কলকাতা
ঐতিহ্যের হৈমন্তীপর্ব: বটকৃষ্ণ পাল পরিবারের জগদ্ধাত্রীপুজোর ১২১ বছর
পাল পরিবারের জগদ্ধাত্রী প্রতিমার বিশেষত্ব হল, বাহন সিংহের পিঠে মা দু’ পা মুড়ে বাবু হয়ে বসে আছেন। মায়ের সঙ্গে রয়েছেন তাঁর চার সখী।

শুভদীপ রায় চৌধুরী
কলকাতার বেনিয়াটোলা স্ট্রিটে পাল পরিবারের জগদ্ধাত্রীপুজো ১২১ বছরে পড়ল। ১৩০৭ বঙ্গাব্দে তথা ১৯০০ খ্রিস্টাব্দে এই পুজো শুরু করেছিলেন এই পরিবারের বিখ্যাত মানুষ বটকৃষ্ণ পাল।
পাল পরিবারের আদি নিবাস হাওড়া শিবপুরে। ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে বটকৃষ্ণ পাল সেখানে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তী কালের প্রথিতযশা এই পুরুষটি ১২ বছর বয়সে কলকাতায় মামার বাড়িতে চলে আসেন। একটু বড়ো হয়ে ব্যবসা শুরু করেন। কালক্রমে সেই ব্যবসা বৃহৎ মহীরুহের আকার ধারণ করে। প্রখ্যাত ওষুধ ব্যবসায়ী ও প্রস্তুতকারক হিসাবে তাঁর নাম ও যশ দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘বটকৃষ্ণ পাল অ্যান্ড কোং’।

বটকৃষ্ণ পাল মহাশয় ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে ৭৭ বেনিয়াটোলা স্ট্রিটে জমি কিনে তাঁর সুবৃহৎ বসতবাড়ি নির্মাণ করেন। ওই বাড়িতে এক সুরম্য সুন্দর কারুকার্যখচিত ঠাকুরদালান তৈরি করেন। এই ঠাকুরদালানেই ১৩০৭ বঙ্গাব্দে মহাসমারোহে জগদ্ধাত্রীমাতার পুজো শুরু হয়।
এই পুজো করার আগে শিবপুরে বটকৃষ্ণ পালের পরিবারে অভয়া দুর্গামাতার পুজো হত। বটকৃষ্ণবাবুর ইচ্ছা ছিল বেনিয়াটোলার বসতবাড়িতে শিবপুরের অভয়া মায়েরই পুজো করার। কিন্তু তাঁর উত্তরপুরুষদের মুখে জানা যায়, বটকৃষ্ণ পালের স্ত্রীকে মা স্বপ্নাদেশে জানান, তিনি শিবপুরের আদি বাড়িতেই পুজো পেতে চান এবং আদেশ করেন বেনিয়াটোলার বাড়িতে মা দুর্গার আরও এক রূপ পদ্মাসীনা জগদ্ধাত্রীর পুজো করতে।
মায়ের আদেশে বটকৃষ্ণ পাল মহাশয় আজীবন ৭৭ বেনিয়াটোলা স্ট্রিটের বসতবাড়িতে জগদ্ধাত্রীপুজো করে গেছেন। পরবর্তী প্রজন্মও নিষ্ঠাভরে সেই ঐতিহ্য ধরে রেখে পুজো করে আসছে। এ বছর এই পুজো ১২১ বছরে পদার্পণ করল।
পাল পরিবারের জগদ্ধাত্রী প্রতিমার বিশেষত্ব হল, বাহন সিংহের পিঠে মা দু’ পা মুড়ে বাবু হয়ে বসে আছেন। মায়ের সঙ্গে রয়েছেন তাঁর চার সখী। মাকে স্বর্ণালংকারে ভূষিত করা হয়। মায়ের সাজসজ্জা আগে ঢাকা থেকে শিল্পী এনে তৈরি করানো হত। এখন কলকাতার শিল্পীরাই তৈরি করেন। আকন্দ তুলোর ছোটো ছোটো আঁশ বের করে মায়ের বাহন সিংহের সর্বাঙ্গে আঠা দিয়ে গায়ের লোম হিসাবে লাগানো হয়, যা শৈল্পিক সুষমামণ্ডিত। ঠাকুরের পিছনে থাকে ধাতুনির্মিত বাহারি পাতা ও দৃষ্টিনন্দন ফল-শোভিত এক অনন্য চালচিত্র।

