এখনকার দিনে সবচেয়ে বড়ো সমস্যা হল বন্ধ্যাত্ব। গোটা বিশ্বে প্রতি ৭ জনের মধ্যে একজন দম্পতি বন্ধ্যাত্বর সমস্যায় ভুগছেন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে বয়স, তামাক সেবন, মদ্যপান, যৌনরোগ, স্থুলতা বা কম ওজনের জন্য বন্ধ্যাত্বর সমস্যা বাড়ে। সাধারণ মানুষের উপর যানজটের আওয়াজের কী প্রভাব ফেলে তা নিয়ে গবেষণা চালান ডেনমার্কের একদল গবেষক।
বায়ুদূষণ সৃষ্টিকারী পদার্থ মহিলা ও পুরুষদের সন্তানধারণের ক্ষমতায় কোনো প্রভাব ফেলে কি না তা নিয়ে গবেষণা চালান ডেনমার্কের ওই গবেষকরা। গবেষণায় দেখা গেছে, রাস্তাঘাটের যানজটের ফলে যে আওয়াজ সৃষ্টি হয় তার জেরে সবচেয়ে বেশি বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বাড়ে ৩৫ বছরের ঊর্ধ্বে মহিলা ও ৩৭ বছরের ঊর্ধ্বে পুরুষদের ক্ষেত্রে। ডেনমার্কে বসবাসকারী ৩০ থেকে ৪৫ বছর বয়সি মহিলা ও পুরুষদের ওপর গবেষণা চালানো হয় ২০০০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত।
ইউরোপিয়ান এনভায়রনমেন্ট এজেন্সির রিপোর্ট ‘এনভায়রনমেন্টাল নয়েজ ইন ইউরোপ-২০২০’ শীর্ষক গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছিল, রাস্তাঘাটের যানজটের তীব্র আওয়াজ শুধু শব্দ তথা পরিবেশকেই দূষিত করছে না তা ইউরোপবাসীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকেও বিঘ্নিত করছে। ইউরোপের ১০ কোটি মিলিয়ন বাসিন্দা দীর্ঘ মেয়াদে শব্দদূষণের শিকার হয়েছেন। যানজটের তীব্র আওয়াজের ফলে খিটখিটে ভাব, ঘুমের দফারফা, হার্টের অসুখের পাশাপাশি বিপাকক্রিয়াজনিত সমস্যা দেখা গেছে। প্রতিবছর ৪৮ হাজার মানুষ নতুন করে ইসকেমিক হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হচ্ছেন। ১২ হাজার মানুষ অকাল মৃত্যুর শিকার হচ্ছেন। ৬৫ লক্ষ মানুষ ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র হিসাব অনুযায়ী, বায়ুদূষণের পর শব্দদূষণের কারণে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে মানুষ স্বাস্থ্যজনিত সমস্যায় ভুগছেন। ২০১৮ সালে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, কম সময়ের জন্য হলেও তীব্র আওয়াজের কারণে আচমকা রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। শব্দদূষণের প্রভাবে স্ট্রেস হরমোনের নিঃসরণে তারতম্য ঘটতে পারে। তার সরাসরি প্রভাব পড়ে স্নায়ুতন্ত্রের ওপর।
‘দ্য ইন্ডিয়ান জার্নাল অফ পেডিয়াট্রিক্স’ নামক জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, শব্দদূষণের প্রভাবে শিশুদের কানে শোনার ক্ষমতায় বদল ঘটে। মনঃসংযোগ বিঘ্নিত হয়। কথা বলা ও শোনার ক্ষমতা হ্রাস পায়। মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বিঘ্নিত হয়।
আরও পড়ুন
করোনার পর ক্রনিক কাশি, গলার স্বর খসখসে? কেন হচ্ছে? কী বলছে গবেষণা?