আশ্বিনের শারদপ্রাতে আলোকমঞ্জির বেজে উঠেছে। আর হাতেগোনা মাত্র কয়েকটা ঘণ্টা। আসছে মহালয়া। পিতৃপক্ষের সমাপ্তির পর সূচনা হবে দেবীপক্ষের। এবারের পুজোয় চিত্তাকর্ষক মনবাহারি থিমে মন জয় করতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন নিউটাউন সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির কর্মকর্তারা।
মহানগরীর পরিচিত দুর্গোৎসবগুলির বৃত্তের খানিক বাইরে নিউটাউন সর্বজনীনের অবস্থান। ফলে পুজোভাবনার দিক থেকে তারা যে ব্যতিক্রম হবে এ তো বলাই বাহুল্য। নিউটাউন সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি এবছর বর্তমান সময়ের মধ্যেই তুলে আনতে চেয়েছে প্রাচীন ভারতের একখণ্ড সময়কে। বিক্রমাদিত্য, চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য, সমুদ্রগুপ্তের সময়কে। কোন ভারতবর্ষকে তুলে আনতে চেয়েছে তারা? উত্তর হল, শূদ্রকের ভারতবর্ষ, কালিদাসের ভারতবর্ষকে। তাই খানিকটা কাব্যিক ঢঙে তাদের বার্তা – “হায় রে কবে কেটে গেছে, কালিদাসের কাল!/ পণ্ডিতেরা বিবাদ করে লয়ে তারিখ সাল।”
শিল্পী অনির্বাণ দাস রয়েছেন সামগ্রিক থিমের রূপায়ণের দায়িত্বে। অনির্বাণ জানান, “রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘মেঘদূত’ প্রবন্ধে লিখছেন, ‘… প্রাচীন ভারতখণ্ডটুকুর নদী-গিরি-নগরীর নামগুলিই বা কী সুন্দর! অবন্তী বিদিশা উজ্জয়িনী, বিন্ধ্য কৈলাশ দেবগিরি, রেবা সিপ্রা বেত্রবতী…প্রাচীন ভারত। সে যেন এক রহস্যাবৃত মায়াজগৎ। সেখানে বিরহকাতর যক্ষ রামগিরি পর্বত থেকে মেঘকে প্রেরণ করেন তাঁর প্রিয়ার কাছে। অন্যদিকে, প্রেমিক চারুদত্ত জড়িয়ে যান ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের জালে। প্রাচীন ভারতে সময় যেন বয়ে চলে মন্দাক্রান্তা ছন্দে। হাত-ধরাধরি করে পথ হাঁটে কল্পনা ও বাস্তব’।”
অনির্বাণের কথায়, “সেই প্রাসাদ, রঙ্গালয়, প্রাকারের আলো-আঁধারি মোড়া জগৎ অচিরেই হারিয়ে গিয়েছে কালের নিয়মে। কিন্তু এই ইট-কাঠ-পাথরের প্রাণহীন মহানগরীর মধ্যে যদি তেমনই স্বপ্ননগরী তৈরি হয়? যেখানে একটুকরো প্রাচীন ভারতের রহস্য গাঁথা থাকবে? কেমন হবে তা, এই প্রশ্নই আমরা রাখছি মণ্ডপে আগত দর্শনার্থীদের কাছে।”
কোথায় এই মণ্ডপ
সল্ট লেকের করুণাময়ী থেকে বিশ্ব বাংলা সরণির মোড়ে আসুন। তারপর সোজা ওই সড়ক ধরে পৌঁছে যান অ্যাকশন এরিয়া ১বি-তে বিজি ব্লকে। পৌঁছে যাবেন নিউটাউন সর্বজনীনের মণ্ডপে। সায়েন্স সিটির দিক থেকে ইএম বাইপাস ধরে গেলে চিংড়িহাটা মোড়ের আগেই ফ্লাইওভার ধরে নিন। পড়ুন বিশ্ব বাংলা সরণিতে। এবার সোজা চলে যান অ্যাকশন এরিয়া ১বি-তে। ইএম বাইপাস ধরে উল্টোডাঙার দিক থেকে এলে চিংড়িহাটা মোড়ে এসে বাঁদিকে বিশ্ব বাংলা সরণি ধরে নিন। ব্লকে। পৌঁছে যান নিউটাউন সর্বজনীনের মণ্ডপে।