দিনে তিন বার পুজো ছাড়াও হয় সন্ধিপুজো। তাতে আধ মণ চালের নৈবেদ্য, গোটা ফল, ১০৮ পদ্ম ও প্রদীপ নিবেদন করা হয়। দেবীর নিরঞ্জনের সময় লরিতে চৌকির ওপর চালচিত্র সমেত সখী-সহ মাকে অধিষ্ঠিত করা হয়। বিসর্জনের সময় শোভাযাত্রা আরও এক ঐতিহ্য। এই ভাবে পালবাড়িতে প্রাচীন ধারামতেই আজও পুজো পেয়ে আসছেন মা জগদ্ধাত্রী ।
তবে এ বছর করোনা ভাইরাসের কারণে সাধারণ দর্শনার্থী থেকে শুরু করে আত্মীয়স্বজনকেও আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না। এ বছর দেবীপ্রতিমার উচ্চতাও কমানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্য অভিরূপ পাল। এমনকি কুমারীপুজোয় যিনি সংকল্প করবেন তিনিই কেবলমাত্র পুজোর নিয়ম পালন করবেন।
ঠাকুরদালানে দূরত্ববিধি মেনে চলতে হবে এবং মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। মহামারির কারণে এ বছর সিঁদুরখেলা ও দশমীর শোভাযাত্রা বন্ধ থাকছে। মায়ের পুজোর সামগ্রী এবং ফুল-সহ সমস্ত দ্রব্য জীবাণুমুক্ত করা হবে। তবে সব প্রাচীন রীতিনীতি মেনেই পুজোর আয়োজন করা হবে জানিয়েছেন পালবাড়ির সদস্যরা।
খবরঅনলাইনে আরও পড়ুন
ঐতিহ্যের হৈমন্তীপর্ব: শান্তিপুরের ব্রহ্মচারী পরিবারের সোয়া শ’ বছরের জগদ্ধাত্রীপুজো
কলকাতা
কোকেন কাণ্ডে রাকেশ সিংহ ঘনিষ্ঠ আরও একজন গ্রেফতার
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পামেলা গোস্বামীকে গ্রেফতার করা হয়।

খবরঅনলাইন ডেস্ক: কোকেন কাণ্ডে ধৃত আরও একজন। রবিবার রাতে রাকেশ সিংহ ঘনিষ্ঠ সূরজকুমার শাহকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। কোকেন পাচার কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত অমৃত সিংকে সে পালাতে সাহায্য করেছিল বলে অভিযোগ। একটি স্কুটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সোমবার সূরজকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হবে।
মাদক পাচার কাণ্ডে ধৃত বিজেপি নেত্রী পামেলা গোস্বামীর অভিযোগ, রাকেশ সিং তাঁর ফাঁসাতে চাইছেন। সেই উদ্দেশে রাকেশের নির্দেশে তাঁর গাড়িতে মাদক রেখেছিল অমৃত সিং। এর পর থেকে অমৃতের খোঁজে হন্যে কলকাতা পুলিশ।
রবিবার রাতে ধৃত সূরজের বিরুদ্ধে অভিযোগ, রাকেশের নির্দেশে সে অমৃত সিংকে পালাতে সাহায্য করেছিল। পুলিশ সূত্রে খবর, রাকেশের নির্দেশে পোস্ট অফিসের কাছে স্কুটি নিয়ে অপেক্ষা করছিল সূরজ। সেই স্কুটিতে চেপেই ফেরার হয় হয় অমৃত।
আদি গঙ্গার পাশে অরফ্যানগঞ্জ রোড থেকে স্কুটিটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সূরজকে জেরা করলে অমৃতের হদিশ পাওয়া যাবে বলে মনে করছে কলকাতা পুলিশ। তা হলেই এই মাদক পাচার মামলার বহু জট খুলে যাবে বলে ধারণা পুলিশের।
উল্লেখ্য, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পামেলা গোস্বামীকে (Pamela Goswami) গ্রেফতার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয় কোকেন। আদালতে তোলার সময় বিজেপি নেতা রাকেশ সিংহের (Rakesh Singh) বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তোলেন তিনি। পরবর্তী কালে গ্রেফতার করা হয় রাকেশকেও।
খবরঅনলাইনে আরও পড়তে পারেন
৭২ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয় বার, রান্নার গ্যাসের দামে ফের পঁচিশ টাকা বৃদ্ধি

