ঘড়ির প্রতিটি সেকেন্ড, মিনিট আর ঘণ্টার কাঁটা টিকটিক করে ঘুরে চলেছে। সমগ্র বিশ্বচরাচর সময়ের হাতে বন্দি। সেকেন্ড, মিনিট ও ঘণ্টার কাঁটার মাপকাঠিই প্রতিক্ষণে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে চলেছে। এই প্রবল প্রতাপশালী সময়কেই ধরে বেঁধে থমকে দাঁড় করিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা নিয়েছেন থিমশিল্পী বিভাস মুখোপাধ্যায়। দক্ষিণ কলকাতার খিদিরপুর ৭৫ পল্লীর থিম এবার ‘সময় যখন থমকে দাঁড়ায়’।
শিল্পী বিভাস মুখোপাধ্যায় বলেন, সময়ের পরিবর্তনের হাত ধরে বিশ্বে প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিটি স্থানে বদল ঘটছে। সময়কে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা আমাদের নেই। সময়ই উল্টে আমাদের পরিচালিত করে। প্রাচীন সময় থেকেই সময়কে সঙ্গে নিয়ে সঠিকভাবে চলার জন্যই মানুষ ঘড়ি আবিষ্কার করে। একসময়ে সূর্যঘড়ি, বাতিঘড়ি, বালুঘড়ির সঠিক সময় মানুষকে সঠিকভাবে পথ দেখাত। আনুমানিক ৫ হাজার বছর আগে প্রাচীন মিশরে ঘড়ি আবিষ্কার হয় বলে মনে করা হয়। আজ ঘড়ি ক্রমশ উন্নত হয়েছে। অতীতে ঘড়িকে গয়না হিসাবে পরার চল ছিল। ঘড়ি শব্দটি প্রাচীন লাতিন শব্দ থেকে এসেছে।”
মণ্ডপসজ্জার উপকরণ।
শিল্পীর কথায়, “জন্ম থেকে মৃত্যু মানুষ সময়ের দাসত্বে বন্দি। সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে মূল চালিকাশক্তি হল সময়ই। বিভিন্ন রকমের, নামের ও আকারের ঘড়ি আমরা পরি। আজ আমরা নিজেরাই এক-একজন সময় পরিমাপক যন্ত্র ঘড়িতে পরিণত হয়েছি। জন্ম থেকে মৃত্যু আমরাও ঘড়ির মতো ঘুরে চলেছি। সময় কখনও থেমে থাকে না। সে সদা চলমান। তেমনই আমাদের জীবনও ঘড়ির মতো সদা চলমান। ঘড়ির মতোই আমরা আমাদের কর্মের মাধ্যমে গৌরবময় ইতিহাস গড়ি।”
শিল্পী জানালেন, “খিদিরপুর ৭৫ পল্লীর এবারের থিম ‘সময় যখন থমকে দাঁড়ায়’। সমগ্র পরিকল্পনার দায়িত্বে রয়েছি আমি। প্রতিমাশিল্পী পরিমল পাল। আবহ করছেন রাজা সেনগুপ্ত। আলোর দায়িত্বে রয়েছেন দীনেশ পোদ্দার।”
এখানে মণ্ডপসজ্জায় বাঁশ, টিন ও লোহা ব্যবহার করা হয়েছে।
কোথায় এই মণ্ডপ
এসপ্ল্যানেড থেকে খিদিরপুর মোড়ে আসুন। তারপর ফ্যান্সি মার্কেট ছাড়িয়ে ভূকৈলাশ রোড এবং রমানাথ পাল রোডের মোড়ে আসুন। সেখান থেকে ডানদিকে কিছুটা গেলেই খিদিরপুর ৭৫ পল্লীর মণ্ডপ।
আরও পড়ুন
দুর্গোৎসব ২০২৪: ৭৫ বছরে ‘উমাকে পাড়ে’ নিয়ে আসার বার্তা দিচ্ছে ঢাকুরিয়া শহিদনগর সার্বজনীন
দুর্গোৎসব ২০২৪: ৮২ বছরে হাজরা পার্ক দুর্গোৎসব কমিটির থিম ‘শুদ্ধি’, দলিতদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ডাক
দুর্গোৎসব ২০২৪: সাতমহলা জমিদারবাড়ির অন্তঃপুরের কাহিনি শোনাতে প্রস্তুত সিংহী পার্ক সর্বজনীন