সেলিব্রিটি ও সাধারণ পলিসিধারীদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিমার ক্ষেত্রে বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছে ১৪,০০০ সদস্য বিশিষ্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ মেডিক্যাল কনসালট্যান্টস (AMC)। সম্প্রতি অভিনেতা সইফ আলি খানের জন্য মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে ২৫ লক্ষ টাকার ক্যাশলেস চিকিৎসার অনুমোদন মেলার ঘটনায় ইনসিওরেন্স রেগুলেটরি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (IRDAI)-র কাছে অভিযোগ জানিয়েছে AMC।
AMC-র অভিযোগ
AMC-র মতে, সেলিব্রিটি এবং কর্পোরেট পলিসিধারীরা সাধারণ পলিসিধারীদের তুলনায় বেশি সুবিধা পান। AMC-র একটি চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “সইফ আলি খানের মতো সেলিব্রিটিরা দ্রুত ও উচ্চ সীমার ক্যাশলেস চিকিৎসা সুবিধা পান, অথচ সাধারণ মানুষকে স্বল্প পরিমাণ সুরাহার জন্য লড়াই করতে হয়।”
একজন প্রবীণ শল্যচিকিৎসক বলেন, “চার ঘণ্টার মধ্যে ২৫ লক্ষ টাকার অনুমোদন সাধারণত দেখা যায় না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রথমে ৫০ হাজার টাকা অনুমোদিত হয়। সাধারণ রোগীদের ক্ষেত্রে অনুমোদনের প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়, বিশেষত মেডিকো-লিগ্যাল কেসে।”
AMC-র দাবি
AMC-এর মেডিকো-লিগ্যাল সেলের প্রধান ডঃ সুধীর নাইক বলেন, “আমরা কর্পোরেট হাসপাতাল বা সেলিব্রিটিদের বিরুদ্ধে নই। আমরা সাধারণ রোগীদের জন্য একই ধরনের সুবিধা চাই। সমস্ত পলিসিধারীদের সমান অধিকার থাকা উচিত।”
AMC আরও জানায়, এই ঘটনার মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিমার অনুমোদন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব স্পষ্ট হয়েছে। তাঁরা দাবি করেছেন, IRDAI যেন এই ঘটনা তদন্ত করে এবং সমস্ত পলিসিধারীর জন্য ন্যায্য সিস্টেম তৈরি করে।
নার্সিংহোম মালিকদের সমস্যার কথা
AMC-র বেশ কিছু সদস্য, যাঁরা নার্সিংহোম পরিচালনা করেন, জানান যে তাঁরা ক্যাশলেস পরিষেবা দিতে সক্ষম নন অথবা দিতে বাধ্য হলেও খুবই কম খরচে পরিষেবা দিতে হয়। AMC-র এক সদস্য বলেন, “কর্পোরেট হাসপাতালে যে পদ্ধতির জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হয়, নার্সিংহোমে সেই একই পদ্ধতির খরচ বীমা সংস্থা অস্বীকার করে। এর ফলে সাধারণ রোগীদের জন্য নার্সিংহোমের সাশ্রয়ী বিকল্প বন্ধ হতে বসেছে।”
AMC-র আবেদন
AMC স্পষ্ট করেছে যে স্বাস্থ্যবিমার লক্ষ্য সুরক্ষা দেওয়া, বৈষম্য তৈরি করা নয়। সেলিব্রিটি এবং সাধারণ পলিসিধারীদের মধ্যে বৈষম্য একটি দুই-স্তরীয় ব্যবস্থা তৈরি করছে, যা সাধারণ মানুষের অধিকারকে খর্ব করছে।