অনেকেরই বাতিক থাকে সামান্য অসুখেও সঙ্গে সঙ্গে উপসর্গ মিলিয়ে গুগলে গিয়ে দেখা তাঁর কোন রোগ হয়েছে। জানেন কি এই বদভ্যাসের কারণে অজান্তেই তাঁরা কত বড়ো মানসিক সমস্যা ডেকে আনছেন? অনলাইনে এ রকম উপসর্গ দেখে, ডাক্তার না দেখিয়ে নিজেই ডাক্তারি ফলানো কত বড়ো ক্লিনিক্যাল ডিজঅর্ডার?
মনোবিশারদদের মতে, অসুখ হলেই মানসিক উদ্বেগে ভুগে উপসর্গ দেখে গুগল করা মনের মধ্যে অদ্ভুত উৎকণ্ঠা তৈরি করে। অনলাইনে অসুখের উপসর্গ দেখে মনে তৈরি হওয়া উদ্বেগকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলে সাইবারকোন্ড্রিয়া (Cyberchondria)। পিউ রিসার্চ সেন্টারের (Pew Research Centre) গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৭২% ইন্টারনেট ব্যবহারকারী জানিয়েছেন তাঁরা রোগভোগের ক্ষেত্রে ডক্টর গুগলের ওপর নির্ভর করেন। এতে তীব্র মানসিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়। উদ্বেগের কারণে সামান্য মাথার যন্ত্রণাতেও মনে হয় যেন ব্রেন টিউমার হয়েছে।
ডিজিটাল যুগে অকারণ অনাবশ্যক গুগল করাই তৈরি করছে অসুখ নিয়ে মানসিক উদ্বেগ। নিজে গুগল করে কোন রোগ হয়েছে এই প্রবণতা থেকে বাড়ছে উদ্বেগ, পরে যা তীব্র মানসিক সমস্যা ডেকে আনছে। এমনকি ডাক্তারের ওপর ভরসা কমিয়ে দিচ্ছে। রোগ নিয়ে অদ্ভুত সন্দেহবাতিক মন তৈরি হচ্ছে। এতে অসুখ সেরে যাওয়ার বদলে আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। অনেক সময় গুগল দেখে নিজে ওষুধ খাওয়ার ফলে ভুলভাল রোগ চিহ্নিত হচ্ছে। পরিস্থিতি জটিল হয়ে দাঁড়ায়।
সাইবারকোন্ড্রিয়ার উপসর্গ ও পরিণাম
(১) সামান্য অসুখ করলেই সঙ্গে সঙ্গে গুগল করে রোগ দেখার প্রবণতা।
(২) ডাক্তারের পরামর্শ না নিয়ে নিজেই ডাক্তারি ফলানো।
(৩) কঠিন অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
(৪) হৃৎস্পন্দনের হার বেড়ে যায়। মনে ভয় ও উদ্বেগ তৈরি হয়।
(৫) মৃত্যু ভয় গ্রাস করে মনে। স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হয়।
(৬) সব সময় মনে করেন অনলাইনে নিজে যা জেনেছেন তা-ই ঠিক। বাকি সবাই ভুল।
(৭) ডাক্তারের ওপর ভরসা চলে যায়।