বায়ুদূষণ এখন গোটা বিশ্বে প্রভূত স্বাস্থ্যসমস্যা ডেকে আনছে। বায়ুদূষণের ফলে অসংখ্য মানুষ অ্যাজমা, ক্রনিক পালমোনারি ডিজিজের মতো শ্বাসকষ্টজনিত নানান রকম অসুখে ভুগছেন। অকালে ঝরে যাচ্ছে বহু প্রাণ। সাম্প্রতিক সময় আমেরিকার একদল গবেষকের করা একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দীর্ঘ সময় ধরে একটানা চলা বায়ুদূষণের ফলে ডিপ ভেইনে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে। বায়ুদূষণের ফলে ডিপ ভেইনে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা ৩৯-১০০% বাড়ে।
আমেরিকায় ১৭ বছর ধরে নিউইয়র্ক, শিকাগো ও লস এঞ্জেলসে বসবাসকারী ৬৬৫০ জনের ওপর গবেষণা চালানো হয়। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আগে থেকেই এর মধ্যে ২৪৮ জনের ডিপ ভেইনে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার সমস্যা ছিল কিন্তু বায়ুদূষণের ফলে ক্ষতিকর দূষিত বায়ুকণা পিএম ২.৫ ডিপ ভেইনে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে ৩৯-১০০%। নাইট্রোজেন অক্সাইডের জেরে ডিপ ভেইনে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে ১২০-১৪০%। বায়ুদূষণের ফলে শরীর ফুলে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার সমস্যা ডেকে আনে হার্টের অসুখও। ডিপ ভেইনে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়াকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলে venous thromboembolism।
বায়ুদূষণ ক্রমশ ভারতে প্রাণঘাতী অসুখ হয়ে উঠেছে। ২০১৯ সালে অকালে ২৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে নানান রকম দূষণের কারণে। এর মধ্যে বায়ুদূষণের কারণে মৃত্যু হয়েছে ১৬ লাখ মানুষের। ৫ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে জলদূষণের কারণে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর বায়ুদূষণের কারণে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ৫০ লাখের বেশি মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের করা সাম্প্রতিক গবেষণা রিপোর্টে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। ২০০৯-২০১৯ সাল পর্যন্ত ভারতের ৬৫৫টি জেলায় গবেষণা চালানো হয়। ল্যানসেট প্ল্যানেটরি হেলথ নামক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাপত্র।