খবরঅনলাইন ডেস্ক: বিজেপির ব্রিগেডে যোগ দিতে কলকাতায় ৭ মার্চ আসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তার আগেই দু’দিনের কলকাতা সফরে আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই সফরে রোড শো’র পাশাপাশি জনসভাতেও যোগ দিতে পারেন তিনি।
এখনও পর্যন্ত বিজেপি সূত্রে যা জানা গিয়েছে, অমিত আসবেন মঙ্গলবার। সে দিন কলকাতা জোনের ‘পরিবর্তন যাত্রা’র সমাপ্তি কর্মসূচি হবে উত্তর কলকাতায়। সেখানে একটি জনসভা করবেন অমিত। দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা থেকে ওই যাত্রার সূচনা করেন তিনিই।
পরের দিন বুধবার দক্ষিণ কলকাতায় রোড-শো এবং সমাবেশ করতে পারেন অমিত। এখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে, দক্ষিণে অমিতের সভা হবে হাজরা মোড়ে। তার আগে ভবানীপুরে হবে রোড-শো। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়র বিধানসভা কেন্দ্র ভবানীপুরে অমিতের রোড শো’র আয়োজন একটা বিশেষ তাৎপর্য এনে দিচ্ছে।
তবে শুক্রবার থেকে রাজ্যে আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হয়ে গিয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কমিশন জানিয়েছে এ বার রোড শো’র ক্ষেত্রে সর্বাধিক পাঁচটি গাড়ি ব্যবহার করা যাবে।
এ দিকে নবান্ন দখলের লড়াইয়ের জন্য হিন্দুত্বের ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর’ যোগী আদিত্যনাথও আসতে পারেন রাজ্যে। ২ মার্চ মালদার গাজোলে সভা করার কথা তাঁর। অন্যদিকে, ৭ মার্চের ব্রিগেড সমাবেশের পর মোদীকে দিয়ে উত্তরবঙ্গেও সভা করাতে চাইছে বিজেপি।
পশ্চিমবঙ্গে ৮ দফায় ভোট, কলকাতায় ভোট ২৬ ও ২৯ এপ্রিল
কলকাতা
শুধু দড়ি বেঁধে ম্যানহোলের কাজ করতে নেমে কুঁদঘাটে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, মৃত ৪ শ্রমিক
বেশ কিছুদিন ধরেই কুঁদঘাট এলাকায় ম্যানহোল পরিষ্কারের কাজ চলছিল।

কলকাতা : উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়া শুধুমাত্র দড়ি বেঁধে ম্যানহোল পরিষ্কার করতে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটল খাস কলকাতায়। মারা গেলেন চার শ্রমিক।
বেশ কিছুদিন ধরেই কুঁদঘাট এলাকায় ম্যানহোল পরিষ্কারের কাজ চলছিল। বৃহস্পতিবারও ওই এলাকায় কাজের জন্য ম্যানহোলের ভিতর নেমেছিলেন ওই চার শ্রমিক। বেশ খানিকক্ষণ ধরে তাঁরা কাজও করছিলেন। কিন্তু হঠাৎ জল চলে আসায় তোড়ে ভেসে যান ওই শ্রমিকরা।
এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ শ্রমিকদের চিৎকার শুনতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা খবর দেন দমকল ও পুলিশে।
দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান দমকল আধিকারিকরা। চারজনকে উদ্ধার করা গেলেও উদ্ধারের সময় তারা অচৈতন্য ছিলেন। তড়িঘড়ি তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই শ্রমিকদের মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, শুধুমাত্র দড়ি বেঁধে শ্রমিকরা ম্যানহোলের নিচে নেমেছিলেন। তাদের কাছে ছিল না কোন নিরাপত্তার সরঞ্জাম।
অভিযোগ উঠছে জল সরবরাহ বন্ধ না কারণে এই বিপত্তি ঘটেছে।
আরও পড়ুন : ব্যয় বেড়েছে পরিবহণে, এক ধাক্কায় অনেকটাই বাড়ছে প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম
-
রাজ্য2 days ago
ব্রিগেড সমাবেশ: দরকারে ‘শান্তিনিকেতন’ বাড়ি নিলাম করে প্রতারিত মানুষের টাকা ফেরত, হুঁশিয়ারি মহম্মদ সেলিমের
-
রাজ্য2 days ago
পশ্চিমবঙ্গে ফিরতে পারে তৃণমূল সরকার, কী বলছে সমীক্ষা
-
ভ্রমণের খবর2 days ago
দোলেই ভোট! পর্যটন ব্যবসায়ে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কায় হতাশ রাঢ়বঙ্গ
-
ফুটবল2 days ago
পাঁচ গোল করেও ওড়িশার কাছে ছয় গোলের মালা পরল ইস্টবেঙ্গল