কথায় বলে ‘নাম দিয়ে যায় চেনা’। মানুষ সামাজিক জীব। তারা একে অপরকে নাম ধরে ডাকে। কিন্তু নাম ধরে ডাকার মতো অত্যাধুনিক চিহ্নিতকরণ শুধু মানুষের মধ্যেই হয় না। নাম ধরে সঙ্গীদের ডাকার প্রবণতা বটলনোজ ডলফিন ও আফ্রিকান হাতিদের মধ্যেও দেখতে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সেই তালিকায় এবার যোগ হয়েছে মার্মোসেট বাঁদরের নামও। সদ্যই এই গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে ‘সায়েন্স’ নামক জার্নালে।
জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এই গবেষণা চালান। দেখা গেছে মার্মোসেট বাঁদররা একে অপরকে উঁচু গলায় বেশ জোরে মুখ দিয়ে আওয়াজ করে ডাকে। হাই পিচের এই আওয়াজ একে অপরের সঙ্গে কমিউনিকেশন বা যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করে মার্মোসেট বাঁদররা।
৩টি আলাদা প্রজাতির ১০টি মার্মোসেট বাঁদরের ওপর গবেষণা চালানো হয়। বিজ্ঞানীরা জানান, লাতিন আমেরিকার ঘন সবুজ জঙ্গলে যেখানে অনেক সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে আলোও পৌঁছোয় না সেখানে বাস করে এই বিশেষ প্রজাতির মার্মোসেট বাঁদর। তাই সেখানে একে অপরের সঙ্গে কমিউনিকেশনের জন্য মুখ দিয়ে আওয়াজ করে ডাকা খুব জরুরি।
অন্যদিকে, শুধু লাতিন আমেরিকার জঙ্গলে বাস করা মার্মোসেট বাঁদরই নয় আমাদের খুব চেনা গৃহপালিত পশু ছাগলও কিন্তু নিজেদের মধ্যে উচ্চারণের মাধ্যমে আদানপ্রদান করতে পারে। অবশ্যই তা তাদের মেলামেশার ওপর নির্ভর করে। ছাগল কথা বলতে পারে না। তবে নানারকম শব্দ করতে পারে। অন্যদের স্বরভঙ্গি নকল করতে পারে। তাদের সমাজে সেটাই উচ্চারণ। সেই উচ্চারণের মাধ্যমে তারা তাদের বক্তব্য পেশ করে। লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেন। তাঁরাই প্রথম বুঝতে পারেন যে ছাগলরা নিজেদের মধ্য বিভিন্ন উচ্চারণে ভাব আদানপ্রদান করে।
বিজ্ঞানীরা দেখেন, যখনই ছাগলরা তাদের চেনা পরিচিত ছাগল ছাড়াও অন্য ছাগলদের সঙ্গে একত্রিত হয় তখন অন্য ছাগলের বিভিন্ন ডাক তারা নকল করতে শুরু করে। সেভাবেই নতুন শব্দ শিখে যায়। এ ছাড়াও ছাগলদের মনে রাখার ক্ষমতাও যথেষ্ট বলেই জানান বিজ্ঞানীরা।
ছাগলরা নতুন পরিবেশে গেলে তাদের ডাকও বদলে যায়, যা গবেষকদের নজর কাড়ে। নতুন কোনো জায়গায় গেলে তারা সেখানকার ছাগলদের মতো করে শব্দ করে ডাকে, যাতে তারা সেই নতুন পরিবেশে সকলের সঙ্গে সহজেই মানিয়ে নিতে পারে।
আরও পড়ুন
মানসিক উদ্বেগে ভুগছেন? আপনার শরীরের গন্ধ নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে আপনার পোষ্যর মনেও