আম জনতা থেকে সেলেব্রিটি, সকলেই ফলের রাজা আমের ভক্ত। গরমকালে সুমিষ্ট ফল আম ভালোবাসে না এমন মানুষ বিরল। প্রতি বছর দিল্লি সরকার আর দিল্লি ট্যুরিজম অ্যান্ড ট্রান্সপোর্টেশন ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন যৌথ উদ্যোগে আম উৎসব পালন করে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। সেই উৎসবে সেরা আমচাষির পুরস্কার জিতেছেন বাঁকুড়ার নিত্যানন্দ গড়াই।
সেই ১৯৮৭ সাল থেকে হয়ে আসছে দিল্লি ইন্টারন্যাশনাল ম্যাঙ্গো ফেস্টিভ্যাল। এই উদ্যোগে শামিল হয় ন্যাশনাল হর্টিকালচার বোর্ড, নিউদিল্লি মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিল, এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড প্রসেসড ফুড প্রোডাক্টস এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির মতো নানান সংস্থাও। প্রতি বছর বিদেশি অনেক সংস্থাও এই উৎসবে যোগ দেয়।
আম উৎসবের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন আমরসিকরা। প্রতি বছর ১১০০-রও বেশি প্রজাতির জনপ্রিয় ও বিরল প্রজাতির আমের দেখা মেলে এই আম উৎসবে। এ বছর ৫ থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত দিল্লির জনকপুরীতে দিল্লি হাটে বসেছিল আম উৎসবের আসর। এ বছর ৩৩তম বছরে পা দিল দিল্লির আম উৎসব।
প্রতি বছর সবচেয়ে বড়ো বা ভারী ওজনের আমকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। পুরস্কৃত করা হয় সেই আমচাষিকে। এ বছর দিল্লির ম্যাঙ্গো ফেস্টিভ্যালে সেরা আমচাষির পুরস্কার জিতেছেন বাঁকুড়ার নিত্যানন্দ গড়াই। তিনি ৩২ রকমের বিরল প্রজাতির আম চাষ করেছেন নিজের বাগানে। এ বছর নিজের বাগানে চাষ করা বিরল ও দামি প্রজাতির মিয়াজাকি আম তিনি এক-একটা বিক্রি করেছেন ৫ হাজার টাকায়। এ ছাড়াও কিং অফ চাকাপাট আমের এক ইউনিট হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এটি তাইল্যান্ডের আম। কিং অফ চাকাপাট আমের ওজন হয় ৭০০-১৫০০ গ্রামের মধ্যে। এ ছাড়াও রেড পামার ম্যাঙ্গো নামে আরেক অপরিচিত আমের এক ইউনিট বাঁকুড়ার আমচাষি বিক্রি করেন ৬০০ টাকায়। লালচে হলুদ রঙের এই আম হয় আমেরিকার সাউথ ফ্লোরিডায়। নিজের বাগানে এই ৩ প্রজাতির আম ছাড়াও তিনি নাম ডক মাই, থাই খিয়েও সাওয়েই, আম্রপালির মতো নানান রকম প্রজাতির আম চাষ করছেন।
নিত্যানন্দবাবুর বাগানে ১০৫ রকমের প্রজাতির আম রয়েছে। এর মধ্যে থাই নম ডক মাই, রাঈদ, খিয়েও সাওয়েই, ওক থং, আমেরিকান কেন্ট, টমি অ্যাটকিন্স, আতাউলফো, গৌরমতী, বাংলাদেশের হাড়িভাঙা, থাই কেজি, থাই ৪ কেজি, বিএন ৭, আপেল, ইরউইন পার্পল, জর্দা, মল্লিকা, কেসরের মতো ৪০ রকমের প্রজাতির আমের এ বার ফলন হয়েছে।
প্রতি বছর দিল্লির ম্যাঙ্গো ফেস্টিভ্যালে হিমসাগর, গোপালভোগ, লক্ষ্মণভোগ, মল্লিকা, খিরসাপটা, বিমলি, কোহিতুরের মতো বাংলার নানান প্রজাতির আমের পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের আলফানসো, কর্নাটকের তোতাপুরী, বাদামি, গুজরাতের কেশর, উত্তরপ্রদেশের দশেরি, চৌসা, ল্যাংড়া, নীলমের মতো নানান রকম প্রজাতির আমের দেখা মেলে। আম উৎসবে বিভিন্ন রকমের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতাও হয়।
আরও খবর