চিনে মানব মেটাপনিউমোভাইরাস (HMPV) নামক একটি শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘিরে বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভাইরাসটি ফ্লু এবং কোভিডের মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। সামাজিক মাধ্যমে চিনের হাসপাতালগুলিতে মাস্ক পরিহিত মানুষদের ছবি এবং ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ২০০১ সালে আবিষ্কৃত এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব অনেকের কাছেই পাঁচ বছর আগে কোভিড মহামারীর প্রাথমিক পর্যায়ের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে।
চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মাও নিং শুক্রবার একটি বিবৃতি দিয়ে এই উদ্বেগের বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। তিনি বলেন, “শীতকালে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়। আমি নিশ্চিত করছি, চিনা সরকার নাগরিক এবং বিদেশি পর্যটকদের স্বাস্থ্য নিয়ে যথেষ্ট সচেতন। চিনে ভ্রমণ করা নিরাপদ।”
ভারতের অবস্থান
কোভিড মহামারীতে অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ছিল ভারত। তবে মানব মেটাপনিউমোভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই বলে জানিয়েছেন ভারতের স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের (DGHS) কর্তা ডাঃ অতুল গোয়েল।
তিনি বলেন, “চিনে মেটাপনিউমোভাইরাস প্রাদুর্ভাবের খবর ঘুরছে। তবে এটি একটি সাধারণ শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস যা ঠান্ডা লেগে যায়। বয়স্ক ও শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও ভারতে ডিসেম্বরে সংক্রমণের কোনও উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা যায়নি।”
ভাইরাসের লক্ষণ এবং প্রভাব
মানব মেটাপনিউমোভাইরাস (HMPV) সাধারণ ঠান্ডা লাগার মতো উপসর্গ তৈরি করে। এর সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে কাশি, জ্বর, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং শ্বাসকষ্ট। গুরুতর ক্ষেত্রে ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়ার মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে।
মার্কিন সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (CDC) অনুসারে, ভাইরাসটি সব বয়সের মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে। তবে শিশু, বয়স্ক, এবং দুর্বল প্রতিরোধ ক্ষমতার মানুষেরা বেশি ঝুঁকিতে থাকে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এখনও এই প্রাদুর্ভাব নিয়ে কোনও বিবৃতি দেয়নি। প্রতিবেশী দেশগুলি, বিশেষত হংকং, পরিস্থিতি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। হংকং থেকে কয়েকটি HMPV সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি।