অভিজিৎ ব্যানার্জি
চাকরির পরীক্ষার্থী কত শতাংশ নম্বর পেলে তাঁকে নেওয়া হবে, এ বিষয়টি কী ভাবে নির্ণীত হবে ? এই প্রশ্নটি পরীক্ষার্থীর মনের ভিতর থাকে। অনেক পরীক্ষায় আগেই নির্দিষ্ট করা থাকে শতকরা একটি নির্দিষ্ট নম্বর পেলে পরীক্ষার্থী প্রিলিমিনারি অতিক্রম করে মেন পরীক্ষায় বসতে পারবেন। আবার অনেক পরীক্ষার বিজ্ঞাপনে উল্লেখ থাকে না। যেগুলোতে উল্লেখ থাকে না, সেগুলির ক্ষেত্রে সব চেয়ে বেশি নম্বর পাওয়া প্রার্থীদের ওপর থেকে নেওয়া হয়। তার পর ইন্টারভিউতে ডাকা হয়।
অনেক পরীক্ষার্থী শতকরা ৭০-৭৫ শতাংশ উত্তর করে আশায় থেকেও উত্তীর্ণ হন না। পশ্চিমবঙ্গ স্টাফ সিলেকশন কমিশন পরীক্ষার্থীর নিজেদের নম্বর জানার ব্যবস্থা করেছে। এমনকি পরীক্ষার কিছু দিন পর সঠিক উত্তরের তালিকা ওয়েবসাইটে দিয়ে দিচ্ছে। পরীক্ষার্থী তাঁর করা উত্তর মিলিয়ে দেখতে পারেন।
পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র, বিশেষত অঙ্ক প্রশ্নে ভুল থাকলে পরীক্ষার্থীর অনেকটা সময় নষ্ট হয়। কারণ, জানা অঙ্ক নির্দিষ্ট নিয়মে, ঠিক ভাবে করে যখন উত্তর মেলে না তখন পুনরাবৃত্তি করতে গিয়ে মাথায় চাপও বাড়ে। ফুড সাপ্লাই-এর পরীক্ষার ক্ষেত্রেও এমনটা হয়েছে। আবার জিকে-র প্রশ্নে ভুল থাকলেও অসুবিধা হয়। সেখানে পরীক্ষার্থীর জানা উত্তরের কাছাকাছি উত্তর করার প্রবণতা থাকে। যদিও পশ্চিমবঙ্গ স্টাফ সিলেকশন কমিশন ভুল প্রশ্নগুলো পুরোপুরি বাদ দিয়েছে।
প্রশ্নপত্র সহজ হলে অবশ্যই সবার নম্বরের পরিমাণ বাড়ে। তখন ব্যক্তিগত ভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হয় না, তিনি ওই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবে কি না। অতীতে এমনও দেখা গেছে ৫০ শতাংশ ঠিক উত্তর করে পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন।
পরীক্ষার্থীকে আত্মতৃপ্তি নিয়ে বসে থাকলে চলবে না। ভাবলে হবে না, তিনি সবই রপ্ত করে ফেলেছেন। ভাবতে হবে ‘বিপুলা এই পৃথিবীর কতটুকু জানি’। মনে রাখবেন, আপনি যে বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেছেন, সেটারও আপনি সব জানেন না। আপনাকে আরও আরও পড়তে হবে, জানতে হবে, বুঝতে হবে, অন্যের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।
রাজনীতি ও খেলায় আগ্রহ থাকে না মেয়েদের। মেয়েদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে একটা বিষয় খুব লক্ষ করেছি, রাজনীতি আর খেলাটাকে সহজে বুঝতে চায় না। এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। রাজনীতি বোঝা মানে নোংরা রাজনীতি বা প্যাঁচালো রাজনীতি রপ্ত করার কথা বলছি না। ভারতের সংবিধান বুঝতে গেলে এগুলো নিয়ে একটু সজাগ থাকতে হয়। যেমন, কাউন্সিলর, পঞ্চায়েত সদস্য, প্রধান প্রমুখদের কাজকর্ম জানতে গেলে বা তাঁদের পদমর্যাদা বুঝতে গেলে তাঁরা কী ভাবে খবরের শিরোনামে আসছেন, কেন তাঁদের ওই কাজটি করা উচিত হয়েছে বা হয়নি, কেন তাঁরা হাইকোর্টের ভর্ৎসনা শুনলেন — এগুলো জানলে, বুঝলে যেমন সংবিধানের প্রতি আগ্রহ বাড়ে, তেমনই রাজনীতির প্রতিও। একটি খবর এ প্রসঙ্গে উল্লখ করি, ‘খাপ পঞ্চায়েতের নিদান: মেয়েদের জিন্স পরা ও মোবাইল ব্যবহার নিষেধ’। তা হলে এখানে খাপ পঞ্চায়েত কী, জানতে ইচ্ছে করবে। আরও প্রশ্ন মনে আসবে, তারা কি এ ভাবে মেয়েদের ওপর নিদান দিতে পারে, তারা কি সংবিধান স্বীকৃত অথবা সালিসি সভা কী ?
যাই হোক খেলার খবরের প্রতি মেয়েদের আগ্রহ বাড়াতে হবে। জানতে গেলে যে খেলতেই হবে বা রাজনীতি করতে হবে, এমন নয়। খেলার বিষয়ে একটা প্রশ্নের কথা উল্লেখ করি। LBW কথাটির অর্থ কী ? বা LBW বিষয়টি কোন খেলার সঙ্গে যুক্ত ? কিছু নতুন খেলায় ভারত যুক্ত হয়েছে, সেগুলির বিষয়ে ছেলে-মেয়ে সবারই জ্ঞান থাকা দরকার। যেমন, স্কোয়াশ, রাগবি, কার রেস, ওয়াটারপোলো, পোলো, বিলিয়ার্ড ইত্যাদি। যেমন, জ্যোৎস্না পোনাপ্পা কোন খেলার সঙ্গে যুক্ত ? উত্তর হবে, স্কোয়াশ।
খবরের সব আপডেট পড়ুন খবর অনলাইনে। লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল।
ভালো