বর্ষাতেও পেঁয়াজ চাষ সম্ভব! সোনারপুরের কৃষি বিশেষজ্ঞদের উদ্যোগে সাফল্য
পশ্চিমবঙ্গে বর্ষাকালে পেঁয়াজ চাষ করা প্রায় অসম্ভব বলে মনে করা হত। কিন্তু এবার সেই ধারণা বদলে দিয়েছেন সোনারপুরের শস্যশ্যামলা কৃষি বিকাশ কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ প্রসেনজিৎ কুণ্ডু এবং কৃষ্ণেন্দু রায়। তাঁদের উদ্যোগে পরীক্ষামূলকভাবে বর্ষাকালে পেঁয়াজ চাষ করে সফল হয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কয়েকজন কৃষক।
নতুন তিন প্রজাতির সাফল্য
গত বছর বর্ষার সময় ভীমা ডার্ক রেড, ভীমা রাজ এবং বসন্ত ৭৮০ নামে তিনটি নতুন প্রজাতির পেঁয়াজের চাষ শুরু করা হয়েছিল। ভাঙড় ১, ক্যানিং ১ এবং বারুইপুরে প্রায় দশ বিঘা জমিতে এই চাষ করা হয়। চলতি মাসে দেখা গেছে, এই তিন প্রজাতির পেঁয়াজ দুর্দান্ত ফলন দিয়েছে। মোট উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৩০০ কুইন্টাল, যা বর্ষাকালে পেঁয়াজ চাষের ক্ষেত্রে বড় সাফল্য।
বর্ষার চাষে বিশেষ ব্যবস্থা নয়
প্রসেনজিৎ কুণ্ডু জানান, “বর্ষাকালে রাজ্যে সাধারণত পেঁয়াজ চাষ হয় না, ফলে বাইরের রাজ্য থেকে আমদানি করতে হয়। কিন্তু আমাদের পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই তিনটি প্রজাতি বর্ষাতেও ভালো ফলন দেয়। বাড়তি তেমন কিছু ব্যবস্থার দরকার নেই, শুধু জল যাতে জমে না থাকে, সেটাই নিশ্চিত করতে হবে।”
উদ্যানপালন দপ্তরের সহযোগিতা
এই চাষের জন্য পশ্চিমবঙ্গ উদ্যানপালন দপ্তরের আর্থিক সহায়তা ছিল। পরীক্ষার রিপোর্ট ইতোমধ্যে দপ্তরে জমা পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সাফল্য আগামী দিনে রাজ্যের কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে। কৃষকরাও জানিয়েছেন, তাঁরা উৎপাদিত পেঁয়াজ বাজারে বিক্রি করবেন এবং ভবিষ্যতে বর্ষাকালে আরও বেশি পরিমাণে চাষের পরিকল্পনা রয়েছে।
এই গবেষণার ফলে আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গে পেঁয়াজ চাষে মৌসুমভিত্তিক সীমাবদ্ধতা দূর হতে পারে বলে মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা।