মৌ বসু
শরীর ও মন সুস্থ আর তরতাজা রাখতে ঘুমের প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে আজকালকার কর্মব্যস্ত জীবনে প্রত্যেকেই কমবেশি মানসিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় ভোগে। শরীর ও মন সুস্থ আর তরতাজা রাখতে তাই কমবয়সিরা অর্থাৎ জেনারেশন জেডরা ‘স্লিপম্যাক্সিং’ প্রবণতায় গা ভাসাচ্ছেন।
কী এই স্লিপম্যাক্সিং?
স্বাস্থ্যর নয়া ট্রেন্ড হল স্লিপম্যাক্সিং। অর্থাৎ বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করে বেশি সময় ধরে ঘুমোনো বা ঘুমের সময় দীর্ঘায়িত করা। এতে শরীর ও মন সুস্থ থাকে। মেডিটেশন, ডিপ ব্রিদিং এক্সারসাইজ, সেলফ কেয়ার ও মন মেজাজ শান্ত রাখা ও রিল্যাক্স করা বিশ্রামের ওপর জোর দেওয়া হয়।
কীভাবে বেশি পরিমাণে ঘুমোবেন?
ঘুমোনোর আগে রুটিন মেনে চলতে হবে। যেখানে ঘুমোবেন, সেই ঘরের পরিবেশ শান্ত হতে হবে। আলো নিভিয়ে রাখুন। অন্ধকার, শান্ত পরিবেশে ভালো ঘুম হয়। বৈদ্যুতিক গ্যাজেট দূরে রাখুন। ঘুমোনোর আগে ভারী খাবার খাবেন না। হজমে গোলমাল হলে ঘুম আসতে দেরি হবে। মদ্যপান ও ধূমপান করবেন না।
স্লিপম্যাক্সিংয়ের কী উপকারিতা?
পর্যাপ্ত ঘুম হলে ত্বক উজ্জ্বল ও টানটান থাকে। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে। হার্ট ভালো থাকে। হাবিজাবি খেয়ে ফেলার প্রবণতা কমে। ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ক্লান্তিভাব, মানসিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দূর হয়। দুশ্চিন্তা কমে।
কোন বদভ্যাসে রাতে ঘুমের দফারফা হয়
রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট বা খবর ঘাঁটাঘাঁটি করলে মস্তিষ্ক বেশি মাত্রায় চঞ্চল থাকে। স্মার্টফোন বা টিভির আলোয় মেলাটোনিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। ঘুম আসতে দেরি হয়।
ক্যাফিনযুক্ত পানীয় বেশি পরিমাণে খেলে অ্যাডেনোসিন নামক নিউরোট্রান্সমিটার কাজ করা বন্ধ করে দেয়। ঘুম আসতে দেরি হয়। তাই বিকেলে বা সন্ধ্যায় কফি, চা বা ক্যাফিনযুক্ত পানীয় কম খাবেন।
চিনিযুক্ত খাবার রাতে খাবেন না। এতে রক্তের শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। শরীর রিল্যাক্স করতে দেরি লাগে। শরীরের অভ্যন্তরীণ সিরকাডিয়ান রিদম বদলে যায়।
রাতে চড়া আলোয় বেশি সময় ধরে থাকলে শরীরের অভ্যন্তরীণ সিরকাডিয়ান রিদম বদলে যায়। ঘুমোতে দেরি হয়। রোজ একই সময় ঘুমোতে যান আর একই সময় ঘুম থেকে উঠুন। এতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটবে না। রাতে শারীরিক কসরত করবেন না। এতে হৃদযন্ত্রের গতি বেড়ে যায়, শরীরের তাপমাত্রা ও অ্যাড্রেনালিন হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে।