সূর্য দেবতা ও ছটি মাইয়াকে নিবেদিত এক গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু উৎসব ছট পুজো। এই চারদিনের পুজোয় বহু মানুষ গভীর নিষ্ঠা ও ভক্তিভরে অংশগ্রহণ করে থাকেন। সূর্য দেবতাকে অর্ঘ্য প্রদান করে পরিবার ও সন্তানের মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করা হয়। এই পুজোকে সূর্য ষষ্ঠী, ডালা ছট বা ছট পর্ব নামেও ডাকা হয়। আসুন, জেনে নিই ২০২৪ সালের ছট পুজোর দিনক্ষণ, পুজো রীতি এবং এর গুরুত্ব।
ছট পুজো ২০২৪: দিনক্ষণ
প্রথম দিন – নহাই খাই – ৫ নভেম্বর, ২০২৪
দ্বিতীয় দিন – খারনা – ৬ নভেম্বর, ২০২৪
তৃতীয় দিন – সন্ধ্যা অর্ঘ্য – ৭ নভেম্বর, ২০২৪
চতুর্থ দিন – উষা অর্ঘ্য, পরাণ – ৮ নভেম্বর, ২০২৪
ছট পুজো ২০২৪: মহরত ও রীতি
প্রথম দিন – নহাই খাই
ছট পুজোর সূচনা হয় নহাই খাই পর্বের মাধ্যমে। এই দিন সকালে উপবাসকারী মহিলারা স্নান করে নতুন পোশাক পরিধান করেন এবং সূর্য দেবতাকে জল অর্পণ করেন। এরপর তাঁরা উপবাস শুরু করেন এবং সৎভিক খাবার গ্রহণ করেন। নহাই খাইয়ের খাবারে লাউ, কুমড়া, ছোলা ডাল ও ভাত থাকে, যা রসুন ও পেঁয়াজ ছাড়া রান্না করা হয়। এই দিন সূর্যোদয় হবে সকাল ৬:৩৬ টায় এবং সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৫:৩৩ টায়।
দ্বিতীয় দিন – খারনা
খারনা ছট পুজোর দ্বিতীয় দিন। এই দিন উপবাসকারীরা সারাদিন উপবাস করেন এবং রাতে গুড়, চাল ও দুধ দিয়ে তৈরি ক্ষীর গ্রহণ করেন। খারনার পর থেকে উপবাসকারীরা ৩৬ ঘণ্টার জন্য জলও ত্যাগ করে কঠোর উপবাস পালন করেন। খারনার দিন অর্থাৎ ৬ নভেম্বর সূর্যোদয় হবে সকাল ৬:৩৭ টায় এবং সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৫:৩২ টায়।
তৃতীয় দিন – সন্ধ্যা অর্ঘ্য
ছট পুজোর তৃতীয় দিন সন্ধ্যা অর্ঘ্যের মাধ্যমে সূর্য দেবতাকে অর্ঘ্য প্রদান করা হয়, যাকে সন্ধ্যা অর্ঘ্য বলা হয়। এই বছর ৭ নভেম্বর সন্ধ্যা অর্ঘ্য প্রদান করা হবে। এই দিন সূর্যোদয় হবে সকাল ৬:৩৮ টায় এবং সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৫:৩২ টায়।
চতুর্থ দিন – উষা অর্ঘ্য
ছট পুজোর চতুর্থ ও শেষ দিনে, উষা অর্ঘ্য বা ভোরবেলায় সূর্য দেবতাকে অর্ঘ্য প্রদান করা হয়। এই দিন উপবাসকারী মহিলারা পানিতে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয়ের সময় অর্ঘ্য প্রদান করেন এবং সেই দিনই উপবাস ভঙ্গ করেন। উষা অর্ঘ্য দেওয়া হবে ৮ নভেম্বর। সূর্যোদয় হবে সকাল ৬:৩৮ টায় এবং সূর্যাস্ত হবে সন্ধ্যা ৫:৩১ টায়।
ছট পুজো ২০২৪: গুরুত্ব
ছট পুজো সূর্য দেবতা ও ছটি মাইয়ার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে পালন করা হয়। যা জীবনের শক্তি, জ্ঞান এবং প্রাচুর্যের প্রতীক। সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তকে সম্মান জানিয়ে পালন করা এই উৎসব প্রাকৃতিক শক্তির প্রতি গভীর সম্মান প্রদর্শন করে। ভক্তরা পরিবারের সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন এবং সন্তানের মঙ্গল কামনায় ছটি মাইয়ার কাছে প্রার্থনা করেন।