যোগব্যায়াম জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিগত বছরগুলিতে এটি যে সাধারণ মানুষের জন্য একটি পছন্দের ক্যারিয়ার হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে, তা-ও দেখা যাচ্ছে।
বিজয় জয়সওয়াল বলেন, ‘যোগকে সবার জীবনের অংশ হিসাবে গড়ে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যে দৃষ্টিভঙ্গি তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই পতঞ্জলি যোগ সমিতি ভালো যোগ প্রশিক্ষকদের একটি গোষ্ঠী তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে।”
বিজয়বাবু জানান, যোগের বিষয়ে উৎসাহী এমন হাজারের বেশি মানুষ এই শংসাপত্র প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁর আশা, কোভিড-১৯ এর পরে যোগ ইনস্ট্রাক্টর ও ট্রেনারদের চাহিদা বাড়বে।
অনুষ্ঠান
‘ফ্রন্টলাইন সোলজার অ্যাওয়ার্ড ২০২০’ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল

নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘ফ্রন্টলাইন সোলজার অ্যাওয়ার্ড ২০২০’ দেওয়া হল। এই পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন সৃষ্টি ডান্স অ্যাকাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ইন্দ্রাণী গাঙ্গুলি। অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল গত ২৯ ডিসেম্বর, আইসিসিআর মঞ্চে।
করোনাভাইরাসের অতিমারিতে যাঁরা সামনে থেকে লড়াই চালাচ্ছেন তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা এবং তাঁদের পুরষ্কৃত করাই ছিল এই অনুষ্ঠানের মূল লক্ষ্য। সমাজের সকল স্তরের যোদ্ধাদেরই সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তালিকায় ছিলেন ডাক্তার নার্স পুলিশ এবং সাংবাদিক।

এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেতা মাধবী মুখোপাধ্যায়, বাসবদত্তা চ্যাটার্জি, শকুন্তলা বড়ুয়া, লাজবন্তী রায়, সুমনা দাস, আইপিএস সুজয় কুমার চন্দ, এমএলএ দেবাশিস কুমার, ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশনের জাতীয় সভাপতি রবি জয়সওয়াল ও আরও অনেকে।
অনুষ্ঠানে ডাঃ মধুছন্দা কর, ডাঃ অঞ্জুলা ব্যানার্জি, গৌতম ভট্টাচার্য (পুলিশ), কাজল কুমার দলুই (আইএএস পার্কস্ট্রিট)-সহ আরও অনেকেই সম্মানিত করা হয়।
অনুষ্ঠান
২৫-এ পা বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গনের, অনুষ্ঠান দেখা যাবে অনলাইনে

স্মিতা দাস
কোভিড পরিস্থিতিতে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে সবাই যখন ঘরবন্দি তখন বিভিন্ন উপলক্ষ্যগুলিতে মন খারাপের বোঝা সরিয়ে মনকে প্রশান্তি দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পথে একের পর এক উৎসব পালন করে চলেছে বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গন। সেখানে যেমন বাদ যায়নি কবি-বন্দনা তেমনই হয়েছে দেবী-আবাহন। তবে অবশ্যই নিয়মবিধির বেড়াজাল না টপকে এই আয়োজন করেছিল বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গন। একই সঙ্গে দেশ ও বিদেশকে মাতিয়ে ছিল তারা তাদের ডিজিট্যাল দুনিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় অনলাইন পার্ফমেন্সের মাধ্যমে। সেই বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গনের এই বছরই ২৫তম বর্ষ পূর্তি।
সেই বর্ষপূর্তিও উদযাপন করবে তারা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। ফেসবুক পেজে। অনুষ্ঠানের নাম দিয়েছে ‘অবশেষে পঁচিশে’। অনুষ্ঠানটি বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গন ও কলকাতা সংকৃতিক অঙ্গনের যৌথ নিবেদন।
অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হবে, ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে। প্রচার শুরু হবে ২২ ডিসেম্বর থেকে। প্রতিদিন দেখা যাবে ভারতীয় সময় সন্ধ্যে ৭টায়।
-
শিল্প-বাণিজ্য8 hours ago
ফের বাড়ল পেট্রোল, ডিজেলের দাম, কলকাতায় নতুন রেকর্ড
-
ফুটবল2 days ago
বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু ব্রাজিলের ফুটবল ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও চার ফুটবলারের
-
কলকাতা1 day ago
উত্তর কলকাতার অলিতেগলিতে লুকিয়ে রয়েছে ইতিহাস, সাধারণতন্ত্র দিবসে হেঁটে দেখা
-
কলকাতা2 days ago
নারকেলডাঙার ছাগলপট্টিতে আগুন, হতাহতের খবর নেই