সার্স-কোভিড-২ (SARS-CoV-2) ভাইরাসই করোনা সংক্রমণের জন্য দায়ী। এই ভাইরাসঘটিত সংক্রমণই অনেকের ক্ষেত্রে অন্তত ৩০% ডিসলিপিডেমিয়া বা রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে তোলার জন্য দায়ী। আলবার্ট আইনস্টাইন কলেজ অফ মেডিসিনের একদল গবেষকের করা গবেষণায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। দু’ লক্ষেরও বেশি মানুষের ওপর গবেষণা চালিয়ে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন তাঁরায়।
গবেষকরা দেখেছেন করোনা অতিমারি পরবর্তী সময়ে গোটা বিশ্বেই অনেক মানুষের হার্টের অসুখ বাড়ছে। বিশদ ভাবে গবেষণা চালানোর সময় তাঁরা দেখতে পান হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের জন্য দায়ী রক্তের অস্বাভাবিক লিপিড ফ্যাটের মাত্রা বেড়ে যাওয়া। বিশেষ করে বয়স্ক ও টাইপ টু ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ডিসলিপিডেমিয়া বা রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়েছে অস্বাভাবিক ভাবে।
আলবার্ট আইনস্টাইন কলেজ অফ মেডিসিনের মলিকিউলার ফার্মাকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তথা প্রধান গবেষক গায়েটানো সান্তুলি জানান, রক্তনালির ভেতরে থাকা এন্ডোথেলিয়াল কোষ রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। SARS-CoV-2 ভাইরাস এন্ডোথেলিয়াল কোষের কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। তাই করোনায় সংক্রমিত হন বা না-হন প্রত্যেকেরই নিয়মিত কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করে দেখা দরকার। ইতালির নেপলসে দু’ লক্ষ মানুষের ওপর ২০১৭-১৯ আর ২০২০-২২ সালের সময় পরীক্ষা চালানো হয়। দেখা যায়, করোনা সবার মধ্যেই ডিসলিপিডেমিয়া বা রক্তের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে তোলার ঝুঁকি ২৯% বাড়িয়ে তুলেছে। এই ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে। ডায়াবেটিস, স্থুলতা, কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ, সিওপিডি আর উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে ঝুঁকি আরও বেশি পরিমাণে বাড়ে।
অন্য দিকে, আমেরিকার ওরেগন হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কম ঘুমোলে রক্তে ফ্যাটি ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায়। পেটে চর্বি জমতে শুরু করে। যা স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকের মতো অসুখের আশঙ্কা বাড়ায়। গবেষকরা জানান, কম ঘুমোলে পুরুষদের মধ্যে রক্তের ফ্যাটি ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায়। মেটাবলিক সিন্ড্রোম বেড়ে যায়। মহিলাদের ক্ষেত্রে হৃৎস্পন্দনের হার বাড়ে। রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়।