বড়ো রকমের অস্ত্রোপচার থেকে সেরে ওঠার পর্ব যে কোনো রোগী ও তাঁর পরিজনদের জন্য অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পরিস্থিতি। কারণ, সামান্য ভুলচুকও বড়ো রকমের শারীরিক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। আবার সব ঠিক হয়ে যাবে তো?, শারীরিক ভাবে একেবারে সুস্থ হয়ে উঠতে পারব তো? এরকম নানা চিন্তার দোলাচল মানসিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা তৈরি করে রোগীর মনে। তাই এরকম সংকটজনক পরিস্থিতিতে সংগীত অনেকটাই উপকার বয়ে নিয়ে আসতে পারে। ক্যালিফোর্নিয়া নর্থস্টেট ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ মেডিসিনের গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য।
গবেষণায় দেখা গেছে, সদ্য অস্ত্রোপচার সেরে ওঠার পর রোগী যদি রোজ গান শোনেন তা হলে তাঁর অস্বাভাবিক হৃৎস্পন্দনের হার কমে, মানসিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দূর হয়, যন্ত্রণা কমে। নিয়মিত গান শুনলে স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের নিঃসরণ কমে। রোগী তাড়াতাড়ি শারীরিক যন্ত্রণা কাটিয়ে উঠতে পারেন।
আমেরিকার সান ফ্রাসিস্কোয় অনুষ্ঠিত ‘আমেরিকান কলেজ অফ সার্জনস ক্লিনিক্যাল কংগ্রেস, ২০২৪’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রথম গবেষণা রিপোর্ট মেটা অ্যানালিসিসের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। ক্যালিফোর্নিয়ার নর্থস্টেট ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ মেডিসিনের অধ্যাপক এলডো ফ্রেজা জানান, অস্ত্রোপচারের পর ধীরে ধীরে শারীরিক ও মানসিক উদ্বেগ কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরতে সাহায্য করে সংগীত। যে কোনো রকমের সংগীত শোনা অনেক প্যাসিভ ভাবে রোগীর জীবনে অন্তর্ভুক্ত করা যায়। এর জন্য কোনো অতিরিক্ত অর্থ খরচ হয় না। তাড়াতাড়ি রোগী সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন। ৩৫টি রিসার্চ পেপারের ৩৭৩৬ পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়।
গবেষকরা দেখেন, সদ্য অস্ত্রোপচার সেরে ওঠার পর যে সব রোগী সংগীত শুনেছেন স্পিকার বা হেডফোনের সাহায্যে, তাঁদের মধ্যে মানসিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার হার কমেছে ২.৫-৩ পয়েন্ট পর্যন্ত। কমেছে শারীরিক যন্ত্রণা ও অস্বাভাবিক হৃৎস্পন্দনের হারও।