দঃ ২৪ পরগনা
এ বারেও সাড়ম্বরে পূজা সাবর্ণদের মা চণ্ডীর, তবে বড়িশার মেলা হচ্ছে না
সন্তোষ রায় চৌধুরীর বংশধর মহেশচন্দ্র রায় চৌধুরী ১৭৯২ সালে নিজের বসতবাড়িতে শ্রীশ্রীচণ্ডীর আরাধনা শুরু করেন।


শুভদীপ রায় চৌধুরী
আজ ৬ পৌষ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, শুক্লপক্ষের অষ্টমী তিথি। ভোরেই শুরু হয়ে গিয়েছে বড়িশায় সাবর্ণদের চণ্ডীপুজো।
সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবারের ঐতিহ্য এবং পরম্পরা বহু দিনের। কলকাতা-সহ সমগ্র দক্ষিণবঙ্গের তৎকালীন সমাজপতি ছিলেন তাঁরা, তাঁদের জমিদারিও ছিল বিশাল অঞ্চল জুড়ে। এই বংশেরই প্রতিষ্ঠিত বহু মন্দিরও রয়েছে, যেমন কালীঘাট, করুণাময়ী, ময়দা কালীবাড়ি, বড়িশার অন্নপূর্ণামন্দির ইত্যাদি। সাবর্ণদের প্রতিষ্ঠিত চণ্ডীপুজোও আজ সর্বজনবন্দিত। সেই পুজোর ইতিহাস ও ঐতিহ্য পরিবারের গৌরবকে আরও তরান্বিত করে।
বলা বাহুল্য সাবর্ণদের মতন প্রভাব এবং প্রতিপত্তি খুব কম জমিদার পরিবারের ছিল। সে জন্যই শ্রীশ্রীঠাকুর রামকৃষ্ণদেব বলেছেন, “এঁরা দক্ষিণেশ্বরের সাবর্ণ চৌধুরী। এঁদের প্রতাপে বাঘে-গরুতে এক ঘাটে জল খায়। এঁরা লোকের জাত দিতে নিতে পারতেন….”।
কবে শুরু হল চণ্ডীর আরাধনা
গৌড়ের রাজা আদিশূর কাহ্নকুব্জ বা কনৌজ থেকে যে পাঁচ ব্রাহ্মণকে এই বঙ্গে নিয়ে আসেন তাঁদের একজন হলেন বেদগর্ভ। সেই বেদগর্ভের অধস্তন পঁচিশতম পুরুষ কেশবরাম রায় চৌধুরী জমিদারি দেখাশোনার সুবিধার জন্য ১৭১৬ সালে দমদম থেকে বড়িশায় চলে আসেন। কেশবরামের চতুর্থ পুত্র ছিলেন সন্তোষ রায় চৌধুরী, যিনি কালীঘাট মন্দির তৈরি করেছিলেন। সেই সন্তোষ রায় চৌধুরীর বংশধর মহেশচন্দ্র রায় চৌধুরী ১৭৯২ সালে নিজের বসতবাড়িতে শ্রীশ্রীচণ্ডীর আরাধনা শুরু করেন। সাবর্ণদের প্রতিষ্ঠিত এই চণ্ডীপুজো কলকাতা-সহ সমগ্র পশ্চিমবঙ্গে আজ এক মহোৎসবে পরিণত হয়েছে।

