অনুষ্ঠান
ঘরোয়া আমেজে অনলাইনে রবীন্দ্রসংগীতের অনুষ্ঠান করলেন মনোজ ও মনীষা মুরলী নায়ার
প্রথমে প্রচার, তার পর টিকিট বিক্রি আর তার পর অনুষ্ঠান।

স্মিতা দাস
করোনাভাইরাস বদলে দিল জীবন। মঞ্চ শিল্পীরাও এখন অনলাইন কনসার্ট করছেন। রবীন্দ্রসংগীত শিল্পীরাও পিছিয়ে নেই। সম্প্রতি রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী মনোজ মুরলী নায়ার ও মনীষা মুরলী নায়ার অনলাইন কনসার্টের আয়োজন করেছিলেন। অনুষ্ঠানের নাম ছিল ‘শ্রাবণেরও দিন যায়’। প্রথমে প্রচার, তার পর টিকিট বিক্রি আর তার পর অনুষ্ঠান ও তাতে দর্শক শ্রোতাদের উপস্থিত হওয়া – এই সবটাই হয়েছে অনলাইনে। সাড়া কেমন পেলেন? তার উত্তর দিয়েছেন শিল্পী নিজে।
জনপ্রিয় শিল্পী মনোজ ও মনীষা। শিল্পী মনোজ মুরলী নায়ার বলেন, জীবনের এই মোড়ে এসে সবটাই কেমন বদলে গিয়েছে। এমনটা কেউ কখনওই ভাবেনি। অথচ সব বদলে গেল। এখন জীবন জীবিকার তাগিদে প্রায় চার মাস পরে এসে এ বার ভাবতেই হচ্ছে এমন কিছু নিয়েই। তাই অবশেষে এমন একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন। এখন প্রযুক্তিকে সঙ্গে নিয়ে সকলেই এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তাঁরাও করেছেন।
মনোজ বলেন, মঞ্চে হাজার হাজার মানুষের সামনে তাঁদের প্রত্যক্ষ প্রতিক্রিয়া দেখে অনুষ্ঠান করতে অভ্যাস তাঁদের। বিশেষ করে বিষয়টি যখন রবীন্দ্রসংগীত, সেখানে দর্শক শ্রোতাদের প্রতিক্রিয়া, ঘাড়নাড়া ইত্যাদিই গান গাইতে উৎসাহ যোগায়। সেখানে অনলাইনে তার কিছুই উপলব্ধি হয় না। তবে, হ্যাঁ নতুন অভিজ্ঞতাও মন্দ নয়।
এটি ছিল তাঁদের প্রথম অনলাইন পেড প্রোগ্রাম। সোশ্যাল মাধ্যমেই সব কিছু। লাইভ, ভিডিও ক্লিপিং দিয়ে প্রচার করেছেন। তিনি বলেন, বহু বয়স্ক মানুষ আছেন যাঁরা রবীন্দ্রসংগীতের অনুরাগী কিন্তু স্মার্টফোন বা সোশ্যালমাধ্যমগুলিতে অভ্যস্ত নন। তাঁদের খুবই অসুবিধা হয়। অন্যের সাহায্যের অপেক্ষায় থাকতে হয়। তবুও তেমন ভাবেও বহু শ্রোতা এই অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। সেই নিরিখে শিল্পী হিসাবে তিনি খুবই খুশি।
টিকিটের দাম কী রকম ছিল

মনোজ মুরলী নায়ার জানান, ভারতীয়দের জন্য ১০০ টাকা। এ ছাড়া বিদেশে ১০ ডলার, বা পাউন্ড ইত্যাদি। সব মিলিয়ে প্রায় ৩১৫টি মতো টিকিট বিক্রি হয়েছিল। কারণ এটাই ছিল প্রথম বার। তিনি বলেন, মঞ্চে কনসার্ট হলে একটা টিকিটে একজনই আসেন। কিন্তু অনলাইনে তা সম্ভব নয়। একটা টিকিটে সারা বাড়ির সকল সদস্যই দেখতে পারেন। ফলে এ ক্ষেত্রে একটা প্রতিকূলতা তো রয়েইছে। সুতরাং খুব একটা যে লাভবান বিষয় তা কিন্তু নয়।
সমস্যা কিছু হয়নি?
মনোজ মুরলী নায়ার বলেন, মিউজিশিয়ান নিয়ে এই রকম অনুষ্ঠান করলে সেখানে খরচ অনেক বেশি হয়। এটা যে হেতু রবীন্দ্রনাথের গান, আর মানুষ যে কোনো পরিস্থিতিতে, এমনকি এই সময় এই যুগেও তা শুনতে ভালোবাসেন তাই সম্ভব হয়েছিল ঘরোয়া আমেজে শোনানো। কিন্তু অন্য ধরনের গান হলে তা সম্ভব নয়।
কতগুলি গান ছিল
প্রায় ২০টি গান ছিল। একক আর দ্বৈত মিলিয়ে। তার মধ্যে ছিল ‘ধরণীর গগনের’, ‘মেঘের পরে মেঘ জমেছে’, ‘আজি ঝরঝর মুখর বাদল দিনে’, ‘মধু গন্ধে ভরা’ ইত্যাদি।
ভবিষ্যতে কি এমন অনুষ্ঠান আবার করবেন
শিল্পী দৃঢ় প্রত্যয়ে জানালেন, নিশ্চয়ই করবেন। তাঁর কথায়, আবার তাঁরা এই ভাবেই অনুষ্ঠান করবেন। এটা ছিল শুরু।
দেখুন – ৮০-র পরেও নতুন অভিজ্ঞতার ‘শ্যামা’য় তিনি অভিভূত, বললেন সত্তরোর্ধ্ব নৃত্যশিল্পী পলি গুহ
অনুষ্ঠান
সামাজিক মাধ্যমে দুই বাংলার সঙ্গীত ও আবৃতি শিল্পীদের সেতু গড়েছে বাওবা টিভি

