গান-বাজনা
গানে ভুবন ভরিয়ে দিল ম্যাক ও সহজিয়া

শম্ভু সেন: চলে যাওয়া বছরের প্রায় শেষের দিক। শীতের আমেজমাখা একটি দিনে কলকাতা সাক্ষী থাকল এক অসাধারণ মেলবন্ধনের – ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রীর সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন। সে দিন ‘কলকাতা সবলা মেলা’র মঞ্চ মাতাল দেব চৌধুরীর সহজিয়া ফোক ব্যান্ড এবং বাংলাদেশের কিংবদন্তি রক আইকন মাকসুদুল হক ওরফে ম্যাক।
এই প্রসঙ্গে পাঠকদের সঙ্গে ম্যাকএর একটু পরিচয় করিয়ে দেওয়া যেতে পারে, যদিও আগের প্রজন্মের এবং এই প্রজন্মের অনেকেই ম্যাকের গানের সঙ্গে পরিচিত।
ম্যাক ওরফে মাকসুদুল হক হলেন বাংলাদেশের ব্যান্ডসংগীতের জনক। সংগীতের অঙ্গনে এই প্রবাদপ্রতিম শিল্পীর পথ চলা চার দশকেরও বেশি সময় ধরে। শুরুর দশকটা ছিল উত্তাল সত্তরের দশক। এক দিকে ১৯৭৫ সালে কলকাতায় সূচনা হল গৌতম চট্টোপাধ্যায়দের ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’ ব্যান্ডসংগীত, অন্য দিকে তার ঠিক এক বছর পর ঢাকায় মাকসুদুলের হাত ধরে তৈরি হল ‘ফিডব্যাক।
সময়টা ছিল সংগীত, সৃজনশীলতা আর প্রতিবাদের কাল, সারা বিশ্ব জুড়েই। ভারত আর বাংলাদেশও তা থেকে পিছিয়ে ছিল না। দুই বাংলাতেই তখন ব্যান্ডসংগীত ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে। গোড়ার দিকে ‘ফিডব্যাক’ ছিল এক দল বুদ্ধিদীপ্ত প্রতিভাধর তরুণের সংগঠন, ম্যাক ছিলেন লিড ভোকালিস্ট। প্রথম দিন থেকেই ‘ফিডব্যাক’-এর প্রবণতা ছিল পপ, রক, জ্যাজ, ব্লুজ আর রেগে পরিবেশন করা। অবশেষে ম্যাক তাঁর নিজস্ব ঘরানার সংগীত সৃষ্টি করতে লাগলেন। বেরোল ‘ফিডব্যাক’-এর প্রথম অ্যালবাম ‘উল্লাস’। ‘উল্লাস’-এর প্রকাশের পর ম্যাকের খ্যাতি অনেক বেড়ে গেল। এর পর ১৯৯০-এ দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘মেলা’। এই অ্যালবামটিকে ম্যাক নিজেই ‘ব্লকব্লাস্টার হিট’ বলে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু বছর ছয়েক পরে ১৯৯৬-তে সামাজিক-রাজনৈতিক কারণে ‘ফিডব্যাক’-এর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ম্যাক তৈরি করেন ‘মাকসুদ ও ঢাকা’ ব্যান্ড।

ম্যাক এখন ‘গ্লোবাল বাউলিয়ানা’ প্রজেক্ট নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সংগীত এবং সংগীতশিল্পীদের নিয়ে কাজ করছেন। এখনও দুই বাংলার রক ও পপস্টাররা ম্যাককে গুরু মানেন। এঁদের মধ্যে আছেন জেমস, রূপম এবং আরও অনেকে। প্রয়াত রকস্টার আইয়ুব বাচ্চু ম্যাকের খুব কাছের মানুষ, ভ্রাতৃসম ছিলেন। তিনিও ম্যাককে গুরু মানতেন।
সে দিন ‘কলকাতা সবলা মেলা’য় ম্যাক পরিবেশন করলেন তাঁর বিখ্যাত সব গান – ‘মৌসুমী’, ‘চিঠি’, ‘এমনি করে সবাই যাবে’, ‘কেন এলে না’ ইত্যাদি। উপস্থিত দর্শকেরা ভেসে গেলেন সেই নব্বই দশকের নস্টালজিয়ায়।
আরও পড়ুন: শ্রোতা-দর্শকদের হৃদকমলেই থাকল দেবের ‘সহজিয়া’ আর সৌমিত্রর ‘ভূমি’
