খবর অনলাইন ডেস্ক: আর একটা দিন। এসে গেল মহালয়া। পিতৃপক্ষের শেষ দিন। ভাদ্রমাসের কৃষ্ণ প্রতিপদ তিথিতে শুরু হয়ে অমাবস্যা পর্যন্ত এক পক্ষকাল সময়কে বলা হয় পিতৃপক্ষ। পরের দিন শুক্লা প্রতিপদে সূচনা হয় দেবীপক্ষের। মা দুর্গাকে আবাহন করার তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। কোজাগরী পূর্ণিমা পর্যন্ত চলে দেবী পক্ষ।
রেডিওতে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’র সুরে মহালয়ার ভোরে ঘুম ভাঙে বাঙালির। বছর ঘুরে আবার কানে আসে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের স্তোত্রপাঠ। তার পরেই সেদিন সকালের নিত্যকর্ম – পিতৃপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ।
মহালয়ার ভোরে ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে প্রথম কর্তব্য পিতৃপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ। শাস্ত্রমতে বিশ্বাস করা হয়, সূর্য কন্যারাশিতে প্রবেশ করলে পিতৃপক্ষের সূচনা হয়। পুরাণমতে ব্রহ্মার নির্দেশে পিতৃপুরুষরা এই ১৫ দিন মনুষ্যলোকের কাছাকাছি চলে আসেন। তাই এই সময় তাঁদের উদ্দেশে কিছু অর্পণ করা হলে তা সহজেই তাদের কাছে পৌঁছে যায়। বিশ্বাস করা হয়, পূর্বপুরুষেরা পিতৃলোক ছেড়ে উত্তরপুরুষদের কাছে আসেন, তখনই তাঁদের উদ্দেশে জল নিবেদন করার রীতি পালিত হয়। সোজা কথায় এই হল তর্পণ।
তর্পণ শব্দটি এসেছে ত্রুপ থেকে। এর মানে সন্তুষ্ট করা। এমন বিশেষ দিনে, দেবতা, ঋষি ও পূর্বপুরুষের আত্মার উদ্দেশে জল অর্পণ করা হয়। এই জল নিবেদন করে দেবতাদের সন্তুষ্ট করার পদ্ধতিতে তর্পণ বলা হয়। তর্পণের সময় জল, তিল, চন্দন, তুলসীপাতা ও ত্রিপত্রী ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের তর্পণের মধ্যে রয়েছে ‘তিল-তর্পণ’ অর্থাৎ জল ও তিল একসঙ্গে নিয়ে পূর্বপুরুষের আত্মার উদ্দেশে নিবেদন করা।
গোটা পক্ষকাল ধরে পিতৃপুরুষদের স্মরণ ও মননের মাধ্যমে তর্পণ করা হয়। আর এরই চূড়ান্ত প্রকাশের সময় বা মহালগ্ন হল মহালয়া, পিতৃপক্ষের শেষ দিন।