সরকারি চাকরি : প্রথমেই বেছে নাও কোন ধরনের পরীক্ষা দেবে

0

অভিজিৎ ব্যানার্জি
চাকরির পরীক্ষার্থীকে প্রথমেই ঠিক করতে হবে কী ধরনের পরীক্ষা তিনি দিতে চান। সেই অনুযায়ী তাঁকে পরীক্ষা বেছে নিতে হবে। যেমন, কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের চাকরির ক্ষেত্রে পরীক্ষার ধরন ও মান আলাদা রকমের হয়। প্রত্যেক চাকরির পরীক্ষায় সাধারণ ভাবে এই বিষয়গুলি থাকে — অঙ্ক, ইংরাজি, সাধারণ জ্ঞান বা জিকে (General Knowledge), জিআই (General Intelligence)। সাধারণত প্রিলিমিনারি পরীক্ষাগুলিতে প্রশ্ন অবজেকটিভ ধরনের হয়। সেখানে উত্তরপত্রে কেবল ব্লক করেই উত্তর দিতে হয়। তার পরের পর্বে থাকে লিখিত পরীক্ষা। কোনও কোনও ক্ষেত্রে কেবল প্রথম পর্বের পরীক্ষার পরই ইন্টারভিউ থাকে। পরীক্ষার নিয়মকানুন যে কোনও সময় পরিবর্তন হতে পারে। সেই কারণে অবশ্যই বিজ্ঞাপনটি পরীক্ষার্থীকে ভালো করে পড়তে হবে।
প্রশ্নের ধরন ও মানের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষার্থী কোন পদের জন্য পরীক্ষা দেবেন, তার ওপর প্রশ্নের ধরন ও মান নির্ভর করে। যেমন,অফিসার, ক্লার্ক, গ্রুপ ডি-র ক্ষেত্রে পরীক্ষার ধরন ও মান আলাদা হয়। প্রশ্নের ধরন বোঝার জন্য একটি উদাহরণ দিই। ব্যাঙ্কের পরীক্ষার জিআই আর WBCS পরীক্ষার জিআই-এর মান এক রকম নয়। আবার কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরির Staff selection commission ও রাজ্য সরকারের Staff selection commission-এর অঙ্ক আলাদা । কেন্দ্রীয় সরকারের পরীক্ষায় অঙ্কের ক্ষেত্রে দেখা যায় কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়গুলির মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের যে ধরনের মান আছে, তা অনুসরণ করা হয়।
রাজ্য স্তরের পরীক্ষাগুলিতে আঞ্চলিক ভাষা থেকে প্রশ্ন থাকে। আমাদের রাজ্যের ক্ষেত্রে বাংলা ব্যাকরণ থেকে প্রশ্ন থাকে। তবে বর্তমানে রাজ্যের Staff selection commission-এর প্রশ্ন ইংরাজিতে হয়। বাংলায় অনুবাদ থাকে না বা বলা যায়, বাংলায় প্রশ্ন হয় না। কিন্তু পঞ্চায়েত পর্যায়ের কর্মী নির্বাচনে এবং বিভিন্ন গ্রুপ-ডি-র পরীক্ষায় বাংলাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
চাকরির পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার পরে প্রশ্নপত্র দেখে অনেকে ‘খুব সাধারণ ও সহজ মানের প্রশ্ন’ হয়েছে বলে পরীক্ষার্থী কেন উত্তর করতে পারেনি, এমন প্রশ্ন তোলেন। এখানে কিছু কথা বলার আছে। সব পরীক্ষার মতোই এই পরীক্ষাগুলিও একটি নির্দিষ্ট সময়ের হয় এবং সেই সময়টা পরীক্ষার্থীকে সঠিক ভাবে ব্যবহার করার দক্ষতা অর্জন করতে হয়। যেমন,
১। দ্রুত প্রশ্নের অর্থ বুঝতে হয়। অনেক সময় জটিল বাক্যে এমন ভাবে প্রশ্ন করা হয় যাতে প্রশ্নটি বুঝতে সময় লাগে।
২। যে চারটি বা পাঁচটি উত্তরের option থাকে, সেখান থেকে উত্তর বাছতে অসুবিধা হয় বা গুলিয়ে যেতে পারে। কারণ উত্তরের optionগুলো খুব কাছাকাছি থাকে।
৩। পরীক্ষায় ভুল উত্তর দিলে Negative mark থাকায়, পরীক্ষার্থীর মধ্যে ভয় কাজ করে।
৪। অনেক প্রশ্নপত্রে বিষয়গুলিকে গুলিয়ে দেওয়া হয়। যেমন, প্রথম দুটো জিকে, তার পর অঙ্ক, এর পর ইংরাজি বা বাংলা, তার পর জিয়াই। এর ফলে পরীক্ষার্থীর মাথায় আলাদা চাপ পড়ে। হয় তাঁকে বাছতে হবে, নয় তো একটার পর একটা নতুন নতুন বিষয়ের উত্তর করতে হবে।
মূলত মানসিক চাপই ভালো অ্যাকাডেমিক রেজাল্টের পরীক্ষার্থীকেও হারিয়ে দিতে পারে। তাই লক্ষ করা যায়, পরীক্ষার্থী মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক বা সমতুল্য পরীক্ষা এবং গ্র্যাজুয়েশনে ভালো ফল করলেও সরকারি চাকরি পাচ্ছে না।
আসলে চাকরির পরীক্ষার জন্য আলাদা ভাবে তৈরি হতে হবে।
কোনও প্রশ্ন থাকলে comment কর, বা মেল কর। আমি সব সময় পাশে রয়েছি ।

dailyhunt

খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল

বিজ্ঞাপন