ওই দিন ‘সহজিয়া’ তাদের নিজস্ব ঘরানার বাইরে গিয়ে বাংলাদেশের সেই বিখ্যাত গান ‘সেই তুমি কেন এত অচেনা হলে’ গেয়ে প্রয়াত রকস্টার আয়ুব বাচ্চুকে শ্রদ্ধা জানাল। এ ছাড়াও প্রতিমা বড়ুয়ার সেই বিখ্যাত গোয়ালপাড়ি গান ‘মাহুত বন্ধু রে’ পরিবেশন করল রেগে-জ্যাজ ধারায়। পাশাপাশি রাধারমণ দত্তের ‘ভ্রমর কইও গিয়া’ গানটিকে রক মিউজিকের ধারায় পরিবেশন করে ‘সহজিয়া’ অনুষ্ঠানে ভিন্ন স্বাদের অনুভূতি নিয়ে এল।
সে দিনের অনুষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য দিক ছিল ম্যাক ও দেব চৌধুরীর একযোগে পরিবেশনা। তাঁরা গাইলেন বাংলার বিখ্যাত দু’টি গান – রুদ্র মহম্মদ শহীদুল্লাহর ‘আমার ভিতর বাহিরে’ এবং ম্যাকের ‘মেলায় যাই রে’। সহজিয়ার মূল গায়ক দেব ছিলেন দোতারা এবং অ্যাক্যুয়াস্টিক গিটারে ছিলেন, ওয়ার্ল্ড পারকাশনসে অর্ণব, কি-বোর্ডে দেবর্ষি, ড্রামসে ইন্দ্র, বেস গিটারে স্যাম এবং লিড গিটারে রাজর্ষি। কলকাতার ব্যান্ডসংগীতের নিবিষ্ট শ্রোতারা এই অনন্য সংগীত পরিবেশনা দীর্ঘদিন মনে রাখবেন।
গান-বাজনা
পলাশপ্রিয়ার আরাধনায় বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
ওই অনুষ্ঠান চলে ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি ভার্চুয়াল মাধ্যমে, ফেসবুক পেজে।

খবর অনলাইন ডেস্ক: প্রতি বছরের মতো এ বছরেও পলাশপ্রিয়ার আরাধনায় দু’ দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গন। ওই অনুষ্ঠান চলে ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি ভার্চুয়াল মাধ্যমে, ফেসবুক পেজে।
সরকার অনুমোদিত সাংস্কৃতিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গনের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন দুশোরও বেশি শিল্পী ও সাংস্কৃতিককর্মী। সারা বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠান নানা ধরনের সাংস্কৃতিক, সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকে। উল্লেখ্য, এ বছরই এই প্রতিষ্ঠান পঁচিশ বছরে পদার্পণ করল।
প্রতি বছরই বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বিভিন্ন নামী মঞ্চে সম্পন্ন হয়। কিন্তু গত বছর থেকে করোনা পরিস্থিতি চলতে থাকায় বাধ্য হয়েই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে পঁচিশে বৈশাখ, বাইশে শ্রাবণ, দুর্গোৎসবের অনুষ্ঠান, দীপাবলীর অনুষ্ঠান আয়োজন করতে হয়েছে এবং সমগ্র বিশ্ব থেকেই বিদ্বজ্জনেরা হয় অনুষ্ঠানে যোগ দেন আর না হয় তাঁদের শুভেচ্ছা পাঠান।

বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গনের সরস্বতী পূজোর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শিল্পীরা।
