ইন্দ্রাণী সেন
বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস ব্লকের আকুই-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মান্দড়া মৌজার কয়েকশো বছরের প্রাচীন কালী ‘মাঠের কালী’ নামে এলাকায় সমধিক পরিচিত।
এলাকায় প্রচলিত লোককথা হল, কয়েকশো বছর পূর্বে এই এলাকা ঘন জঙ্গলে ভর্তি ছিল। এখনকার মতো তেমন জনবসতি গড়ে ওঠেনি। চোর-ডাকাতদের মুক্তাঞ্চল ছিল বলা যায়। তখন কোনো এক গভীর রাতে এক ডাকাতদল গ্রামের আলপথ দিয়ে ডাকাতির উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল। হঠাৎ ডাকাতসর্দারের নজরে এল লাল শাড়ি পরা একটি বাচ্চা মেয়ে তাঁদের পথের উপর দাড়িয়ে কাঁদছে। এত রাতে ওই জায়গায় দাঁড়িয়ে কান্না কেন, তা ওই মেয়েটির কাছে জানতে চাইলেন ডাকাতসর্দার। বার বার জানতে চেয়েও কোনো উত্তর না পেয়ে ডাকাতদল কালবিলম্ব না করে ডাকাতির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেল।
ওই পথ দিয়ে ফেরার সময় ঠিক ওই জায়গাতেই ডাকাতদলটি মায়ের দু’টি পদচিহ্ন দেখতে পেল। আর ডাকাতসর্দার তখনই সিদ্ধান্ত নিলেন, ওই জায়গাতেই কালীর আরাধনা করা হবে। কথিত আছে, তৎকালীন সময়ে ওই স্থানে নরবলি দেওয়া হত।
এখানে ‘মাঠ কালী’র নিত্যপূজা হয় আর কার্তিক মাসে কালীপূজার দিন বিশেষ পূজা হয়। এখানে মূর্তিপূজা হয় না। নরমুণ্ডীর আসনকেই দেবী জ্ঞানে পূজা করার রীতিই এখানে।
মান্দড়ার ধাড়া পরিবারের লোকজন পূজার দায়িত্বে থাকলেও পূজাপাঠ করেন স্থানীয় বটব্যাল বংশের পুরোহিতরা। বর্তমানে কালীপূজার দিন শতাধিক ছাগ বলি হয় এখানে। এ ছাড়াও আখ, কুমড়ো ও লেবু বলিও হয় বলে জানালেন মান্দড়া গ্রামেরই বাসিন্দা তুহিন নন্দী। তিনি আরও জানালেন, পূজা উপলক্ষ্যে প্রচুর ভক্ত সমাগম ঘটে এই সময়।
এই মেঠো কালীর আরও একটি অন্যতম বৈশিষ্ঠ্য হল দেবীর পূজাস্থানের ছবি তোলা নিষিদ্ধ। বর্তমানের উন্নত প্রযুক্তির যুগে ইচ্ছে থাকলেও অজস্র ভক্তকে ছবি তোলা থেকে বিরত থাকতে হয়।
আরও পড়তে পারেন
সাধককে দেবীই স্বপ্নাদেশ দিয়ে ডেকে এনেছিলেন, প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আলমবাজার ঘাটের এই দক্ষিণাকালী মন্দির
কালীপুজোয় কখন, কী বাজি পোড়ানো যাবে, বিজ্ঞপ্তি জারি রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের
সর্দি-কাশি-অ্যালার্জির ধাত থাকলে বাজি ফাটানোর সময় কী সাবধানতা অবলম্বন করবেন
কালীপুজোয় বাজি ফাটানো বন্ধে মামলা কলকাতা হাইকোর্টে, শুনানি শুক্রবার