প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী
নাচে গানে জমজমাট সিনেমা না হলেই, বাঙালি সেই ছবি থেকে বার্তা খোঁজে বা গভীর সমাজতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা খোঁজে। সে কথা মনে রেখেই খবরঅনলাইনের পক্ষ থেকে শিরোনামে একটা বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করা হল। আসলে অকারণ চেষ্টা। কারণ ‘ষড়রিপু’ থ্রিলারটি আসলে যাকে বলে ফুলটুস বিনোদন। পরিচালক অয়ন চক্রবর্তী তাঁর প্রথম ছবিতে মাতিয়ে দিয়েছেন।
থ্রিলারের গল্প বলতে নেই। প্রয়োজনও নেই । যেটা বলতে হয়, তা হল, চিত্রনাট্যে কোনও ফাঁক থেকে গেল কি না, পুরো চিত্রনাট্যটা টানটান, নাকি কোথাও ঝুলে গিয়েছে, এই সব কথা। না, তেমন কিছুই হয়নি। এক্কেবারে মেদহীন ব্যাপার-স্যাপার। দু’ ঘণ্টার মধ্যে শহরে পাঁচটা খুনকে পাঁচ চরিত্রের ষড়রিপুর বাঁধনে চমৎকার বেঁধেছেন পরিচালক। সংলাপও যথোচিত। কাহিনিটি পুরোদস্তুর প্রাপ্তবয়স্ক হলেও, তেমন দৃশ্যের আশায় গেলে সে দিক দিয়ে খুব একটা লাভ হবে না দর্শকদের, তবে শেষ অবধি দেখার পর বেশ একটা তৃপ্ত মন নিয়ে বেরোতে পারবেন হল থেকে।
অভিনয়ে তো এক সে বড় কর এক। ইহুদি ব্যবসায়ী রজতাভ, তাঁর স্ত্রী শোভনা সাবা, গয়নার দোকানের ম্যানেজার রুদ্রনীল, ডিএসপি রাজেশ শর্মা খুব ভালো। সুদীপ্তা আর গোয়েন্দা-অ্যাসিস্ট্যান্ট কনীনিকা অসাধারণ। ইন্দ্রনীল অবশ্য মোটামুটি। তবে সব ছাপিয়ে বলতেই হয় গোয়েন্দা চন্দ্রকান্ত-র কথা। হ্যাঁ, স্ক্রিপ্টের পুরোদস্তুর সাহায্য তিনি পেয়েছেন। তা হলেও চতুষ্কোণ থেকে যে নয়া চিরঞ্জিতের যাত্রা শুরু দেখেছেন বাঙালি দর্শক, ষড়রিপু পেরিয়ে তাঁরা নিশ্চয় আরও আরও দুরন্ত পারর্ফম্যান্সের অপেক্ষায় থাকবেন। না পাওয়ার কথাও নয়, নয়া জমানার পরিচালকদের হাত ধরে বাংলা ছবিতে এমন ধরনের চরিত্রদের পর্দা কাঁপানোর দিন এসেই গিয়েছে।
দু-একটা গান, ব্যাকগ্রাউন্ড যথাযথ। হালের আরবান বাংলা ছবিতে যেমন হচ্ছে, তেমনই। আইটেম সং-টিকে কেউ অপ্রয়োজনীয় বলতেই পারেন, তবে কাহিনির সঙ্গে সেটাকে খারাপ বোনেননি অয়ন।
সমালোচনা ? না, তেমন কিছু নেই। ইন্দ্রনীলের স্কুলবেলার যে রেফারেন্সটা দেওয়া হয়েছে, সেটা কিছুটা উচ্চকিত লেগেছে। তবু, সেটা তেমন বড় অপরাধ নয়। কারণ, খুনখারাপির সিনেমায় অমন একটা দু’টো অন্য রকম চরিত্র থাকেই। তা-ও অসুবিধে বোধ করলে পরিচালকের কথামতো রিপুর লজিকে ফেলে দেবেন।
ষড়রিপু দেখুন। ছোটদের সঙ্গে নেবেন না। বড়রা মিলেই যান, রকমারি জুটিতে।
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।