সরস্বতী পুজোয় দু’ দিন ধরে চলা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন দেশ- বিদেশের বহু শিল্পী। দেশ থেকে যাঁরা যোগ দেন তাঁরা হলেন কলকাতা থেকে মধুমিতা বসু, ড. তানিয়া দাস, কাজল সুর, রত্না মিত্র, কাকলি চক্রবর্তী, শুভময় সেন, এষা ব্যানার্জি, মহিষাদল থেকে সহেলী পন্ডা, শিলিগুড়ি থেকে শারদা গুহ, শান্তিনিকেতন থেকে দোলন মোহলি, রাঁচি থেকে সুবীর লাহিড়ী ও রিঙ্কু ব্যানার্জি, জামশেদপুর থেকে বাণীপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, অসম থেকে সুজাতা বানিয়া এবং কেরল থেকে মীরা বিজয়ন।
বিদেশ থেকে যাঁরা যোগ দেন তাঁরা হলেন বাংলাদেশ থেকে বুলবুল মহালনবিশ, তৌকির আহমদ, শাওন পান্থ, সুবর্ণা রহমান, প্রিয়া ভৌমিক ও আল ইমরান, শ্রীলঙ্কা থেকে নিশি, লন্ডন থেকে ফয়সাল আহমদ, ফ্লোরিডা থেকে বিজয়া সেনগুপ্ত, বস্টন থেকে রাহুল রায় ও স্বপ্না রায় এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে বাচিকশিল্পী দেবী সাহা।
এ ছাড়াও বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গন ও ‘আন্তরিক’-এর সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের ছাত্রছাত্রীরাও সরস্বতী পুজোর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন|
অনুষ্ঠান
২৫-এ পা বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গনের, অনুষ্ঠান দেখা যাবে অনলাইনে

স্মিতা দাস
কোভিড পরিস্থিতিতে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে সবাই যখন ঘরবন্দি তখন বিভিন্ন উপলক্ষ্যগুলিতে মন খারাপের বোঝা সরিয়ে মনকে প্রশান্তি দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পথে একের পর এক উৎসব পালন করে চলেছে বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গন। সেখানে যেমন বাদ যায়নি কবি-বন্দনা তেমনই হয়েছে দেবী-আবাহন। তবে অবশ্যই নিয়মবিধির বেড়াজাল না টপকে এই আয়োজন করেছিল বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গন। একই সঙ্গে দেশ ও বিদেশকে মাতিয়ে ছিল তারা তাদের ডিজিট্যাল দুনিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় অনলাইন পার্ফমেন্সের মাধ্যমে। সেই বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গনের এই বছরই ২৫তম বর্ষ পূর্তি।
সেই বর্ষপূর্তিও উদযাপন করবে তারা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে। ফেসবুক পেজে। অনুষ্ঠানের নাম দিয়েছে ‘অবশেষে পঁচিশে’। অনুষ্ঠানটি বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গন ও কলকাতা সংকৃতিক অঙ্গনের যৌথ নিবেদন।
অনুষ্ঠানটি প্রচারিত হবে, ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে। প্রচার শুরু হবে ২২ ডিসেম্বর থেকে। প্রতিদিন দেখা যাবে ভারতীয় সময় সন্ধ্যে ৭টায়।
গান-বাজনা
‘রেওয়াজ’-এর আবাহনে ‘ঋতুরঙ্গ’-এর মাধ্যমে মাতৃবন্দনা
‘ঋতুরঙ্গ’-এর সাজি সাজানো ছিল আগমনী, রবীন্দ্রসংগীত, দ্বিজেন্দ্রগীতি, নজরুলগীতি, হিমাংশু দত্ত এবং সলিল চৌধুরীর গান দিয়ে।

