বেসরকারি স্কুলের সংখ্যা বাড়ছে। সন্তানকে বেসরকারি স্কুলে পড়ানোর আগ্রহ ঊর্ধ্বমুখী। কারণ আছে অনেক। তবে পর্যাপ্ত চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে বেসরকারি স্কুলগুলির ব্যয়ের পরিমাণও বাড়ছে। সবমিলিয়ে একটি শিশুকে লালন-পালন করা সময়ের তুলনায় আরও দ্রুত ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে।
এমনিতে মুদ্রাস্ফীতি অস্বস্তিকর ভাবে উচ্চ স্তরে পৌঁছেছে। তাই বলে তার সঙ্গে স্কুল-কলেজের শিক্ষার খরচের উপর তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা ততটা নেই। বিশ্লেষকদের মতে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মূল্য পরিবর্তন পরিমাপ করা হয় যে ক্ষেত্রগুলিতে, মূলত সেখানেই মুদ্রাস্ফীতির জোরালো প্রভাব পড়তে পারে।
প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা খরচ!
ইকনোমিক টাইমস-এর একটি অনলাইন গবেষণা অনুযায়ী, দেশের একটি বেসরকারি স্কুলে তিন থেকে ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত একটি শিশুকে পড়ানোর খরচের পরিমাণ বেশ আশ্চর্যজনক। এই বয়সের মধ্যে একটি শিশুর পড়াশোনার জন্য প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা খরচ হয় বলে দাবি করেছে গবেষণাটি।
এডুফান্ড-এর মতামত উল্লেখ করে ইকোনমিক টাইমস-এক একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে, ভারতে শিক্ষার ব্যয় প্রায় ১০-১২ শতাংশ বেড়েছে। শুধুমাত্র টিউশন ফি-তেই পর্যায়ক্রমিক বৃদ্ধি ঘটেছে তা নয়। পরিবহণ খরচ এবং পরীক্ষার খরচ অভিভাবকদের সামগ্রিক ব্যয়কে প্রভাবিত করেছে।
ভর্তি এবং বার্ষিক টিউশন ফি
বছরভরের পড়াশোনার খরচের বড়ো অংশ জুড়ে থাকে ভর্তি ফি। যা স্কুলে ভর্তি করার সঙ্গে যুক্ত এককালীন খরচ। বড়ো শহরের বেশিরভাগ স্কুলের ভর্তি ফি ২৫-৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। যদি এক সঙ্গে দুই সন্তান একই স্কুলে ভর্তি হয়, সে ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দিয়ে থাকে কিছু প্রতিষ্ঠান। খুব বেশি না হলেও ১০-২০ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় মিলতে পারে।
অন্য দিকে, বড়ো শহরের বেশির ভাগ কিন্ডারগার্টেন এবং নার্সারি প্রিস্কুলে বার্ষিক টিউশন ফি ৬০ হাজার থেকে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এর পর, প্রাইমারি স্কুলে টিউশন খরচ ১.২৫ লক্ষ থেকে ১.৭৫ লক্ষ পর্যন্ত। নিজের সন্তানের প্রাথমিক শিক্ষার জন্য সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা বাজেট করা উচিত অভিভাবকের। তবে এটা দেশের কোনো বড়ো শহরের নামী বেসরকারি স্কুলের হিসেব অনুযায়ী।
এর পর দশম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের জন্য গড় বার্ষিক টিউশন ১.৬ লক্ষ থেকে ১.৮ লক্ষের মধ্যে। মোট খরচ প্রায় সাড়ে ৯ লক্ষ টাকা। একাদশ-দ্বাদশে এই খরচ এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে যায়। রিপোর্ট অনুযায়ী, কোনো কোনো অভিভাবক দাবি করেন, এই সময়ে প্রতি মাসে ৪-৭ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করতে হয় সন্তানের পড়াশোনার জন্য। সামগ্রিক ভাবে প্রায় ৯ লক্ষ টাকা বাজেট প্রস্তুত করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
পরিবহণ, কোচিং-সহ বিবিধ
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান পরিবহণের জন্য প্রতি মাসে অতিরিক্ত দেড়-দু’হাজার টাকা চার্জ করে। অভিভাবকরা সাধারণত বার্ষিক পরিবহণে ২৫ হাজার খরচ করেন, কিন্তু জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর পরিবর্তন হতে পারে। এরই সঙ্গে রয়েছে কোচিং-সহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ।
অভিজ্ঞতার নিরিখে বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত অভিভাবক এখন সন্তানের কলেজ শিক্ষার জন্য তাড়াতাড়ি সঞ্চয় শুরু করে দেন। কারণ, এটা স্কুলের চেয়ে অনেক বেশি ব্যয়বহুল।
আরও পড়তে পারেন: ভারত-চিন সম্পর্কে এই বিষয়টি আর গোপন নয়, জানালেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।