ওয়েবডেস্ক: কানের ব্যথার সমস্যায় আমরা কে পড়িনি বলুন তো? ঠান্ডা লেগে কান কনকন করা, জল ঢুকে গেলে ব্যথা- এ সব তো হয়েই থাকে! সে সব ক্ষেত্রে অনেক সময় চিকিৎসকের পরামর্শও নিই না আমরা। হয় ঘরোয়া টোটকায়, নয় তো ওষুধের দোকান থেকে কিছু একটা নিয়ে এসে কাজ চালিয়ে নিই!
কিন্তু বিশ্ব জুড়ে চিকিৎসকরা বলছেন, কানের ব্যথাকে অবহেলা করলে চলবে না। কেন না, সামান্য একটু কানের ব্যথাই হতে পারে ক্যানসারের উপসর্গ। কী ভাবে, তা-ও খোলসা করে বলছেন তাঁরা।
সেই উপসর্গের বৃত্তান্তে আসার আগে একটা কথা না জানলেই নয়। কানের তিনটি ভাগ থাকে- বহির্ভাগ, মধ্য ভাগ আর অন্তস্থল। এ ভাবেই তিন শ্রেণিতে বিন্যস্ত থাকে আমাদের কানের গঠন। অতএব, উপসর্গ নিয়ে কথা শুরু হোক একেবারে বাইরের দিক থেকেই!
বহির্ভাগ:
বাইরের দিক মানে কানের যেটুকু আমাদের চোখে পড়ে আর কী! চিকিৎসকরা বলছেন, কানের সেই অংশে যদি কোনো মাংসপিণ্ড জন্মায় এবং তা চার সপ্তাহের মধ্যে না সারে, তবে সতর্ক হওয়ার প্রয়োজন আছে। আরও একটু বিশদে গিয়ে জানাচ্ছেন তাঁরা, এই মাংসপিণ্ড সাধারণত হালকা গোলাপি রঙের হয়ে থাকে। তবে, গায়ের রঙ অনুযায়ী তা হালকা বা গাঢ় রঙের হয়। এর উপরের দিকটা শক্ত থাকলেও মাঝে মাঝেই ভিতরের নরম অংশ থেকে পুঁজ বেরনোর মতো রক্তপাত হতে পারে!
মধ্য ভাগ:

মধ্য ভাগ হল কানের ভিতরের সেই অংশ যা আমরা দেশলাই কাঠি বা কানখুঁচুনি বা তুলো মোড়া বাড দিয়ে হামেশাই চুলকে থাকি। কানে ব্যথার প্রসঙ্গ এই মধ্য ভাগেই পড়ে। কম শুনতে পাওয়া, ব্যথা- এ সব হল কানের মধ্যভাগে ক্যানসারের লক্ষণ। এর সঙ্গে রক্ত-মেশা পুঁজ নিসৃত হতেও পারে!
অন্তস্থল:

কানের এই ভাগটায় আমাদের আঙুল তো পৌঁছয় না বটেই, এমনকী এমআরআই বা সিটি স্ক্যান ছাড়া তার ভিতরে কী হচ্ছে, তা বোঝারও উপায় নেই। অভিজ্ঞতা থেকে চিকিৎসকরা বলছেন, বেশ ঘোরতর ব্যথা, প্রায় শুনতে না পাওয়া বা কম শুনতে পাওয়া, ঘুম-ঘুম ভাব, কানের ভিতরে হামেশাই ঝিমঝিম শব্দ শুনতে পাওয়া- এ সব হল অন্তস্থলের কানের ক্যানসারের উপসর্গ।
তবে পাশাপাশি এটাও জানাতে ভুলছেন না চিকিৎসকরা, আপাতদৃষ্টিতে এই সব উপসর্গ থাকলেই চট করে তা ক্যানসারের লক্ষণ বলা যাবে না। তার জন্য কানের বাইরের দিক থেকে একটা কোষ-কলা নিয়ে বায়োপসি করে দেখতে হয়। কানের অন্তস্থল থেকে কোষ-কলা নিয়ে বায়োপসি করা যায় না। সে ক্ষেত্রে কানের ক্ষতি হওয়ার একটা সম্ভাবনা থেকেই যায়! তাই ক্ষান্ত থাকতে হয় বাইরের দিকটা নিয়েই! এ ছাড়া এমআরআই স্ক্যান বা সিটি স্ক্যান করেও সিদ্ধান্তে আসেন চিকিৎসকরা।
তাই অহেতুক ভয় পাবেন না! বরং, ব্যথা হলে একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন! তাতেই যে সব দিক থেকে মঙ্গল!