খবরঅনলাইন ডেস্ক: ‘তোমায় করি গো নমস্কার’, এই শিরোনামে সম্প্রতি ‘রেওয়াজ’-এর সদস্যরা পঞ্চমীতে পরিবেশন করলেন ‘ঋতুরঙ্গ’। ‘ঋতুরঙ্গ’-এর সাজি সাজানো ছিল আগমনী, রবীন্দ্রসংগীত, দ্বিজেন্দ্রগীতি, নজরুলগীতি, হিমাংশু দত্ত এবং সলিল চৌধুরীর গান দিয়ে। কবিতা ও কথায় সমগ্র অনুষ্ঠানটি সাজিয়েছেন সঞ্চালক অঞ্জনা রায় ।
চৈতালি দত্ত ও সঞ্চিতা রায়ের দ্বৈত কণ্ঠে ‘মোর সন্ধ্যায় তুমি সুন্দর বেশে এসেছ’ গানটি দিয়ে সূচনা হয় মাতৃবন্দনা। ঋতুর শুরু গ্রীষ্মকে আহ্বান করা হয় ‘প্রখর দারুণ অতি দীর্ঘ দগ্ধ দিন’ গানটি দিয়ে। নিবেদন করেন শোভনা মুখোপাধ্যায়। শ্রাবণী বন্দ্যোপাধ্যায় ও শম্পা ভট্টাচার্য ডাক দেন বর্ষাকে, ‘নাচ ময়ূরী নাচ রে’ গানটি দিয়ে। দুর্গার অকালবোধন শরৎকালে হলেও এ বার তা হেমন্তে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তাই শরতের গানে সুর তোলেন চৈতালী দত্ত ও জয়িতা নন্দী মজুমদার – ‘আমার রাত পোহাল শারদপ্রাতে’। এর পরে হেমন্তের গান আসে ‘হিমের রাতে ওই গগনে’, গানটি পরিবেশন করেন ছন্দা মুখোপাধ্যায় ও আলপনা মুখোপাধ্যায়। শীত ঋতু আসে হিমাংশুগীতি দিয়ে। ‘ঝরানো পাতার পথে’ গানটি গান শ্রীময়ী ভৌমিক ও সুপর্ণা মুখার্জি। বসন্তের গানটিতে আসে দ্বিজেন্দ্রকথা ও সুর। ‘আয় রে বসন্ত তোর ও কিরণ-মাখা পাখা তুলে’ – গানটি পরিবেশন করেন সঞ্চালক অঞ্জনা রায় ও সংগীতা সাহা।
দুটি আগমনী গান অনুষ্ঠানের একবারে শেষ পর্যায়ে আসে। ‘রেওয়াজ’-এর শিক্ষিকা নমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবেশন করেন নজরুলগীতি ‘এবার নবীন মন্ত্রে হবে জননী তোর উদ্বোধন’ ও শিশুশিল্পী অঞ্জিকা সাহা গায় ‘ও আয়রে ছুটে আয় পুজোর গন্ধ এসেছে’।
নানা রঙে-বর্ণে-গন্ধে-রূপে অনুষ্ঠানটি সাজিয়েছেন ও পরিচালনা করেছেন বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী ও শিক্ষিকা নমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সমগ্র সংগীত পরিবেশনা ছিল সাবলীল ও সুমিষ্ট। নানা কবিতার কোলাজে ভাষ্যকার পরিবেশন করেন প্রতিটি গানের পূর্ব মূহূর্ত। গুগল মিটে পরিবেশিত হল অনুষ্ঠানটি।
খবরঅনলাইনে আরও পড়ুন
‘বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গন’-এর নিবেদন ‘শারদ অর্ঘ্য – দুর্গা দুর্গতিনাশিনী, পঞ্চমী থেকে দেখা যাবে অনলাইনে
-
বিনোদন3 days ago
বিজেপিতে যোগ দিলেন অভিনেত্রী শ্রাবন্তী, ভোটে কি দাঁড়াবেন?
-
শিক্ষা ও কেরিয়ার3 days ago
৮ লক্ষ যুবক-যুবতীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজের সুযোগ করে দিচ্ছে কেন্দ্রের এই প্রকল্প, জানুন বিস্তারিত
-
দেশ3 days ago
স্বস্তি দিয়ে দেশে নতুন সংক্রমণ নামল ১৫ হাজারের ঘরে, তবে সক্রিয় রোগীর সংখ্যাও আরও বৃদ্ধি
-
রাজ্য2 days ago
৯২ আসনে লড়বে কংগ্রেস, জানালেন অধীর, আব্বাসকে নিয়ে জট অব্যাহত