নিজস্ব প্রতিনিধি : করোনা কাল আমাদের অনেক কিছু শিখিয়েছে। প্রতিকূলতার মধ্যে আমাদের থেমে না থাকার ইচ্ছেটাকে আরও শক্তিশালী করেছে অতিমারী পরিস্থিতি।
কিছু সময়ের জন্য স্তব্ধ হলেও থামেনি আমাদের কলাচর্চা। শিল্পী-স্রোতার ব্যবধান ঘুচিয়ে দিয়েছে ডিজিটাল মিডিয়া। তাকেই মাধ্যম করে দুই বাংলার সঙ্গীত ও বাচিক শিল্পীদের সেতু তৈরি করেছে বাওবা টিভি।
নেতাজি সুভাষ চন্দ্রের ১২৫ জন্মদিনে ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরে শুরু হয় এই উদ্যোগ। বাওবা টিভির ফেসবুক পেজে নিয়মিত চলছে এই সঙ্গীত এবং আবৃতির অনুষ্ঠান।
প্রতি সপ্তাহে শুক্র, শনি ও রবিবার ভারতীয় সময় রাত ৮টা, বাংলাদেশ সময় রাত ৮ -৩০ টা এবং আমেরিকা ও কানাডা সকাল ৯ -৩০ টায় দেখা যাচ্ছে এই অনুষ্ঠান। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পীবন্ধুরা থাকছেন শুধুমাত্র বাংলা সঙ্গীত ও আবৃত্তি নিয়ে । অনুষ্ঠানটির ডিজিটাল মিডিয়া পার্টনার খবর অনলাইন।
অনুষ্ঠান
শনিবার শোভাবাজারের গোপীনাথ বাড়িতে বসছে শিল্প-সংস্কৃতির জমজমাট আড্ডা

শুভদীপ রায় চৌধুরী
তিলোত্তমা কলকাতার ইতিহাসচর্চা বা সংস্কৃতিচর্চার প্রসঙ্গ উঠলেই যাদের নাম প্রথম দিকে উঠে আসে তাদের মধ্যে অন্যতম হল শোভাবাজার রাজবাড়ি, যাদের ঐতিহ্য এবং বনেদিয়ানা আজও বাংলার শিল্প ও সংস্কৃতিকে গৌরবান্বিত করে।
তৎকালীন সময়ে বহু রাজপরিবারে সংস্কৃতিচর্চা হত। বলা যেতে পারে গান-বাজনায় মেতে থাকত গোটা ঠাকুরদালান-সহ রাজবাড়ির অন্দরমহল। শোভাবাজার রাজবাড়িতেও অনুষ্ঠিত হত সেই জলসাঘর, যে জলসাঘরে উপস্থিত থাকতেন বিশিষ্টজনেরা।
একটা সময়ে এই কলকাতায় বাই-নাচ খুবই প্রচলিত ছিল। শোনা যায়, কলকাতায় প্রথম বাই-নাচের সূত্রপাত ঘটে শোভাবাজার রাজবাড়িতেই। শুধু বাই-নাচই নয়, কবিগান, যাত্রা, রাগসংগীতের আসর ইত্যাদি নানা রকমের আড্ডা বসত রাজবাড়িতে।
আবার সেই রাজবাড়ির দালানে বসবে বিশিষ্টজনেদের আসর আগামী ৩০শে জানুয়ারি ঠিক ৩টের সময়। শোভাবাজার রাজবাড়ির গোপীনাথ বাড়িতে অনুষ্ঠিত হবে শিল্প-সংস্কৃতির এক বৈঠকী আড্ডা। আড্ডার বিষয় ‘বাংলার শিল্প-সংস্কৃতি ও শোভাবাজার রাজবাড়ি’। আড্ডায় উপস্থিত থাকবেন শিল্প এবং সংস্কৃতিজগতের স্বনামখ্যাত মানুষজন, সঙ্গে থাকবেন কলকাতার বিভিন্ন প্রাচীন রাজবাড়ি-জমিদারবাড়ির সদস্যরাও।

বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত, বিখ্যাত গায়ক প্রশান্ত ভট্টাচার্য, সুব্রত বসাক। এ ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন আদিত্য বসাক, অংশুমান ভৌমিক-সহ বহু বিশিষ্টজন। এ ছাড়াও এই আড্ডায় উপস্থিত থাকবেন কলকাতার স্বনামধন্য পরিবারের সদস্যরা যেমন সাবর্ণ চৌধুরী পরিবার, শোভারাম বসাকের পরিবার, পাথুরিয়াঘাটা মল্লিক পরিবার, পটলডাঙা বসুমল্লিক পরিবার-সহ আরও বিভিন্ন প্রাচীন পরিবার।
অনুষ্ঠানটির মূল উদ্যোক্তাদের মধ্যে অন্যতম প্রবীর কৃষ্ণ দেব হলেও, রাজবাড়ির বিভিন্ন সদস্য যেমন নরেন্দ্র কৃষ্ণ দেব, শুভাশিস কৃষ্ণ দেব, শঙ্কর কৃষ্ণ দেব-সহ পরিবারের আরও সদস্যরা রয়েছেন এই আড্ডায় জড়িয়ে। করোনার সমস্ত রকম করোনার বিধিনিষেধ মেনেই বসবে এই আড্ডা। অনুষ্ঠানে প্রবেশের আগে স্যনিটাইজারের ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া রাজবাড়ির তরফ থেকে একটি বিশেষ মাস্কের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাজবাড়িতে প্রতিটা আড্ডার সঙ্গে থাকে জমজমাট খাওয়াদাওয়া। এ বারের আড্ডায় একটু অন্য রকম আয়োজন করা হয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে রাজবাড়ির তরফ থেকে। এই দিন বৈঠকী আড্ডার পাশাপাশি থাকবে নানা রকমের তেলেভাজা – যেমন বকফুলের বড়া, কুমড়োফুলের বড়া, বাঁধাকপির বড়া, লঙ্কার চপ, সঙ্গে ধনেপাতার চাটনি আর মুড়ি। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, শনিবার সংস্কৃতিজগতের বিভিন্ন দিক নিয়ে এক জমজমাট মুখরোচক আলোচনাসভা হতে চলেছে শোভাবাজার রাজবাড়িতে।
অনুষ্ঠান
যোগ আরও ছড়িয়ে দিতে ১৮০ জন যোগশিক্ষককে শংসাপত্র দিল হাওড়ার পতঞ্জলি যোগ সমিতি
শংসাপত্র গ্রহণকারীরা হাওড়ার পতঞ্জলি যোগপীঠে ১০০ ঘণ্টাব্যাপী যোগশিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় যোগ দিয়েছিলেন।

খবরঅনলাইন ডেস্ক: যোগের ক্ষেত্রে ক্যারিয়ারের সম্ভাবনা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা এবং আজকের প্রজন্মকে ভবিষ্যতের জন্য যোগব্যায়াম গ্রহণের ব্যাপারে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে অনলস কাজ করে চলেছে হাওড়ার পতঞ্জলি যোগ সমিতি। রবিবার এক অনুষ্ঠানে এই সমিতির পক্ষ থেকে কলকাতার রাজ্য শিক্ষক, রাজ্য আধিকারিক এবং জেলার দায়িত্বরতদের ১৮০টি শংসাপত্র প্রদান করা হল।
যাঁর মিশন ‘স্বাস্থ্য ভারত, আত্মনির্ভর ভারত’, সেই স্বামী রামদেবের অনুপ্রেরণায় শংসাপত্র গ্রহণকারীরা হাওড়ার পতঞ্জলি যোগপীঠে ১০০ ঘণ্টাব্যাপী যোগশিক্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় যোগ দিয়েছিলেন। কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের পৃষ্ঠপোষক স্বামী প্রবীরদেব এবং বিজয় জয়সওয়াল। এ ছাড়া ছিলেন কলকাতার রাজ্য সভাপতি এবং অন্য সদস্যরাও।
‘কলকাতার রাজ্য শিক্ষক, রাজ্য আধিকারিক, জেলার দায়িত্বরত এবং যোগশিক্ষকদের হাতে ১৮০টি শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়। কর্মশালা শান্তিমন্ত্রের আবৃত্তি দিয়ে শেষ হয়েছিল’, জানান পশ্চিমবঙ্গের পৃষ্ঠপোষক বিজয় জয়সওয়াল।
তিনি আরও বলেন, সব বয়সের মানুষের কাছেই যোগব্যায়াম জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিগত বছরগুলিতে এটি যে সাধারণ মানুষের জন্য একটি পছন্দের ক্যারিয়ার হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে, তা-ও দেখা যাচ্ছে।
বিজয় জয়সওয়াল বলেন, ‘যোগকে সবার জীবনের অংশ হিসাবে গড়ে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর যে দৃষ্টিভঙ্গি তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই পতঞ্জলি যোগ সমিতি ভালো যোগ প্রশিক্ষকদের একটি গোষ্ঠী তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে।”
বিজয়বাবু জানান, যোগের বিষয়ে উৎসাহী এমন হাজারের বেশি মানুষ এই শংসাপত্র প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তাঁর আশা, কোভিড-১৯ এর পরে যোগ ইনস্ট্রাক্টর ও ট্রেনারদের চাহিদা বাড়বে।