মহাকাশে মাইক্রোগ্র্যাভিটি পরিবেশের মধ্যে থাকতে হয় মহাকাশচারীদের। কাজ করে না অভিকর্ষ বল। মাসিক ঋতুস্রাবের সময় ঋতুমতী মহিলাদের নানান রকম শারীরিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। কিন্তু পৃথিবীর মতোই মহাকাশে মাইক্রো গ্র্যাভিটি পরিবেশের মধ্যে মহিলা মহাকাশচারীদের এমন পরিস্থিতি হলে তাঁরা কীভাবে পরিস্থিতি সামলান?
সম্প্রতি ৯ মাস আন্তর্জাতিক মহাকাশ কেন্দ্রে আটকে থাকার পর পৃথিবীতে ফিরেছেন নাসার মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস। ১৯৬৩ সালে রুশ মহাকাশচারী ভ্যালেন্টিনা তেরেস্কোভা প্রথম মহিলা মহাকাশচারী হিসাবে মহাকাশে পাড়ি দেন। এরপর তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছেন ৯৯ জন মহিলা মহাকাশচারী। মহিলা মহাকাশচারীরা চাইলে মহাকাশে ঋতুমতী হতে পারেন। অথবা কম জলের রিসোর্স থাকার কারণে ও হাইজিন ও স্যানিটারি আইটেম নিয়ে যাওয়ার ঝক্কি কমাতে হরমোনাল কন্ট্রাসেপটিভ ব্যবহার করে ঋতুস্রাবকে আটকেও রাখতে পারেন। মহাকাশে ঋতুস্রাব এড়াতে ইস্ট্রোজেন হরমোনের ওষুধ খান তাঁরা। তবে যে সব মহিলা মহাকাশচারী ঋতুস্রাব বন্ধ করতে চান না তাঁরা স্ট্যান্ডার্ড স্যানিটারি আইটেম ব্যবহার করেন।
মহাকাশে মহিলা মহাকাশচারীরা কীভাবে ঋতুস্রাব পরিস্থিতি সামলাবেন এনিয়ে চিন্তিত ছিলেন বিজ্ঞানীরা। ১৯৮৩ সালের জুনে প্রথম মহিলা আমেরিকান মহাকাশচারী হিসাবে মহাকাশে যান স্যালি রাইড। ৬ দিনের মহাকাশ অভিযান শেষ করে তিনি পৃথিবীতে ফেরার পর তাঁকে সাংবাদিকরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, কীভাবে তিনি মহাকাশে ঋতুস্রাবের পরিস্থিতি সামলান? স্যালি জানান তিনি ট্যাম্পুনস নিয়ে গিয়েছিলেন।
চিকিৎসকদের মতে, মহাকাশে মহিলা মহাকাশচারীরা ঋতুস্রাব পরিস্থিতি সামলাতে ট্যাম্পুনস, স্যানিটারি প্যাড বা মেন্স্ট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করতে পারেন। ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশনের গবেষণায় দেখা গেছে, মহাকাশ অভিযানে মহাকাশযানে নির্দিষ্ট মাত্রায় ওজন বয়ে নিয়ে যেতে হয়। প্রতিটি জিনিস পুনর্ব্যবহার করা হয়। কিন্তু মেন্স্ট্রুয়াল রক্তে সলিড ওয়েস্ট থাকে যা পুনর্ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। তাই মহিলা মহাকাশচারীরা ঋতুস্রাব পরিস্থিতি পিছিয়ে দেওয়া শ্রেয় বলে মনে করেন।