চারপাশে শুধু যুদ্ধের আগুন, সংসারে ভাঙন, দেশ ভাঙার, সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার খবরে ভারাক্রান্ত আমাদের মন। চরম মানসিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে আমাদের প্রত্যেকেরই। এই পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন শিল্পী অনির্বাণ দাস। তাঁর প্রশ্ন কে জোড়া লাগাবে ভাঙা সংসার, ভাঙা দেশ, ভাঙা সম্প্রীতি, ভাঙা মনকে?
এ বছর বাঘাযতীন সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির পুজোর সামগ্রিক থিম রূপায়ণের দায়িত্বে রয়েছেন অনির্বাণ। ভালোবাসার জাদুকে ঘিরেই এ বছর আবর্তিত বাঘাযতীন সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির পুজো। এবার তাদের বিশেষ ভাবনা – ‘ভালোবাসা আলাদিন…।’
থিম প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে অনির্বাণ বলেন, যুগে যুগে যুদ্ধবাজদের দাপটে বিধ্বস্ত হয়েছে বিশ্ব। মুছে গেছে হাজার হাজার জনপদ। রাজনীতির কারবারিদের কলমের একটা আঁচড়েই একাধিক খণ্ডে খণ্ডিত হয়েছে ভূখণ্ড। দেশের চেয়েও বড়ো হয়ে ওঠে বিদ্বেষের আগুন। আমেরিকার ফেলা পারমাণবিক বোমার আঘাতে হিরোশিমা পরিণত হয় মৃত্যুনগরীতে। র্যাডক্লিফ লাইন ভাগ করে দেয় সুজলা সুফলা বঙ্গভূমি। ভিটেমাটি ছেড়ে প্রাণ বাঁচাতে লাখ লাখ মানুষকে বাধ্য হয়ে পাড়ি দিতে হয় ভিন্ন ভূখণ্ডে। সামান্য ফুলকি অচিরেই আগুন ধরায় ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে।
অনির্বাণের কথায়, “জমতে থাকে ক্ষত। কিন্তু এত দুঃখের মাঝেও কোন শক্তিতে ভর করে বেঁচে থাকে মানুষ? কোন বিশ্বাসে একে অপরের দিকে বাড়িয়ে দেয় হাত? কীভাবে, কোন জাদুবলে আবার গড়ে ওঠে হিরোশিমা, নাগাসাকি? আমাদের কাছে উত্তর হয়তো একটাই – ভালোবাসা। আলাদিনের মতোই ভালোবাসাই পারে সার্জারি-ওষুধ ছাড়াই ভাঙা সম্পর্ক, ভাঙা মনকে জোড়া লাগাতে।
ভালোবাসা যেন আলাদিনের প্রদীপ। সেই ভালোবাসাকেই এবার থিম করেছে বাঘা যতীন সর্বজনীন। থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিমা।
কোথায় এই মণ্ডপ
দক্ষিণ কলকাতায় যাদবপুর থেকে রাজা সুবোধ মল্লিক রোড ধরে গড়িয়ার দিকে গেলে বাঘা যতীন মোড়ের কাছে এই পুজোমণ্ডপ।