খবরঅনলাইন ডেস্ক: ভারতের গণেশ উৎসব একটি জনপ্রিয় উৎসব। মহারাষ্ট্রে এই উৎসব খুবই ধুমধাম করে পালিত হলেও বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জায়গাতে তো বটেই, দেশের বাইরে বিভিন্ন দেশেও গণেশপুজোর ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। এই উৎসবের সঙ্গে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
১৮৯৪ সালে লোকমান্য বালগঙ্গাধর তিলক প্রথম সর্বজনীন অর্থাৎ বারোয়ারি গণেশ উৎসবের প্রচলন করেন। এর আগে মহারাষ্ট্রে ঘরে ঘরে গণেশপুজো অনুষ্ঠিত হত। পরিবারের লোকেরা মিলে নিজেদের মতো করে ঘরোয়া ভাবে এই পুজো করত।
এই গণেশ পুজোকে বারোয়ারি করার পেছনে একটি উদ্দেশ্য ছিল বালগঙ্গাধর তিলকের। এই সময় ইংরেজ শাসন চলছে গোটা ভারতবর্ষ জুড়ে। আইন করে ভারতীয়দের একত্রিত হওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল ইংরেজ সরকার। পাঁচ জন বা তার বেশি ভারতীয় নাগরিক একত্রিত হলে বা জমায়েত করলেই তাদের বিনা বাধায় গ্রেফতার করতে শুরু করেছিল ইংরেজ পুলিশ। শুধু গ্রেফতারিই নয়, চলত অকথ্য অত্যাচার। সঙ্গে বন্দেমাতরম গান গাওয়াও এক প্রকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। ফলে সাধারণ ভারতীয়দের মধ্যে ভীতি তৈরি হয়েছিল। ভেতরে ভেতরে ফুঁসছিলেন তাঁরা। এই পরিস্থিতির যোগ্য জবাব দিতে ও তার প্রতিবাদ করে ঘুরে দাঁড়াতে এগিয়ে এলেন লোকমান্য তিলক।
তিলকই গণেশ চতুর্থী উপলক্ষ্যে মহারাষ্ট্রের পুনেতে বারোয়ারি গণেশপুজোর আয়োজন করলেন। দশ দিন টানা উৎসব চলার পর গণেশঠাকুরের বিসর্জন হল। তার পর থেকেই টানা দশ দিন ধরে বারোয়ারি গণেশপুজোর প্রচলন হল।
লোকমান্য তিলকের উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয়দের এক করা। জাতিভেদের অন্ধকারকে দূর করা। ব্রিটিশবিরোধী জাতীয় আন্দোলনকে সুসংগঠিত ও সংবদ্ধ করা। তিনিই গণেশপুজোকে জাতীয় উৎসবে পরিণত করেন, নাম দেন গণপতি উৎসব।