ডিম ভাঙার পর খোসা ফেলে দেন? জানেন কত বড়ো ভুল করছেন? প্রাণীই হোক কিংবা গাছ, ভালো ভাবে বেড়ে ওঠার জন্য সকলেরই প্রয়োজন নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাসিয়ামের পাশাপাশি ক্যালসিয়ামেরও। ডিমের খোলা ক্যালসিয়াম কার্বোনেট দিয়ে তৈরি হওয়ায় তা একটি উৎকৃষ্ট সারের কাজ করে। পুরোপুরি রাসায়নিকমুক্ত জৈব হওয়ায় তা গাছ, মানুষ, পশুপাখিদের পক্ষেও সম্পূর্ণ নিরাপদ।
বেঁচে থাকার জন্য গাছের প্রয়োজন ক্যালসিয়ামের। ক্যালসিয়ামের অভাবে অনেক সময়ই ছোটো গাছের পাতা কুঁকড়ে যায়, কালো দাগ দেখা যায়। স্ট্রং সেলুলার স্ট্রাকচার বা কোষের গঠনের জন্য গাছের প্রয়োজন হয় ক্যালসিয়ামের। তাই ডিমের খোলা ফেলে না দিয়ে ভালো করে গুঁড়িয়ে নিয়ে মিশিয়ে দিন টবে বা সরাসরি মাটিতে।
মনে রাখবেন ডিমের খোলার পুরোপুরি ভাবে মাটিতে মিশে যেতে সময় লাগে। তাই ভালো হয় বসন্তকালে ডিমের খোলা মাটিতে দিলে। ডিমের খোলার সঙ্গে কফিগুঁড়োও মিশিয়ে দিতে পারেন। তাতে নাইট্রোজেনও পাবে মাটি।
কতটা উপকারী ডিমের খোলা?
ডিমের খোলায় অ্যালবুমেন প্রোটিনের গন্ধ থাকায় তা গাছের জন্য ক্ষতিকারক পোকামাকড় এড়িয়ে চলে। তাই আগাছা বা পোকামাকড়কে গাছের থেকে দূরে রাখতে ডিমের খোলা সার হিসেবে ব্যবহার করুন। পাশাপাশি মাটিতে থাকা অ্যাসিডিটির পরিমাণও কমাবে ডিমের খোলা। সম্পূর্ণ বায়োডিগ্রেডেবল ডিমের খোলা খুব ভালো সিড স্টার্টারও। অর্থাৎ ডিমের মুখ অল্প ফাঁক করে নিয়ে সাদা অংশ ও কুসুম একটা পাত্রে ঢেলে নিন। এ বার ডিমের খোলা অংশের মধ্যে অল্প মাটি দিয়ে দানা বা বীজ রোপণ করুন। যখন নতুন গাছ বেরোবে গোটাটা (ডিমের খোলা সমেত গাছ) মাটিতে বসিয়ে দিন।
শামুকের খোলের মতো ডিমের খোলাও প্রচুর পরিমাণে গুঁড়ো করে মাটিতে মেশালে আগাছা, ঘাস হয় না। গাছের বৃদ্ধি ভালো ভাবে হয়।
গাছ, মানুষের মতো পাখিদেরও খাবারে ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে ডিম পাড়ার আগে ও পরে। তাই গাছের গোড়ার পাশাপাশি পাখিদের যে দানা খাওয়াবেন তার সঙ্গে ডিমের খোলার গুঁড়ো মিশিয়ে দিন। পাখিদের ভালো খাবার হবে।
বেগুন, টমেটো, গোলমরিচ, ব্রকোলি, ফুলকপি, পালংশাকের বেড়ে উঠতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম প্রয়োজন হয়। তাই এ সব গাছের গোড়ায় ও আশপাশে মাটিতে ডিমের খোলা গুঁড়ো করে দিন।
বাড়িতে ইনডোর প্ল্যান্টেও সার হিসেবে ডিমের খোলা ব্যবহার করুন। ডিমে পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। একটা ডিমে প্রায় ৬-৭ গ্রাম প্রোটিন মেলে। তাই ফেলে না দিয়ে জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করুন ডিমের খোলা।
টবে প্রথমে ডিমের খোলা দিয়ে তার ওপর মাটি দিন। ওপরে আরও একটু খোলার গুঁড়ো দেবেন। ডিমের খোলা পচন ধরে মাটিতে মিশে গেলে তা গাছের গোড়ার পচন ধরা আটকায়। শেকড় শক্ত হয়, আগাছার বৃদ্ধি রোধ করে, পোকামাকড় থেকে বাঁচায়।