এ যেন প্রকৃতির অঘোষিত আশ্চর্য! সময়ের আগেই রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষীনিবাসে হাজির হয়ে গিয়েছে দেশি-বিদেশি পরিযায়ী পাখিদের দল। যেখানে জুন মাসের আগে এই দৃশ্য সচরাচর দেখা যায় না, সেখানে এবছর এপ্রিলের শেষ সপ্তাহেই মিলছে লিটল কর্মর্যান্ট, ইগ্রেটস প্রজাতির পাখিদের ঝাঁক। ইতিমধ্যে এই পাখিরা জারুল সহ একাধিক গাছে বাসা বাঁধতে শুরু করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই আগাম আগমন একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্যের ইঙ্গিত দিচ্ছে, তেমনি কুলিক পক্ষীনিবাসের রক্ষণাবেক্ষণের সফলতাও তুলে ধরছে।
কেন সময়ের আগে এল পরিযায়ীরা?
রায়গঞ্জের ডিএফও ভূপেন বিশ্বকর্মা জানিয়েছেন, “পক্ষীনিবাসের ক্যানেলে জল ধরে রাখা, সঠিক সময়ে খাদ্য সরবরাহ, পরিচ্ছন্নতা ও পরিবেশ রক্ষার কাজ সময়মতো হওয়ায় এবছর নির্ধারিত সময়ের আগেই পরিযায়ী পাখিরা চলে এসেছে।”
আগাম বর্ষার প্রভাব:
উত্তর দিনাজপুর পিপলস ফর অ্যানিম্যালস-এর সম্পাদক গৌতম তান্তিয়ার কথায়,
“এপ্রিল মাসে যে আগাম বৃষ্টি হয়েছে, তার জন্যই হয়তো পরিবেশ অনুকূল হয়ে গিয়েছে পাখিদের আগমন উপযোগী করে।”
কে কে এসেছে, কে বাকি?
- উপস্থিত: ইগ্রেটস, লিটল কর্মর্যান্ট
- এখনও আসেনি: ওপেন বিল স্টর্ক, নাইট হেরন
তবে পাখিপ্রেমীদের আশা, আগামী সপ্তাহ দু’য়ের মধ্যে ওপেন বিল স্টর্ক ও নাইট হেরনদেরও আগমন শুরু হবে।
বিশেষত ওপেন বিল স্টর্কই প্রতি বছর সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় হাজির হয় কুলিকে।
শুধু কুলিকে নয়, রায়গঞ্জ শহরের বিভিন্ন গাছেও যেমন মিলনপাড়া এলাকায়, পাখিরা বাসা বাঁধছে। এটা প্রমাণ করে কুলিকের বাইরেও পরিবেশ অনুকূল হয়ে উঠেছে তাদের থাকার জন্য।
কুলিকের গুরুত্ব:
এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম পক্ষীনিবাস রায়গঞ্জের কুলিক। বছরের নির্দিষ্ট সময়ে দেশের নানা প্রান্ত থেকে পক্ষীপ্রেমীরা ভিড় করেন এই অঞ্চলে। হাজার হাজার পরিযায়ী পাখির কলতান এই বনাঞ্চলকে করে তোলে জীবন্ত ও সজীব।
পাখিদের আগাম উপস্থিতি যেমন পরিবেশপ্রেমীদের উচ্ছ্বাস বাড়াচ্ছে, তেমনই পর্যটনের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক ইঙ্গিত বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।