গোটা বিশ্বে এখন ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে মধুমেহ বা ডায়াবেটিস রোগ। প্রতি বছর ১৪ নভেম্বর পালিত হয় বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। ল্যানসেট জার্নালের সাম্প্রতিক একটি গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত ৩০ বছরে গোটা বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। এটা বেশি করে ঘটছে উন্নয়নশীল দেশেই। ২০২২ সালে গোটা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে ভারতেই।
২০২২ সালে গোটা বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ছিল ৮২ কোটি ৮০ লক্ষ। এর মধ্যে এক-চতুর্থাংশ রয়েছে ভারতে। ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত এনসিডি রিস্ক ফ্যাক্টর কোলাবোরেশন (NCD Risk Factor Collaboration) এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র করা যৌথ গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য. ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, ভারতে ৬২% ডায়াবেটিস রোগীর কোনো রকম চিকিৎসা হয়নি।
গোটা বিশ্বে দেড় হাজারের বেশি চিকিৎসকের সাহায্যে ডায়াবেটিসের মতো নন-কমিউনিকেবল অসুখে আক্রান্ত রোগীদের ওপর সমীক্ষা চালানো হয়। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ২০২২ সালে ভারতে ২১ কোটি ২০ লক্ষ ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে, যা মোট জনসংখ্যার ২৩.৭%। এর মধ্যে ১৩ কোটি ৩০ লক্ষ ডায়াবেটিস রোগীর কোনো রকম চিকিৎসা হয়নি। কোনো দিন চিকিৎসা-না-হওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের তালিকায় গোটা বিশ্বের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ভারত। চিনে মোট ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ১৪কোটি ৮০ লক্ষ। এর মধ্যে ৭ কোটি ৮০ লখের কোনো রকম চিকিৎসা হয়নি।
ভারতে গত ৩ দশকে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। গোটা বিশ্বেই নয়ের দশক থেকে এখনো পর্যন্ত ডায়াবেটিস রোগীদের সংখ্যা ৪ গুণ বেড়েছে।
নয়ের দশকে ভারতে ১১.৯% মহিলা ও ১১.৩% পুরুষ ডায়াবেটিস রোগী ছিলেন। ২০২২ সালে মহিলা ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৩.৭% আর পুরুষ ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২১.৪%।
প্রধান গবেষক লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের অধ্যাপক মাজিদ এজ্জাতি জানান, কম আয় ও মধ্য আয়ের দেশে কমবয়সি ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। অন্য দিকে জাপান, কানাডা, ফ্রান্স ও ডেনমার্কের মতো উন্নত দেশে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা কমেছে বা একই আছে।
অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, খাদ্যাভ্যাসে বদল আর স্থুলতার কারণে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে মনে করেন বিজ্ঞানীরা। ২০২২ সালে প্রতি ৫ জন ডায়াবেটিস রোগীর মধ্যে ৩ জনের বয়স ছিল ৩০ বছরের নীচে।