হিমাচল প্রদেশের পার্বত্য অঞ্চলের বাসিন্দাদের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন আইআইটি মাণ্ডির সহকারী অধ্যাপক ডক্টর গজেন্দ্র সিং। পার্বত্য অঞ্চলের অসুস্থ নবজাতকদের প্রাণ বাঁচাতে পোর্টেবল নিউবর্ন ইনকিউবেটর তৈরি করেছেন আইআইটির এই অধ্যাপক। নিওন্যাটাল অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে নিজের সদ্যোজাত কন্যার প্রাণ বাঁচানো যায়নি। নিজের ব্যক্তিগত দুঃখজনক অভিজ্ঞতাই আইআইটির সহকারী অধ্যাপককে এমন অভিনব ইনকিউবেটর বানাতে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
নিজের জীবনের চরম দুঃখের দিনগুলো স্মরণ করে ডক্টর গজেন্দ্র সিং বলেন, “কয়েক বছর আগে আমার সদ্যোজাত কন্যা অসুস্থ হয়ে পড়ে। চিকিৎসকরা চণ্ডীগড়ের হাসপাতালে রেফার করেন। কিন্তু সাধারণ অ্যাম্বুল্যান্সে আমার অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না। নিওন্যাটাল ইনকিউবেটরযুক্ত অ্যাম্বুল্যান্সে নিয়ে যাওয়া দরকার ছিল। কাছাকাছি হাসপাতালে সে সব পরিষেবা ছিল না। চণ্ডীগড় থেকে ১২-১৪ ঘণ্টা লাগত নিওন্যাটাল ইনকিউবেটরযুক্ত অ্যাম্বুল্যান্সকে আনাতে। এ দিকে আমার মেয়ে আরও বেশি পরিমাণে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সময়মতো নিওন্যাটাল ইনকিউবেটরযুক্ত অ্যাম্বুল্যান্স এলে আমার মেয়ে প্রাণে বেঁচে যেত। নিজের ব্যক্তিগত দুঃখ আমায় অন্যদের কষ্ট বুঝতে সাহায্য করে। তাই আমি চেয়েছিলাম এমন বিশেষ প্রযুক্তির অ্যাম্বুল্যান্স তৈরি করতে যার সুযোগ হিমাচল প্রদেশের পার্বত্য অঞ্চলের বাসিন্দারা পান।”
বাজারে যে সব নিওন্যাটাল ইনকিউবেটরযুক্ত অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়া যায় তার দাম ৩৫ লক্ষ টাকার বেশি। কিন্তু তাঁর তৈরি নিওন্যাটাল ইনকিউবেটরযুক্ত অ্যাম্বুল্যান্সের দাম ৩ থেকে ৮ লক্ষ টাকার মধ্যে বলে দাবি করেন গজেন্দ্র সিং।
পোর্টেবল নিওন্যাটাল ইনকিউবেটরের জন্য অ্যাম্বুল্যান্সের দরকার পড়ে না। এর ওজন খুবই হালকা। ড্রোনে বা গাড়িতে করে সহজেই বহন করা যায়। প্রিম্যাচিওর অসুস্থ নবজাতকদের সুস্থ রাখতে এই বিশেষ নিওন্যাটাল ইনকিউবেটরে অক্সিজেন সিলিন্ডার, ২ ঘণ্টার ব্যাটারি ব্যাকআপ, জন্ডিস রুখতে ফটোথেরাপি আর ওয়ার্মার থাকবে। গজেন্দ্র সিংকে এই বিশেষ রকমের নিওন্যাটাল ইনকিউবেটর তৈরি করতে সাহায্য করেছেন আইআইটি মাণ্ডির সহকারী অধ্যাপক সত্যশীল পাওয়ার এবং চার পড়ুয়া কেশব বর্মা, বৎসল, ধীরজ ও বাদল।