সন্তোষ রায় চৌধুরী নিজ বসতবাড়ি সংলগ্ন পুকুরে স্নান করতে গিয়ে পেয়েছিলেন একটি অষ্টধাতুর কলশি। তিনি সেই কলশিটি বসতবাড়ির উঠোনে রেখে দিয়েছিলেন। তিন দিন বাদে তিনি দেবীকে প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্নাদেশ পেলেন অষ্টধাতুর কলশিতে এবং বছরে একটি বার মৃন্ময়ী বিগ্রহ এনে পুজো করার আদেশও পেয়েছিলেন তিনি।
পরের দিন সন্তোষবাবু ভাটপাড়ার পণ্ডিতদের কাছে গিয়ে তাঁদের সব কথা বললেন। তাঁরা বিধান দিলেন, ইনি দেবী চণ্ডী। পূজার সমস্ত নিয়মবিধি জেনে তিনি দুর্গাপঞ্চমীতে তাঁকে প্রতিষ্ঠা করেন। সেই থেকে দুর্গাপুজোর পঞ্চমীর দিন চণ্ডীবাড়িতে মায়ের বার্ষিক জন্মতিথি পালন করা হয়। মহেশচন্দ্র রায় চৌধুরীর পুত্র হরিশচন্দ্র রায় চৌধুরী বার্ষিক পূজার জন্য মন্দির তৈরি করে দেন বসতবাড়ি সংলগ্ন জমিতেই।
অগ্রহায়ণ মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমীতে পুজো
প্রতি বছর মকর সংক্রান্তির শেষে দেবগণের উত্তরায়ণ পরিক্রমা শুরু হয়। সুপ্তা দেবীকে জাগ্রত করার পক্ষে এই সময়টি বিশেষ উপযুক্ত। সে কারণে অগ্রহায়ণ মাসের শুক্লপক্ষের অষ্টমীতে শ্রীশ্রীচণ্ডীর পূজা অনুষ্ঠিত হয় বড়িশায়।
ভট্টপল্লির পণ্ডিতগণের সহায়তায় শ্রীচণ্ডীদেবীর মূর্তিটি সম্পূর্ণ ধ্যানমন্ত্র অনুযায়ী গঠিত হয়। তিনি নরমুণ্ডমালা বিভূষিতা, ত্রিনয়না, রক্তবসনা, তাঁর চারটি হাতে পুস্তক, রুদ্রাক্ষমালা, বরমুদ্রা এবং অভয়মুদ্রা। দেবী বন্ধুক পুষ্পবর্ণা এবং পঞ্চ অসুরের মুণ্ডের আসনে অধিষ্ঠিতা। প্রতি বছর ধুমধাম করে দেবীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

এই বিগ্রহ তৈরির আগে শিল্পীরা চণ্ডীপুকুরে স্নান করে বিগ্রহের একটি কাঠ নিয়ে সাবর্ণদের প্রতিষ্ঠিত মঙ্গলচণ্ডীর কাছে পুজো দিয়ে আসেন। সেই কাঠটি পুজোর আগে অবধি চণ্ডীবাড়িতেই পুজো হয়। অষ্টমীর দিন ভোরবেলা পরিবারের সদস্য সেই কাঠটি নিয়ে গিয়ে মন্দিরে মূল বিগ্রহের সঙ্গে বেঁধে দিলে তবেই শুরু হয় পুজো।
এ ছাড়া অষ্টমীর দিন সাবর্ণদের বাড়ি থেকে মন্দিরে ভোগ নিয়ে যাওয়ারও বিধান রয়েছে। পুজোর দিন মাকে রাজবেশে সাজানো হয়। নানা অলংকারে সেজে তিনি জ্যোতির্ময়ী রূপে বিরাজ করেন মন্দিরে।
এ বছর করোনা ভাইরাসের কারণে সমস্ত বিধিনিষেধ মেনেই পুজো হবে বলে জানা গিয়েছে। প্রতি বছর এই পুজোকে কেন্দ্র করে বিরাট মেলার আয়োজন করা হয়। সেই মেলাও এ বার হবে না বলেই সূত্রের খবর। তবে নিষ্ঠার সঙ্গে আজও পুজো হয়ে আসছে বড়িশায়।
আরও পড়ুন: ঐতিহ্যের হৈমন্তীপর্ব: সাবর্ণদের আটচালায় জগদ্ধাত্রী পুজো হচ্ছে ১৯৬৬ থেকে
দঃ ২৪ পরগনা
গুজরাত রেল পুলিশ ক্যানিং থেকে উদ্ধার করল ৮ কেজি চোরাই সোনার গয়না
প্রায় পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের আট কেজি সোনার গয়না উদ্ধার করল গুজরাত রেল পুলিশ।


উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, সুন্দরবন: বারুইপুর জেলা পুলিশের ক্যানিং থানার সহযোগিতায় গুজরাত রেল পুলিশ উদ্ধার করল আট কেজি চোরাই সোনার গয়না। এই ঘটনায় ধৃত দুই।
ঘটনায় প্রকাশ,বারুইপুর পুলিশ জেলার আওতাধীন ক্যানিং থানার পুলিশের সহযোগিতায় প্রায় আট কেজি সোনার গয়না-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে গুজরাত রেল পুলিশের স্পেশাল টিম।
ধৃতরা হল অশোক সরকার ও বিজন হালদার। ধৃতদের বাড়ি ক্যানিংয়ের বাহিরবেনা ও থুমকাঠি এলাকায়। উদ্ধার হওয়া সোনার গয়নার বাজার মূল্য প্রায় পাঁচ কোটি টাকা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৮ এপ্রিল গুজরাতে একটি চলন্ত ট্রেন থেকে ওই বিপুল পরিমাণ সোনার গয়না চুরি হয়। চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তদন্ত শুরু করে গুজরাত রেল পুলিশ। তারা সূত্র মারফত খবর পায় ধৃত ওই দু’জনের। তাদের বাড়ির ঠিকানাও জোগাড় করে গুজরাত রেল পুলিশ। শুরু হয় তদন্ত।
তদন্তের অগ্রগতি হতেই গুজরাত রেল পুলিশ বারুইপুর পুলিশ জেলার অধীন ক্যানিং থানার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। সেই মতো শুক্রবার রাতেই গুজরাত রেল পুলিশ রাজ্যে আসে। শুক্রবার রাতেই ক্যানিং থানার পুলিশের সহযোগিতায় অভিযুক্তদের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়।
উদ্ধার হয় প্রায় পাঁচ কোটি টাকা মূল্যের আট কেজি সোনার গয়না। ঘটনায় দুই অভিযুক্ত বিজন হালদার ও অশোক সরকারকে গ্রেফতার করে গুজরাত পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
আরও পড়তে পারেন: ‘ফোন ট্যাপ করা হচ্ছে, সিআইডি তদন্তের নির্দেশ’ দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
দঃ ২৪ পরগনা
সুন্দরবনের লোকালয়ে ঢুকে পড়ল বাঘ, এলাকায় আতঙ্ক
চৈত্রের প্রখর রোদে শুক্রবার সকালে সুন্দরবন কোস্টাল থানা এলাকায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার দেখতে পেয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েলেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা।


উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, সুন্দরবন: লোকালয়ে ঢুকে পড়ল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, এলাকায় আতঙ্ক। চৈত্রের প্রখর রোদে শুক্রবার সকালে সুন্দরবন কোস্টাল থানা এলাকায় রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার দেখতে পেয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েলেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা।
ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবন কোস্টাল থানার অন্তর্গত লাহিড়িপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চরঘেরি গ্রামে। স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে চরঘেরি গ্রাম সংলগ্ন গোমর নদীতে একদল মৎস্যজীবী মাছ ধরছিল। এমন সময় একটি পুর্ণাঙ্গ বয়সের বাঘ ঝিলা ৪ জঙ্গল থেকে নদী পার হয়ে লোকালয়ের দিকে পা বাড়ায়। তখনই মৎস্যজীবীরা চিৎকার করে গ্রামের লোকদের জড়ো করে।
মুহূর্তের মধ্যে খবর চাউর হয়ে যায় গ্রামের ভিতর। খবর পৌঁছে যায় সজনেখালি রেঞ্জ অফিসে। সঙ্গে সঙ্গে বন বিভাগের কর্মীরা এসে জাল দিয়ে এলাকা ঘিরে ফেলেন। আর এমন খবরে উৎসুক জনতার ভিড় জমে যায়। গ্রামবাসীদের ভিড় দেখে ও চিৎকার শুনে বাঘটি আশ্রয় নেয় গ্রাম লাগোয়া ম্যানগ্রোভ অরণ্যের ভিতরে।

