মকর সংক্রান্তি ভারতবর্ষের একটি প্রধান উৎসব। যা সাধারণত প্রতিবছর ১৪ বা ১৫ জানুয়ারি পালিত হয়। এই উৎসব শুধুমাত্র ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে নয়, বৈজ্ঞানিক দিক থেকেও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। মকর সংক্রান্তি সূর্য, পৃথিবী এবং ঋতুর মধ্যে সম্পর্কের প্রতিফলন ঘটায়। আসুন, এই উৎসবের ধর্মীয় ও বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত জানি।
ধর্মীয় গুরুত্ব
১. সূর্য পুজো:
মকর সংক্রান্তির দিন সূর্যদেবের পূজা করা হয়। এই দিন সূর্য মকর রাশিতে প্রবেশ করে, যা উত্তরায়ণ নামে পরিচিত। এটি শুভ শক্তি ও ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রতীক।
২. স্নান:
এই দিনে গঙ্গা, যমুনা, গোদাবরী প্রভৃতি পবিত্র নদীতে স্নান অত্যন্ত শুভ মনে করা হয়। এটি পাপ মোচনের দিন হিসেবে বিবেচিত।
৩. দান-পুণ্য:
তিল, গুড়, চাল এবং বস্ত্র দান করা এই দিনে বিশেষ ফলদায়ক বলে মনে করা হয়।
৪. বিভিন্ন রাজ্যে ভিন্ন উদযাপন:
মকর সংক্রান্তি ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন নামে পালিত হয়:
- তামিলনাড়ুতে: পোঙ্গল
- পঞ্জাবে: লোহড়ি
- গুজরাতে: উত্তরায়ণ
- উত্তরপ্রদেশে: খিচড়ি
বৈজ্ঞানিক গুরুত্ব
১. সূর্যের উত্তরায়ণ যাত্রা:
মকর সংক্রান্তির দিনে সূর্য দক্ষিণায়ণ থেকে উত্তরায়ণ অভিমুখে যায়। এর মানে হল সূর্য উত্তর গোলার্ধের দিকে ঢলে পড়ে, যার ফলে দিন বড় এবং রাত ছোট হতে শুরু করে।
২. ঋতু পরিবর্তন:
মকর সংক্রান্তি থেকে শীত ঋতুর অবসান এবং বসন্ত ঋতুর সূচনা ঘটে। এই সময় কৃষিকাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ফসল কাটার সময় শুরু হয়।
৩. সূর্যালোকের প্রভাব:
এই সময় সূর্যের আলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
৪. জ্যোতির্বিদ্যা তাৎপর্য:
মকর সংক্রান্তির দিনে সূর্যের অবস্থান মকর রেখার দিকে থাকে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্যোতির্বিদ্যার ঘটনা, কারণ এটি বছরের প্রথম সৌর গমনকাল।