সুন্দরবনে হাঙর, কামট-সহ সামুদ্রিক প্রাণী শিকার আটকাতে পথে নামল বন দফতর

0

উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, সুন্দরবন: এ বার হাঙর-কামটের শিকার আটকাতে পথে নেমেছে বন দফতর। কড়া নজরদারি এড়িয়ে সন্তর্পণে কিন্তু সামুদ্রিক প্রাণী শিকার চলছে সুন্দরবনে। তাদের ডানা-পাখনা কেটে শুকিয়ে মোটা দামে দক্ষিণ ভারতে পাচার করাও হচ্ছে। এই অবৈধ চোরা কারবার রুখতে আরও তৎপর হয়েছে বন দফতর।

এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিতে চলছে বন দফতর। আর কঠিন এই ব্যবস্থা নেওয়ার আগে সুন্দরবন তথা জেলা জুড়ে প্রচার চালাতে শুরু করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা বন বিভাগ। বন্য আইন অনুসারে কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও সুন্দরবনের নদীগুলি থেকে নির্বিচারে ছোট বয়সের হাঙর, কামট, শঙ্কর মাছ শিকার করা হচ্ছে। পরে তাদের ডানা পাখনা কেটে শুকিয়ে শুটকি মাছের আকারে পরিণত করে সকলের চোখ এড়িয়ে গোপনে পাচার করছে এক শ্রেণীর চোরা কারবারিরা।

sundarban 2 1

খবর পেয়ে দিন কয়েক আগে বন বিভাগের তরফে অভিযানও করা হয়। এই ধরনের কাজ বন্ধ করতে বন বিভাগ নানা ভাবে প্রচার করেছে। সমুদ্রে গিয়ে মাছ শিকারকারী ট্রলার ব্যবসায়ীদের সচেতন করছে এই ধরনের পরিবেশ ধ্বংসকারী ব্যবসা বন্ধ করতে।

ইতিমধ্যে বকখালি, ফ্রেজারগঞ্জ, নামখানা, কাকদ্বীপ এবং সাগর দ্বীপের হাটেবাজারে, রাস্তার মোড়ে মোড়ে এবং ফিসিং-হারবারগুলিতে লাগাতার প্রচার চলছে। কোথাও কোথাও পরিবেশ সচেতন মানুষ, গৃহবধূ এবং স্কুল পড়ুয়ারাও সামিল হচ্ছে। যুব সম্প্রদায়ের কেউ কেউ প্রতিবাদে সোচ্চারও হচ্ছেন।

sundarban 3 1

সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবার, নামখানা, কাকদ্বীপ, ফ্রেজারগঞ্জ, রায়দীঘি-সহ বেশ কিছু মৎস্য বন্দর থেকে হাঙর, শুশুক, শঙ্কর মাছের চোরাকারবার চলছে। গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার করার সময় জালে জড়িয়ে যাওয়া অলিভ রিডলে কচ্ছপ, গ্রিন সি-টার্টল পিটিয়ে মেরে আবার জলে ভাসিয়ে দিচ্ছে। হারবারগুলির আশপাশে ঘোরাফেরা করলে আখছার তাদের মৃতদের ভাসতে দেখা যাচ্ছে। তাদের শরীরেও আঘাতের রক্তাক্ত চিহ্ন সহজেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

এই ঘটনায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় পরিবেশ এবং সমাজ সচেতন মানুষজন। রীতিমতো ক্ষুব্ধ দক্ষিণ ২৪ পরগনা বিভাগের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার মিলনকান্তি মণ্ডল। তিনি বলেন, “কোনো রকমের সামুদ্রিক প্রাণী হত্যা এবং হাঙর, কামট, শঙ্করমাছ, কচ্ছপ শিকার করার ঘটনায় কেউ যুক্ত প্রমাণ পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ট্রলার তো বাজেয়াপ্ত হবেই, ধৃতদের টানা ৭ বছরের জেল ও জরিমানা উভয়ই হবে। তাই বলব এই ধরনের বেআইনি কাজ থেকে দূরে থাকার জন্য”।

বিজ্ঞাপন

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.