বনবিভাগের কর্মী ও গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে বাজি পটকা ফাটিয়ে আওয়াজ করেন। ভয় দেখানোর চেষ্টা করেন। বেলা ১১টা নাগাদ বাঘটিকে আবার সুন্দরবনের জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন তাঁরা। লোকালয়ে বাঘ আসাকে কেন্দ্র করে চরঘেরি গ্রামের মানুষরা যথেষ্ট আতঙ্কে রয়েছেন।
সুজিত গায়েন ,মধু মণ্ডল,অপু সরদার-সহ একাধিক গ্রামবাসী জানিয়েছেন, “ওই বাঘ আবারও আসতে পারে লোকালয়ে। সে কারণে পরিবার-পরিজনদের নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। তবে এলাকায় বন দফতরের কর্মীরা আছেন”।
আরও পড়তে পারেন: পানীয় জলের কলে বিষ, হাসপাতালে অনেকে, চাঞ্চল্য দক্ষিণ ২৪ পরগনায়
দঃ ২৪ পরগনা
পানীয় জলের কলে বিষ, হাসপাতালে অনেকে, চাঞ্চল্য দক্ষিণ ২৪ পরগনায়
বর্তমানে অনেকেই মথরাপুর গ্রামীণ হাসপাতাল এবং জয়নগর রামকৃষ্ণ গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন।


উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়নগর: দক্ষিণ ২৪ পরগনার লালপুর গ্রামে জলের কলের মধ্যে বিষ মিশিয়ে দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল বৃহস্পতিবার। স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, লালপুর গ্রামে রাতের অন্ধকারে প্রতিটি কলের মধ্যে বিষ দিয়ে দেওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, লালপুর গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা ওই জল খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। বর্তমানে অনেকেই মথরাপুর গ্রামীণ হাসপাতাল এবং জয়নগর রামকৃষ্ণ গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন।
ঘটনায় প্রকাশ ,লালপুর গ্রামের প্রতিটি কলে দেওয়া হয় বিষ। কিছু না বুঝে ওঠার আগে বৃহস্পতিবার সকালে অনেকেই জল নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। ওই জল খেয়ে অনেকে কিছুটা গন্ধ পেলেও সেই জল তারা খেয়ে ফেলে। কিছুক্ষণ পর শুরু হয়ে যায় বমি। ওই গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দারাই এখন হাসপাতালে ভরতি বলে জানা গিয়েছে।
অবস্থা খারাপ দেখে গ্রামের বাসিন্দারা লালপুর মসজিদের সামনে বিক্ষোভ দেখান। রাস্তার উপর বাঁশ এবং খুঁটি ফেলে রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। ঘণ্টা খানেক পর স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকরা এসে উপস্থিত হন। তার আগে লালপুর গ্রামে এসে উপস্থিত হন স্থানীয় বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী অলক জলদাতা।

অলকবাবু বলেন, এটা সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে কোনো ব্যক্তি বদমায়েশি করে এই অপকর্ম করেছে। এখন জনগণ তৃণমূল কংগ্রেসের ওপর দোষারোপ করছেন।
সমস্ত কলগুলির এই অবস্থা দেখে প্রশাসন জলের গাড়ির ব্যবস্থা করে দেয়। যতক্ষণ না সমস্ত কল পরিষ্কার করা হচ্ছে তত দিন পর্যন্ত প্রশাসনের জলের গাড়ির ব্যবস্থা থাকবে। এলাকায় পুলিশ পিকেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রশাসনের আশ্বাসের পরে বিক্ষোভ তুলে নেন গ্রামবাসীরা।
প্রসঙ্গত, লালপুর এলাকাটি রায়দিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত।
আরও পড়তে পারেন: তিন দফার ভোটেই ফলাফল বোঝা যাচ্ছে, বেহালার ধন্ধুমার কাণ্ডের পর টালিগঞ্জে বললেন মিঠুন চক্রবর্তী
-
রাজ্য12 hours ago
Bengal Polls Live: পৌনে ৬টা পর্যন্ত ভোট পড়ল ৭৮.৩৬ শতাংশ
-
শিক্ষা ও কেরিয়ার24 hours ago
ICSE And ISC Exams: দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা পিছিয়ে দিল আইসিএসই বোর্ড
-
ক্রিকেট1 day ago
IPL 2021: দীপক চাহরের বিধ্বংসী বোলিং, চেন্নাইয়ের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ল পঞ্জাব
-
মুর্শিদাবাদ16 hours ago
Coronavirus Second Wave: কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন রাজ্যের আরও এক প্রার্থী