‘শুভ মহালয়া’ কি বলা যায়? জানুন বিস্তারিত

‘শুভ মহালয়া’ কথাটায় অনেকেই আপত্তি তোলেন। কারণ মহালয়া তিথির সঙ্গে জড়িয়ে আছে পিতৃপুরুষের উদ্দেশে তর্পণের বিষয়টি। অনেক পণ্ডিতের মতে, তর্পণ এবং পার্বণ শ্রাদ্ধের প্রশস্ত দিন হিসাবে মহালয়া গণ্য হয়।

0

প্রায় এসে গেল মহালয়া। সুতরাং শারদীয় দুর্গাপুজোর ঢাকেও কাঠি পড়তে আর বিশেষ দেরি নেই।  মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে চণ্ডীপাঠ ও মহিষাসুরমর্দিনীর সুর ভেসে আসা মানেই দুর্গাপুজো শুরু। তাই আমাদের অনেকের কাছেই মহালয়া আর দুর্গাপুজোকে একই উৎসবের অঙ্গ বলে মনে করা হয়। আর যে হেতু উৎসবের অঙ্গ তাই খুব সহজেই মহালয়ার সঙ্গে ‘শুভ’ জুড়ে দিতে দু’ বার ভাবতে হয় না। মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপ ভরে যায় ‘শুভ মহালয়া তিথিতে শুভ কামনা’য়।

কিন্তু ‘শুভ মহালয়া’ কথাটায় অনেকেই আপত্তি তোলেন। কারণ মহালয়া তিথির সঙ্গে জড়িয়ে আছে পিতৃপুরুষের উদ্দেশে তর্পণের বিষয়টি। অনেক পণ্ডিতের মতে, তর্পণ এবং পার্বণ শ্রাদ্ধের প্রশস্ত দিন হিসাবে মহালয়া গণ্য হয়। মহালয়া তাই পারলৌকিক ক্রিয়াকর্মের তিথি। তাই এই তিথিকে ‘শুভ’ সম্বোধন না করাই উচিত।

অনেকে আবার ‘মহালয়া’ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত উৎস ধরে এর শুভাশুভ বিচার করেন। মহালয়া শব্দটি এসেছে ‘মহৎ আলয়’ থেকে। হিন্দু ধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী, পিতৃপুরুষেরা এই সময়ে পরলোক থেকে ইহলোকে আসেন জল ও খাদ্যলাভের আশায়। প্রয়াত পিতৃপুরুষদের জল-খাদ্য প্রদান করে তাঁদের ‘তৃপ্ত’ করা হয় বলেই মহালয়া একটি পুণ্য তিথি। আর পুণ্য তিথি বলেই মহালয়াকে ‘শুভ’ বলা যায়।

এই প্রসঙ্গেই চলে আসে পণ্ডিত সতীনাথ পঞ্চতীর্থের কথা। তিনি বলেছেন, “মহালয়ায় যে তর্পণ করা হয়, তা শুধুই পিতৃপুরুষের উদ্দেশেই সীমাবদ্ধ নয়। দেবতর্পণ, ঋষিতর্পণ, দিব্য-পিতৃতর্পণ করতে হয়। সঙ্গে থাকে রামতর্পণ ও লক্ষ্মণতর্পণ। সেখানে ত্রিভুবনে সমস্ত প্রয়াতকে জলদানের মাধ্যমে তৃপ্ত করার কথা বলা আছে। এমনকি তাঁদের উদ্দেশেও তর্পণ করা হয়, জন্ম-জন্মান্তরে যাঁদের আত্মীয়-বন্ধু কেউ কোথাও নেই। এই ভাবে যদি বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে আত্মীয়-অনাত্মীয়, পরিচিত-অপরিচিত সকল প্রয়াতকে জলদান করে তাঁদের আত্মার তৃপ্তি সাধন করা হয়, তা হলে সেই দিনকে অশুভ বলে ভাবা হবে কেন?”

dailyhunt

খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল

বিজ্ঞাপন