শীতের শাকসবজির মধ্যে অন্যতম হল সবুজ টাটকা ধনেপাতা। যদিও এখন প্রায় সারা বছরই ধনেপাতা কমবেশি পাওয়া যায়। কিন্তু শীতের সময় যে ধনেপাতা মেলে তার স্বাদই আলাদা। ধনেপাতা প্রতি দিন নিয়মিত খেতে পারলে শরীরের অনেক উপকার হয়।
সুগন্ধী ধনেপাতাকে কেউ কেউ ‘সিলান্ট্রো’ বলে ডাকেন। ধনেপাতার ইংরেজি নাম হল ‘Coriander’। এটি এসেছে গ্রিক শব্দ কোরিস থেকে। ধনেপাতা ভারতে বিদেশিদের হাত ধরে এসেছে। খ্রিষ্টপূর্ব ৫ হাজার বছর আগেও ধনেপাতার খোঁজ পাওয়া গেছে। মনে করা হয় ইতালিতে জন্ম ধনেপাতার।
স্বাস্থ্যরক্ষায় ধনেপাতা
(১) প্রতি দিন ধনেপাতার শরবত খেলে কিডনি ভালো থাকে। কিডনিতে জমে থাকা ক্ষতিকর টক্সিন নুন ও বিষাক্ত পদার্থ মূত্রের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়।
(২) ধনেপাতা শরীরের ভালো কোলেস্টরল (এইচডিএল)-এর মাত্রা বৃদ্ধি করে। হজমে সাহায্য করে। পেট পরিষ্কার রাখে।
(৩) সুগারের রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী ধনেপাতা কারণ এটি রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়।
(৪) ধনেপাতার অ্যান্টিসেপটিক উপাদান মুখের আলসার নিরাময় করে।
(৫) ধনেপাতার ভেষজ উপাদান চোখের জন্যও ভালো। ধনেপাতায় ভিটামিন এ, সি, ই, ক্যারোটেনয়েড থাকায় তা চোখের জন্য খুবই ভালো।
(৬) ঋতুস্রাবের সময় রক্তশূন্যতা দূর করে ধনেপাতা কারণ এতে প্রচুর আয়রন থাকে।
(৭) ধনেপাতার ফ্যাটে দ্রবণীয় ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইত্যাদি ফুসফুস ও পাকস্থলীর জন্য ভালো। এ ছাড়াও ধনেপাতায় রয়েছে অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি উপাদান যা বাতের ব্যথা, হাড় জয়েন্টের ব্যথা কমায়।
(৮) ধনেপাতায় সিনিওল এসেনশিয়াল অয়েল ও লিনোলিক অ্যাসিড থাকে। এগুলি অ্যান্টিরিউম্যাটিক এবং অ্যান্টিআর্থ্রাইটিক। ত্বকের জ্বালাপোড়া আর ফুলে যাওয়া কমায়। অ্যান্টিহিস্টামিন উপাদান অ্যালার্জি বা যে কোনো ক্ষতিকারক প্রভাব দূর করে।
(৯) ধনেপাতা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে। মস্তিষ্কের স্নায়ু সচল রাখে।
(১০) তৈলাক্ত ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নেয় ধনেপাতা। ধনেপাতা কাঁচা চিবিয়ে খেলে মুখের বাজে গন্ধ দূর হয়।
(১১) ভিটামিন সি, ই, কে থাকে বলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ধনেপাতা। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় ধনেপাতা উজ্জ্বল সবুজ রঙের হয়। ইনসুলিন নিঃসারণে সাহায্য করে। রক্তের শর্করার মাত্রা কমায়।
(১২) ফাইবার থাকায় পেটের গোলমাল, হজমের সমস্যা, ডায়েরিয়া, গ্যাস জমা, বমি বমি ভাব কমায় ধনেপাতা।