Home খবর বিদেশ তিনি অভিনেতা, তিনি পরিবেশপ্রেমী, গহন জঙ্গলে ২১টি নতুন প্রজাতির প্রাণীর খোঁজ দিলেন...

তিনি অভিনেতা, তিনি পরিবেশপ্রেমী, গহন জঙ্গলে ২১টি নতুন প্রজাতির প্রাণীর খোঁজ দিলেন লিওনার্দো

0
ছবি লিওনার্দোর 'এক্স' থেকে নেওয়া।

‘টাইটানিক’ সিনেমায় প্রেমিক জ্যাককে কেউ ভুলতে পারবে না। প্রেমিক জ্যাকের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন হলিউডের প্রথম সারির অভিনেতা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও। হলিউডের অভিনেতা হওয়ার পাশাপাশি লিওনার্দো একজন পরিবেশরক্ষকও।

সময় পেলেই লিওনার্দো জঙ্গলে বেড়াতে চলে যান। সম্প্রতি নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি রিল ভিডিও শেয়ার করেন লিওনার্দো। সেই রিল ভিডিওতে আফ্রিকার মাদাগাস্কারে অভিযানে যাওয়া একটি বিজ্ঞানীদলের কথা বলা হয়েছে। ২০২৩ সালে মাদাগাস্কারের মাকিরায় গিয়েছিল ওই বিজ্ঞানীদল। নিজের ইনস্টাগ্রাম রিলের মাধ্যমে লিওনার্দো গোটা বিশ্বের সঙ্গে ২১টি প্রজাতির প্রাণীর পরিচয় করিয়েছেন যারা হারিয়েই গিয়েছিল। বিজ্ঞানীরাও ধরে নিয়েছিলেন এসব প্রাণী এখন অতীত। তারা হারিয়ে গেছে পৃথিবীর বুক থেকে।

হলিউড অভিনেতা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও যে সব প্রজাতির প্রাণীর খোঁজ দিয়েছেন, তার মধ্যে রয়েছে পিঁপড়ের মতো গুবরে পোকা, তিন রকমের রঙিন মাছ, লাফাতে পারে এমন পাঁচ রকম মাকড়শা, একটি বিশালাকার কেন্নো জাতীয় প্রাণী যাকে ১৮৯৭ সালের পর কখনও দেখা যায়নি।

লিওনার্দো ইনস্টাগ্রাম পোস্টে আরও লিখেছেন, মাদাগাস্কার মাকিরা জঙ্গল এমনই এক গহন জঙ্গল যেখানে এমন সব প্রাণীর খোঁজ মেলে যাদের বিশ্বের কোথাও আর দেখা যায় না। শুধু এই জঙ্গলেই দেখা যায়। কিন্তু মাদাগাস্কারের জঙ্গল চাষবাস ও গাছ কাটার কারণে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞানীদলে মাদাগাস্কারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীরা ছিলেন। স্থানীয় গাইডরাও সাহায্য করেন।

leonardo 2 08.08

ব্রাজিলে উপজাতীয়দের সঙ্গে। ছবি লিওনার্দোর ‘এক্স’ থেকে নেওয়া।

যাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের হাত ধরে ২১টি নতুন প্রজাতির প্রাণীর খোঁজ মিলল সেই বিখ্যাত হলিউড অভিনেতা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও অস্কারজয়ী একজন অভিনেতা। তিনবার অস্কারে মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি। ডিক্যাপ্রিও অভিনয়ের পাশাপাশি চালিয়ে গিয়েছেন পরিবেশ আন্দোলন। ১৯৯৮ সালে তিনি পরিবেশ রক্ষার তাগিদে নিজের সংস্থা ‘লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও ফাউন্ডেশন’ স্থাপন করেন। জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র্য রক্ষা, সমুদ্রদূষণ রোধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা এবং উদ্ধার ও ত্রাণের কাজকর্ম করে থাকে লিওনার্দোর সংস্থা। নিজের সংস্থার মাধ্যমে হলিউডি অভিনেতা ‘ওয়াটার প্ল্যানেট’, ‘গ্লোবাল ওয়ার্মিং’ নামে পরিবেশের ওপর ২টি ছোটো ওয়েব ফিল্মও প্রযোজনা করেছেন।

দীর্ঘ ৪ বছরের নিরন্তর গবেষণার পর ২০০৭ সালে তিনি ‘The 11th Hour’ নামে ডকুমেন্টারি ফিল্‌ম তৈরি করেন। এই তথ্যচিত্রেও পরিবেশরক্ষার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন লিওনার্দো। এখানে প্রযোজনার পাশাপাশি ভাষ্যপাঠও তাঁর ছিল। ২০১৪ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের (United Nations) ‘মেসেঞ্জার অফ পিস ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ’ সম্মান পান লিওনার্দো। ২০১৬ সালে ‘the Revenant’ সিনেমার জন্য অস্কারের সেরা অভিনেতার পুরস্কার পান লিওনার্দো। অক্সারের মঞ্চেও তিনি জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ রক্ষার কথা বলেন।

ছোটোবেলা থেকেই মেরিন বায়োলজিস্ট হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন লিওনার্দো। ১৯৯৮ সালে ‘টাইটানিক’ সিনেমার পর মাত্র ২৪ বছর বয়সে হোয়াইট হাউজে তাঁর সঙ্গে দেখা হয় মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোরের। এই সাক্ষাৎ মোড় ঘুরিয়ে দেয় লিওনার্দোর জীবনের। আল গোর একজন পরিবেশবিদ। তাই তাঁর মুখে পরিবেশরক্ষার কথা শুনে নিজের সংস্থা খোলার চিন্তা করেন অভিনেতা। আজ হলিউড অভিনেতা লিওনার্দোর সংস্থা ৩৫টির বেশি পরিবেশ সংরক্ষণের সঙ্গে জড়িত। ২০১০ সালে তাঁর সংস্থা নেপালের বাঘ সংরক্ষণের জন্য ১০ লাখ মার্কিন ডলার আর্থিক সাহায্য করেছিল।

আরও পড়ুন

পরিবেশ রক্ষার বার্তা নিয়ে সাইকেলে সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটার! বাড়ি ফিরলেন জয়নগরের যুবক

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Exit mobile version