প্রয়াত বর্ষীয়ান চলচ্চিত্র পরিচালক পার্থ ঘোষ। সোমবার সকালে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। মুম্বইয়ের মাধ এলাকার নিজ বাসভবনেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন তিনি।
পরিচালকের মৃত্যু সংবাদটি প্রথমে সামনে আনেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। তিনি জানান, সকালেই আচমকা অসুস্থ বোধ করেন পার্থ। তখনই বলেন, একটু খোলা হাওয়ায় হাঁটতে চান। বাড়ির বাগানে হাঁটার সময়ই বুকে অস্বস্তি শুরু হয়। তড়িঘড়ি প্রথমে এক হাসপাতালে এবং পরে আর একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই প্রাণ হারান বর্ষীয়ান পরিচালক।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, দম্পতি নিঃসন্তান। স্বামীর আকস্মিক প্রয়াণে ভেঙে পড়েছেন তাঁর স্ত্রী।
নব্বইয়ের দশকে বলিউডে একের পর এক ছবির পরিচালনায় নিজস্ব পরিচিতি তৈরি করেছিলেন পার্থ ঘোষ। তাঁর পরিচালিত ১৯৯৬ সালের ছবি ‘অগ্নিসাক্ষী’ মনীষা কৈরালা, জ্যাকি শ্রফ এবং নানা পটেকরের অভিনয়ে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। কেবল বাণিজ্যিকভাবে নয়, এই ছবি হিন্দি চলচ্চিত্রে একটি তাৎপর্যপূর্ণ অবস্থান তৈরি করেছিল।
পরের বছর, ১৯৯৭-এ মুক্তি পায় ‘গুলাম এ মুস্তাফা’, যেখানে ছিলেন রবীনা টন্ডন ও নানা পটেকর। এটি সমালোচকদের প্রশংসার পাশাপাশি বক্স অফিসেও সফল হয়েছিল। এ ছাড়াও তাঁর ‘হান্ড্রেড ডেজ়’ ছবিটিও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, যা থ্রিলার ঘরানার মধ্যে আলাদা জায়গা করে নিয়েছিল।
ছবির পাশাপাশি পার্থ ঘোষ হিন্দি এবং বাংলা টেলিভিশনেও কাজ করেছেন। অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত প্রথম তাঁর পরিচালনায় হিন্দি সিনেমায় পা রাখেন ১৯৯৪ সালের ‘তিসরা কৌন’ ছবির মাধ্যমে।
সম্প্রতি জানা গিয়েছিল, তিনি তাঁর জনপ্রিয় ছবি ‘অগ্নিসাক্ষী’ ও ‘হান্ড্রেড ডেজ়’-এর সিকুয়েল তৈরি করার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু তা আর বাস্তবায়িত হল না।
ঋতুপর্ণা জানান, “পার্থদা অত্যন্ত শান্ত ও বিনয়ী মানুষ ছিলেন। এত সাফল্যের পরেও প্রচারের আলো থেকে নিজেকে দূরে রাখতেন। তিনি সত্যিই এক মাটির মানুষ ছিলেন।”
চলচ্চিত্র দুনিয়া এক নির্ভরযোগ্য, সৃজনশীল এবং প্রতিভাবান পরিচালকের চলে যাওয়ায় শোকাহত।